পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজধানীর ধানমন্ডির জোড়া খুনের ঘটনায় গৃহকর্মী সুরভী আক্তার নাহিদার জড়িত থাকার প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে পুলিশ। গত রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর ধানমন্ডি থানায় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করে রাত ১২টার দিকে তাকে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়। জোড়া খুনের ঘটনায় এ পর্যন্ত ৬ জনকে আটক করেছে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার সুরভী খুনের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। বাসা থেকে বের হতে চাইলে গৃহকত্রী ও নিহত গৃহকর্মী দিতি বাধা দেওয়ায় ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেছেন বলে তিনি পুলিশকে বলেছেন। যদিও তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বিষয়গুলো আরও খতিয়ে দেখছেন। এছাড়া তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে জড়িত অন্যদের আটকের অভিযান চলছে। থানা ও ডিবির তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সূত্রে এসব বিষয় জানা গেছে।
এর আগে হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আরও ৫ জনকে আটক করে পুলিশ। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ধানমÐির বাসায় খুন হন গৃহকত্রী আফরোজা বেগম ও গৃহকর্মী দিতি। খুনের সঙ্গে জড়িত প্রধান সন্দেহভাজন হিসেবেই গৃহকর্মী সুরভীকে গ্রেফতার করা হয়। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, শুক্রবার বিকেল ৩টার পর ওই বাসায় ঢোকে সুরভী। টানা তিন ঘণ্টা পর সন্ধ্যা ৬টায় বেরিয়ে যান তিনি। নিহত গৃহকর্ত্রী আফরোজা বেগমের মেয়ে জামাইয়ের বডিগার্ড বাচ্চু তাকে বাসায় নিয়ে যান।
ডিএমপি অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) কৃষ্ণ পদ রায় বলেন, আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করছি। প্রাথমিকভাবে তার সম্পৃক্ততা আছে বলে প্রতীয়মান হয়েছে। তবে ঘটনায় আর কারা জড়িত আছে এবং তাদের মোটিভ কী ছিল সেটা জানতে আমরা কাজ করছি।
ডিএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার আব্দুলাহেল কাফি বলছেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার গৃহকর্মী সুরভী আক্তার নাহিদা পুলিশকে বলেছেন, বাসা থেকে বের হতে বাধা দেওয়ায় ওই হত্যাকান্ড ঘটনা তিনি। তবে সুরভীর বক্তব্য শুনে তার মানসিক ভারসাম্য নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে তাদের। হত্যা মামলাটি গোয়েন্দা পুলিশের কাছে স্থানান্তর করা হয়েছে। তারা সব দিকই খতিয়ে দেখবে।
নিহত আফরোজার মেয়ে দিলরুবার স্বামী মনির উদ্দিন তারিম ঘটনার দিন বলেছিলেন, শুক্রবার তার শাশুড়ির বাসায় নতুন এক গৃহকর্মী কাজে এসেছিল। এলাকার এক পানের দোকানদারের মাধ্যমে নতুন ওই গৃহপরিচারিকার খোঁজ এনেছিল তাদের কর্মচারী মো. আতিকুল হক বাচ্চু। নিরাপত্তাকর্মী বা কর্মচারীদের যোগসাজশে ওই ‘কাজের বুয়াই’ এ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে বলে সেদিন সন্দেহ প্রকাশ করেন তারিম। তার স্ত্রীর দায়ের করা মামলায় সেই গৃহকর্মীকে প্রধান আসামি করে কর্মচারী বাচ্চু ও নিরাপত্তাকর্মী নুরুজ্জামান, কেয়ার টেকার বেলায়েত এবং প্রিন্স নামে এক বৈদ্যুতিক মিস্ত্রিকে সন্দেহভাজন হিসেবে উল্লেখ করা হয়। হত্যাকান্ডের দুই দিনের মাথায় রোববার সন্ধ্যায় আগারগাঁও বস্তি থেকে ২৩ বছর বয়সী সুরভী আক্তার নাহিদাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, তিনিই সেই সন্দেহভাজন গৃহকর্মী।
রোববার রাতভর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় জানিয়ে অতিরিক্ত উপ-কমিশনার আব্দুল্লাহেল কাফি বলেন, বাচ্চুই যে ওই বাসায় কাজে নিয়ে গিয়েছিল, সে কথা সুরভীও বলেছেন। তবে বাচ্চুর আচরণ তার ‘ভালো’ লাগেনি।
বাচ্চু বাসা থেকে বের হয়ে যাওয়ার পর সুরভীও চলে যেতে চায়। তখনও ওই বাসার পুরনো গৃহকর্মী দিতি বাধা দেয়। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। তখন সুরভী রান্নাঘর থেকে নেওয়া ছুরি দিয়ে দিতির গলা, পিঠ আর বুকে আঘাত করে বলে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে। এরপর সুরভী আরেক ঘরে গিয়ে আফরোজাকে বলে, সে বাসা থেকে চলে যাচ্ছে। আফরোজা তখন জানতে চায়, অন্য ঘরে দিতি চিৎকার করল কেন। সুরভী তখন বলে, সে যেতে চাওয়ায় ঝগড়া হয়েছে। আফরোজাও তখন বলেন, ‘তোকে তো বাচ্চু যেতে না করেছে, তুই এখন যেতে পারবি না। এ সময় সুরভী একই কায়দায় অফরোজাকে ঘাড়ে ছুরি দিয়ে আঘাত করে বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে। সুরভী বলেছে, সে যখন বেরিয়ে আসে, অফরোজা তখনও মারা যায়নি, তখনও বিছানায় ছিল।
বাসা থেকে বের হতে না দেওয়াই হত্যার কারণ- এমন বক্তব্য পুলিশের কাছে বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়েছে কি না জানতে চাওয়া হয়েলে পুলিশ কর্মকর্তা আব্দুল্লাহেল কাফি বলেন, সুরভীকে মানসিক ভারসাম্যহীন মনে হচ্ছে। হঠাৎ এরকম ঘটনা ঘটানোর এটা একটা কারণ হতে পারে। আব্দুলাহেল কাফি বলেন, হয়তো মৃত্যুর আগে ওই বৃদ্ধা বিছানা থেকে নেমে ক্রল করে বাসা থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তার আগেই তিনি মারা যান। বাসা থেকে খোয়া যাওয়া জিনিসপত্রের বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ কর্মকর্তা কাফি বলেন, সুরভী বলেছে, ওই বাসা থেকে একটা আইফোন সে নিয়েছিল। চার হাজার টাকায় বিক্রি করে দিয়েছে। সেই টাকার বেশিরভাগটাই খরচ করে ফেলেছে।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, ওই হত্যাকান্ডের পাঁচ দিন আগে বাচ্চুর সঙ্গে সুরভী আক্তার নাহিদার পরিচয় হয়। তাদের মধ্যে মোবাইলে যোগাযোগের সূত্র ধরেই রোববার সন্ধ্যার পর আগারগাঁও এলাকায় ওই নারীর সন্ধান মেলে। সুরভীর মোবাইল নম্বর মেলে বাচ্চুর মোবাইল থেকে। এরপর ওই নম্বরের সূত্র ধরে ভোলায় তার পরিবারের সন্ধান পায় পুলিশ। শনিবার পুলিশ ভোলায় গিয়ে খোঁজ নেওয়া শুরু করে। স্বজনদের দিয়ে যোগাযোগ করানো হয় সুরভীর সঙ্গে। আর এদিকে পুলিশ ঢাকার আগারগাঁও বস্তিতে তার অবস্থান শনাক্ত করে। ওই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, বাচ্চু প্রথম থেকে অনেক তথ্য গোপন করেছেন। তিনি বলেছিলেন, সুরভীকে তিনি সেভাবে চিনতেন না। অথচ ঘটনার আগে ও পরে অন্তত অর্ধশত বার তাদের কথা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।