পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ব্যাপক কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় মালয়েশিয়ার বন্ধ শ্রমবাজার উন্মুক্তের সব প্রক্রিয়া প্রায় সম্পন্ন। কিন্ত পুরোনো বেস্টিনেটের বেড়াজালে দশ সিন্ডিকেটের একটি চক্র আবারো মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার নিয়ে আনাগোনা শুরু করেছে। আগামী ৬ নভেম্বর মালয়েশিয়ার পুত্রাজায়ায় উভয় দেশের মন্ত্রী পর্যায়ের জনশক্তি রফতানি সংক্রান্ত দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে দেশটির বিগত নাজিব সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় প্রতিষ্ঠিত বিতর্কিত বেস্টিনেট কোম্পানীর দাতো আমিনের প্রতিষ্ঠানের অনলাইন প্রক্রিয়ায় কর্মী নেয়ার চুক্তি সম্পন্ন হলেই সিন্ডিকেট চক্রের দখলে চলে যাবে শ্রমবাজার। বায়রার একজন সাবেক সভাপতি গতকাল শনিবার এ অভিমত ব্যক্ত করেছেন। বায়রার ঐ সাবেক সভাপতি বলেন, পুরোনো দশ সিন্ডিকেটের মূল হোতা বেস্টিনেট কোম্পানীর মাধ্যমে কর্মী পাঠানোর উদ্যোগ নিলে সকল বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সি নিয়ে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।
দেশটিতে প্রায় সাত লাখ বাংলাদেশি কর্মী কঠোর পরিশ্রম করে প্রচুর রেমিট্যান্স দেশে পাঠাচ্ছে। সুষ্ঠু নিরাপত্তার লক্ষ্যে দেশটির সরকার বিফোরজি প্রক্রিয়ায় আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সকল অবৈধ অভিবাসী কর্মীদের বিনা জরিমানায় স্ব স্ব দেশে ফেরত পাঠাচ্ছে। গতকাল পর্যন্ত মালয়েশিয়া থেকে প্রায় ১২ হাজার অবৈধ কর্মী হাই কমিশন থেকে আউট পাস নিয়ে দেশে ফিরেছে।
মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রফতানি প্রক্রিয়ায় যাতে বিতর্কিত দশ সিন্ডিকেটের কালো থাবা না পড়ে এবং বাংলাদেশের সকল বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো সহনীয় অভিবাসন ব্যয়ে কর্মী পাঠাতে পারে সে বিষয়টি তুলে ধরেছেন মালয়েশিয়া সরকারের কাছে বায়রা মহাসচিব শামীম আহমদ চৌধুরী নোমান। গত ২৭ অক্টোবর মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী ও মানবসম্পদ মন্ত্রীকে এক জরুরি চিঠিতে এসব বিষয় তুলে ধরেন বায়রা মহাসচিব। এতে সিন্ডিকেট চক্রের মাথা ব্যাথা শুরু হয়েছে। বায়রার মহাসচিব শামীম আহমদ চৌধুরী নোমান ইনকিলাবকে বলেন, মালয়েশিয়ায় প্রচুর বাংলাদেশি কর্মীর চাহিদা রয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দশ সিন্ডিকেটের অনৈতিক কর্মকান্ডের দরুণ মালয়েশিয়ার নতুন সরকার গত বছর বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগ বন্ধ করে দেয়। বিগত সময়ে বেস্টিনেট কোম্পানীর অনলাইন প্রক্রিয়ায় কর্মী নিয়োগের দরুণ কি কি সমস্যার সৃষ্টি হয়েছিল এবং বর্তমানের বায়রার সদস্যরা বেস্টিনেটের মাধ্যমে কর্মী পাঠাতে নারাজ এসব বিষয়গুলোই মালয়েশিয়া সরকারের কাছে তুলে ধরা হয়েছে। তিনি বলেন, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমদ আসন্ন মালয়েশিয়া সফরকালে সিন্ডিকেটমুক্ত শ্রমবাজার চালুর ব্যাপারে যথাযথ উদ্যোগ নিবেন। মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রফতানির বিষয়ে প্রবাসী মন্ত্রী অত্যান্ত সজাগ দৃষ্টি রাখছেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারটি চালু করতে আগামী ৬ নভেম্বর বৈঠক করতে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমদের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের প্রতিনিধি যাচ্ছেন মালয়েশিয়ায়। বৈঠকের মধ্য দিয়ে ভালো খবরের আশা করছেন মন্ত্রী ইমরান আহমদ।
বায়রা মহাসচিব তার চিঠিতে শ্রমবাজারের মেডিকেল এবং কর্মী পাঠানোর পদ্ধতি বিষয়ে দীর্ঘ বক্তব্য তুলে ধরেছেন। চিঠির বিষয়ে বায়রা মহাসচিব বলেন, শ্রমবাজার এবং কর্মীদের সুবিধার জন্য এই চিঠি দেয়া হয়েছে। সাধারণ ব্যবসায়ীদের পক্ষে এই চিঠি দেয়া হয়েছে। বায়রার দুই পাতার এই চিঠিতে মহাসচিব নোমান লিখেছেন, আইটি কোম্পানি বেস্টিনেট (মালয়েশিয়ান কোম্পানি) মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারটি আবারো নিয়ন্ত্রণ করতে চাচ্ছে। অতিরিক্ত ব্যয়ের কারণে এই প্রতিষ্ঠানটির এসপিপিএ ২০১৮ সালে বাতিল করেছে মালয়েশিয়া সরকার। বায়রার সাধারণ সদস্যরা এই পদ্ধতি আর চায় না বলেও চিঠিতে লিখেন বায়রা মহাসচিব। তিনি আরো বলেন, এই পদ্ধতির মাধ্যমে মেডিকেল সেন্টার প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত নয়। বায়রার চিঠিতে মালয়েশিয়া সরকারকে বেশ কিছু পরামর্শও দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ একটি ডাটাবেজ করেছে। মধ্যবর্তী এই সময়ে অন্য একটি পদ্ধতি চালু করতে পারে বলে পরামর্শ দেয়া হয়। যেটা দু’দেশের মধ্যে গ্রহণযোগ্য হতে হবে। দশ সিন্ডিকেটের মেডিকেল সেন্টারগুলো আগের সিস্টেম চালু হলে এটা অভিবাসন ব্যয় বাড়বে। বায়রা মেম্বাররা আগের সিস্টেম চায় না বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়াও বেস্টিনেট বাদে মালয়েশিয়ায় অন্য আইটি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়া যেতে পারে।
জানা গেছে, দেশটির নাজিব সরকারের শাসনামলে ক্ষমতাপ্রাপ্ত বেস্টিনেট কোম্পানির সিস্টেম, ফরেন ওয়াকার্স সেন্ট্রালাইজড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম এফ.ডব্লিউ.সি.এম.এস মালয়েশিয়ায় কর্মী নেয়ার পুরো পদ্ধতি পরিচালনার অনলাইন ব্যবস্থাপনার কাজ করছে। এ কোম্পানীর মেয়াদ এখনো শেষ হয়নি।
এছাড়া,এর আগে মালয়েশিয়ার ব্যবসায়ী দাতু হানিফকে ঢাকায় এনে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রীর সাথে বৈঠক করানো হয়। সে সময় বৈঠকে ছিলেন বায়রার মহাসচিব। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী (তখন প্রতিমন্ত্রী) ইমরান আহমদ জানিয়েছিলেন, মেডিকেল সেন্টার বিষয়ে ফোমেমা নামের একটি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে কথা বলতে এসেছিলেন তারা। তখন মন্ত্রী বলেছিলেন, বাজার খোলার আগে মেডিকেল সেক্টর নিয়ে আলোচনা নয়। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে মালয়েশিয়া গমনেচ্ছু কর্মীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ১২৭ মেডিকেল সেন্টারকে পরিদর্শন করে অনুমতি দিতে যাচ্ছে। সরকারের অনুমতি না নিয়েই বেস্টিনেট কোম্পানী ১৭টি মেডিকেল সেন্টারকে কর্মীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত করেছে বলে শোনা যাচ্ছে। বায়রার শীর্ষ নেতা মিজানুর রহমান রাতে ইনকিলাবকে বলেন, বায়রার মহাসচিবের গত ২৭ অক্টোবর মালয়েশিয়া সরকারকে দেয়া চিঠি নিয়ে এতো তোলপাড়ের কিছু নেই। ঐ চিঠি কোনো সিন্ডিকেটর পক্ষে দেয়া হয়নি। বরং ১২ শ’ বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সি এবং সাধারণ কর্মীদের স্বার্থে দেয়া হয়েছে। যারা সিন্ডিকেট চক্রের পক্ষে তারাই বায়রার লিখিত চিঠির গন্ধ খুঁজে বেড়াচ্ছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।