Inqilab Logo

বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ০১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৬ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

প্রোজেরিয়া সনাক্তে ক্যাম্পেইন শুরু আক্রান্ত শিশুদের মৃত্যু ১৪ বছরেই

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৫ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:১৬ এএম

দ্রুত বার্ধক্যজনিত রোগ বা প্রোজেরিয়া আক্রান্ত শিশুদের সনাক্ত করতে ‘ফাইন্ড দ্য চিলড্রেন-১০ ইন বাংলাদেশ উইথ প্রোজেরিয়া’ নামে ক্যাম্পেইন শুররু করেছে দ্য প্রোজেরিয়ারিসার্চ ফাউন্ডেশন (পিআরএফ)। এটি বিশ্বের একমাত্র প্রতিষ্ঠান যারা প্রোজেরিয়া আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা ও নিরাময়ে কাজ করে। শিশুদের দ্রুত বার্ধক্যজনিত জটিল এ রোগের বিষয়ে সকলকে সচেতন করতেই এ ক্যাম্পেইনের আয়োজন বলে জানিয়েছেন সংশিষ্টরা।
হাচিনসন-গিলফোর্ড প্রোজেরিয়া সিন্ড্রোম (এইচজিপিএস) নামে পরিচিত একটি জটিল রোগ হলো প্রোজেরিয়া। এটি বিরল জেনেটিক রোগের একটি গ্রুপ। যার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো- আক্রান্ত শিশুকে দেখতে বয়সের তুলনায় অধিক বয়স্ক মনে হয়। এ রোগের ফলে শিশুরা গড়ে ১৪ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করে। এছাড়াও প্রোজেরিয়া আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে শরীরের বিভিন্ন জোড়া শক্ত হওয়া, স্বাভাবিক বৃদ্ধি না হওয়া, ওজন কমে যাওয়া এবং চুল ও ত্বক বয়স্ক লোকদের মতো হয়ে যাওয়া লক্ষণগুলো দেখতে পাওয়া যায়। ফলে আক্রান্ত শিশুরা জাতিগতভাবে ভিন্ন থাকলেও সবাইকে প্রায় একই রকম দেখায়।
পিআরএফ’র প্রেসিডেন্ট এবং এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর অড্রে গর্ডন বলেন, ‘আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে আমরা তাদের খুঁজে বের করতে চাই। তাদের সনাক্ত করে চিকিৎসা সহায়তা করাই হলো ‘ফাইন্ড দ্য চিলড্রেন’ ক্যাম্পেইনের উদ্দেশ্য। প্রোজেরিয়া একটি জটিল রোগ যা অনেকেই বুঝতে পারে না। বাংলাদেশ এমন একটা দেশ যেখানে প্রায় ১৬৫ মিলিয়ন বা ১৬ কোটির বেশি লোক বসবাস করে। পরিসংখ্যানগত দিক বিবেচনা করে আমরা মনে করি, প্রায় ১০ জন প্রোজেরিয়া আক্রান্ত রোগী এখানে রয়েছে। প্রোজেরিয়া আক্রান্ত শিশুদের সনাক্ত করে তাদের চিকিৎসা দেয়া এবং জনসাধারণসহ স্বাস্থ্যসেবাদানকারীদের সচেতন করতে এ ক্যাম্পেইনের আয়োজন করা হয়েছে। এসব রোগীদের চিকিৎসা পরামর্শ দেয়ার পাশাপাশি ক্লিনিক্যাল ট্রিটমেন্ট ট্রায়ালে অংশগ্রহণের সুযোগ করে বর্তমান অবস্থার উন্নতির জন্য ওষুধের ব্যবস্থা করা হবে। যাতে তারা আরও দীর্ঘদিন ভালোভাবে জীবনযাপন করতে পারে।
সংশিষ্টরা জানান, বর্তমানে বিশ্বে প্রায় সাড়ে তিনশ থেকে চারশ শিশু জটিল এ রোগে আক্রান্ত বলে বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছে। কিন্তু ২০১৯ সালের অক্টোবর মাস পর্যন্ত মাত্র ১৬১ জন আক্রান্ত শিশুর সন্ধান পেয়েছে দ্য প্রোজেরিয়া রিসার্চ ফাউন্ডেশন। ফলে প্রায় ২০০ শিশু এর আওতার বাইরে রয়েছে। পরিসংখ্যাতগত দিক বিবেচনা করে বাংলাদেশে প্রায় ১০ জন প্রোজেরিয়া আক্রান্ত রোগী রয়েছে। যাদের এখনও সনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
পিআরএফ এর মেডিকেল ডিরেক্টর ডা. লেসলি বি. গর্ডন বলেন, বাংলাদেশে আমরা যখন প্রোজেরিয়া রোগীর সন্ধান পাবো, তখনই তারা পিআরএফ এর আন্তর্জাতিক প্রোজেরিয়া রেজিষ্ট্রির অংশ হয়ে যাবে। চিকিৎসা সুপারিশ পাওয়ার পাশাপাশি ক্লিনিক্যাল চিকিৎসা পরীক্ষায় যোগদানের জন্য আমন্ত্রিত হবেন। বাংলাদেশে প্রোজেরিয়া আক্রান্ত প্রতিটি শিশুকে এই সুযোগ দেয়াই আমাদের অন্যতম লক্ষ।
প্রসঙ্গেত, প্রোজেরিয়া আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা সেবা ও নিরাময়ে ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো দ্য প্রোজেরিয়ারিসার্চ ফাউন্ডেশন (পিআরএফ)। পিআরএফ-এর সাথে পরিচালিত গবেষণায় প্রোজেরিয়া জিনকে সনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছে। ফলে এর চিকিৎসার জন্য ক্লিনিক্যাল ড্রাগ ট্রায়েল পদ্ধতির পরীক্ষা ও পরিকল্পনা চলছে।#



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ