পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নারায়ণগঞ্জের বাবুরাইল এলাকায় একটি চারতলা ভবন ধসে পড়ে এক শিশু নিহত এবং অপর এক শিশু নিখোঁজ রয়েছে। ওই ঘটনায় আহত হয়েছেন ৩ জন। নিহত শিশুর নাম মো. সোয়েব (১২)। নিখোঁজ রয়েছে ওয়াজেদ নামে একই বয়সী অপর এক শিশু। নিহত সোয়েব ও নিখোঁজ ওয়াজেদ সম্পর্কে খালাতো ভাই। ঘটনার সময় এরা দু’জন ভবনের নিচতলায় আরবী পড়তে এসেছিল বলে জানা গেছে। নিহত সোয়েব বাবুরাইল এলাকার মৃত শাহাবুদ্দিনের ছেলে। আর নিখোঁজ ওয়াজেদ একই এলাকার বাবুল মিয়ার ছেলে। এর দু’জনেই স্থানীয় সানরাইজ কিন্ডার গার্টেনের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী।
গতকাল রোববার বিকেলে নগরের বাবুরাইল শেষ মাথায় কেউট্টার বাড়ি (বড় বাড়ি) এলাকায় এইচএম ম্যানশন নামে বাড়িটি একপাশে ধসে পড়ে। তবে এতে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছে ধসে পড়া বাড়ির সামনে থাকা একটি টিনশেড বাড়ি। ধসে পড়া বাড়ির মালিকরা ৩ ভাই-বোন। এদের মধ্যে আজাহার হোসেন নামে একজন মালয়েশিয়া প্রবাসী। ওই বাড়িতে আজাহারের ২ বোন দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় বসবাস করেন। এটি তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি। ঘটনার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের বেশ কয়েকটি উদ্ধারকারি দল উদ্ধার অভিযান শুরু করে। খবর পেয়ে বিকেলে ঘটনাস্থলে আসেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন, সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা বারিক, সদর উপজেলার চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বিশ^াস ও সদর মডেল থানা পুলিশ।
সরেজমিন দেখা গেছে, বাবুরাইল খালের একাংশ দখল করে নির্মিত ৪ তলা বাড়িটি একপাশে হেলে পড়ে আছে। বাড়ির ৩ তলার ওপর ৪ তলার ছাদ দেয়া। বাড়িটির প্রতি ফ্লোরে একটি করে ফ্ল্যাট। বাড়ির নিচতলা সীমান্ত নামে একজনের কাছে ভাড়া দেয়া। দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় মালিকানায় থাকা দু’বোন বসবাস করেন। বাড়ির তৃতীয় তলায় থাকেন শিউলী নামে এক বোন। ঘটনার সময় দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় থাকা বোনেরা একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে ছিলেন। ঘটনার সময় বাড়িতে বেশি মানুষ না থাকায় হতাহত তেমন হয়নি।
বাড়ির নিচ তলায় থাকা ভাড়াটে সীমান্ত বলেন, বিকেলে তিনি কাজ থেকে ফিরে গোসল করতে যান। গোসল খানায় থাকা অবস্থাই বাইরে হৈচৈ চিৎকার শুনতে পান যে বাড়িটি হেলে যাচ্ছে। ওই সময় তিনি দ্রæত বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। দ্বিতীয় তলায় কেউ ছিলেন না। তবে তৃতীয় তলায় শিউলি বেগমের ছেলে অনিক (১৯) ছিলেন। ঘটনার সময় তিনি ঘুমিয়ে থাকায় আহত হয়েছেন। তাকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মিরা উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ দেড়শ শয্যা হাসপাতালে পাঠান। সেখানে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। ঘটনার সময় বাড়ির নিচ তলায় সোনিয়া নামে এক নারী আরবি পড়াচ্ছিলেন। সেখানে নিহত সোয়েব ও নিখোঁজ ওয়াজেদ তার কাছে আরবি পড়ছিলেন। ওই ঘটনায় সোনিয়াও আহত হন।
নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারি পরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন বলেন, খবর পেয়ে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের ৪টি টিম উদ্ধার কাজে অংশ নেয়। ধসে পড়া বাড়ির ভেতর থেকে সোয়েব নামে এক শিশুকে আহতাবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হলে সেখানে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। ওয়াজেদ নামে অপর এক শিশু নিখোঁজ রয়েছে। যেহেতু ভবনের পাশে খাল রয়েছে তাই ধারণা করা হচ্ছে নিখোঁজ ওয়াজেদ খালের পানিতে পড়ে গিয়ে থাকতে পারে। তাকে উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা কাজ করছেন।
স্থানীয়রা জানান, বাড়িটি আগে ৩ তলা ছিল। নির্মাণে কোন নকশা বা আইন মানা হয়নি। নেই কর্তৃপক্ষের কোন অনুমোদন। ছয় মাস আগে বাড়ির ওপরে চারতলা ছাদ ঢালাই দেয়া হয়। এরপর থেকেই বাড়ির অবস্থা নাজুক হয়ে পড়ে। ভবনের বাইরে জায়গায় জায়গায় ফাটল দেখা দেয়। তখন বাড়ির মালিকরা প্রকৌশলীদের সঙ্গে পরামর্শ করলে তারা চারতলা কমপ্লিট করতে নিষেধ করেন। এরপর থেকে বাড়িটি ওই অবস্থাতেই ছিল।
সদর মডেল থানার ওসি আসাদুজ্জামান বলেন, তিন তলা বাড়িটিতে ৩টি ফ্ল্যাট ছিল। ঘটনার সময় বাড়িতে লোকজন কম থাকায় হতাহতের সংখ্যা বাড়েনি। এ ঘটনায় এক শিশু নিহত, অপর এক শিশু নিখোঁজ এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। আহতদের নারায়ণগঞ্জ দেড়শ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।