Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নেপথ্যে কিশোর গ্যাং

বুকে স্ক্রু ড্রাইভার ঢুকিয়ে খুনের ঘটনায় গ্রেফতার ১

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৫ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

হঠাৎ দুই দল কিশোরের মারামারি। কয়েকজন নারী তাদের ছাড়াতে চেষ্টা করছেন। দূর থেকে তামাশা দেখছেন আশপাশের লোকজন। এরমধ্যে দেখা যায় এক কিশোর মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। সেখান থেকে সে ধীরে ধীরে উঠে বসে। দাঁড়ানোর চেষ্টা করেও টলতে টলতে ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে যায় সে। গলগল করে রক্ত ঝরছিলো তার বুক বেয়ে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া সিসিটিভি ফুটেজের ওই কিশোরের নাম সাজ্জাদ হোসেন নাহিদ (১৮)। মারামারির সময় তার বুকে স্ক্রু ডাইভার ঢুকিয়ে দেয় সোহেল নামে একজন। রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে আগ্রাবাদের মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন।
নগরীর আমবাগান এলাকায় রোববার রাতে ভয়ঙ্কর কিশোরের গ্যাংয়ের সংঘাতের ওই ঘটনায় আহত হয় বেশ কয়েকজন। স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরের অফিসের পাশে থাকা ওই সিসিটিভি ফুটেজ দেখে গতকাল সকালে রাজধানী ঢাকার মালিবাগ থেকে প্রধান অভিযুক্ত মো. সোহেলকে (২২) পাকড়াও করেছে পুলিশ। নাহিদ আমবাগান এলাকার রাজমিস্ত্রি মোহাম্মদ আবদুল্লাহর পুত্র। তাদের গ্রামের বাড়ি সিলেটে। সোহেল পেশায় গ্যারেজ মিস্ত্রি। তাদের বাসা আমবাগান এলাকায়।
স্থানীয়রা জানায়, আমবাগান এলাকায় তৎপর কিশোর গ্যাংয়ের সাথে জড়িত ছিলো তারা। ওই এলাকায় কিশোরদের দুটি গ্রুপ রয়েছে। এক গ্রুপের হোতা স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ হোসেন হীরণ। যদিও তিনি তা অস্বীকার করেন। অপর গ্রুপের হোতা লালখান বাজার আওয়ামী লীগের নেতা দিদারুল আলম মাসুম। এ দুই গ্রুপের মধ্যে এলাকায় প্রায়ই সংঘাত-সহিংসতার ঘটনা ঘটে। স্থানীয়দের অভিযোগ, তুচ্ছ ঘটনায় কিশোরেরা মারামারিতে লিপ্ত হয়। ভাঙচুর করা হয় প্রতিপক্ষের বাসা-বাড়ি, দোকানপাট। শনিবার নগরীর ঝাউতলা এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়।
পুলিশ জানায়, নাহিদ আর সোহেল একই কিশোর গ্রুপের সদস্য। তবে ওইদিনের মারামারিতে সোহেল যায়নি। এ নিয়ে রোববার রাতে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এতে নিজেদের মধ্যে মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে তারা। এক পর্যায়ে সোহেল নাহিদের বুকে স্ক্রু ডাইভার ঢুকিয়ে দেয়। খুলশী থানার ওসি প্রণব চৌধুরী বলেন, গ্রেফতারের পর সোহেল প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে, নাহিদ ও সে বন্ধু ছিল। শনিবার ঝাউতলা এলাকায় নাহিদরা মারামারি করতে গিয়েছিল। সে না যাওয়ায় নাহিদ কারণ জানতে চায়। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির পর সোহলকে মারধর করে নাহিদ।
তখন সোহেল হাতে থাকা স্ক্রু ডাইভার দিয়ে নাহিদের বুকে আঘাত করে। ওসি বলেন, ওয়ার্ড কাউন্সিলর অফিসের সিসি ক্যমেরা থেকে সংগ্রহ করা ভিডিও ফুটেজেও সোহেলকে মারধর করতে দেখা গেছে। গতকাল বিকেলে নাহিদের বাবা আবদুল্লাহ বাদী হয়ে খুলশী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলার এজাহারে সোহেলকে প্রধান আসামি করা হয়। নাহিদ মারা গেলে রাতেই ঢাকায় পালিয়ে যায় সোহেল। চট্টগ্রামে তাকে না পেয়ে খুলশী থানা পুলিশের একটি দল ঢাকায় যায়।



 

Show all comments
  • মজলুম জনতা ৫ নভেম্বর, ২০১৯, ৮:৫৯ এএম says : 0
    কিশোর গ্যাং এর ভয়াবহতায় গ্রামের সাধারন মানুষরা চরম অতিষ্ট।উঠতি এসব কিশোরদের ভয় তটস্থ এলাকার স্কুল কলেজগামি মেয়েরা। এরা এখন সমাজের আতংক।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ