পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ভাঙন কমলেও কান্না থামেনি রাজবাড়ীর বসত হারানো হাজারো পরিবারের। ঘরবাড়ি হারিয়ে বুকে চাপা কষ্ট নিয়ে বেঁচে আছেন তারা। মাথা গোজার ঠাঁই যেমন হারিয়েছেন তেমনি জীবন সংগ্রামে পড়েছেন অকুল পাথারে। পদ্মা ঘরবাড়ি হারালেও মনের ক্ষত কাটেনি বসত হারানো এসব মানুষের। যদিও জেলা প্রশাসন থেকে মাত্র ২০ কেজি করে চাল ছাড়া মিলেনি কোন সহায়তা। তাও না পাওয়ার অভিযোগ রয়েছে কারো কারো।
রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসকের কার্র্যালয়ের তথ্যমতে, গত ২০১৭ সালের বর্ষা মৌসুমে পদ্মার ভাঙনে রাজবাড়ী সদর, গোয়ালন্দ ও পাংশা উপজেলায় বসত হারিয়েছে ১০১৯ টি পরিবার। ২০১৮ সালের বর্ষা মৌসুমে পদ্মার ভাঙনে বসত হারিয়েছে ১০৬২টি পরিবার। আর ২০১৯ সালের দুই দফার ভাঙনে রাজবাড়ী সদর, পাংশা, গোয়ালন্দ ও বালিয়াকান্দি উপজেলায় বসত ভিটা হারিয়েছে ১৫৮০টি পরিবার। জেলা প্রশাসন সূত্র বলছে, ভাঙ্গনের কবলীত এ সব পরিবারগুলো চাল, নগদ অর্থ ও টিন সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
সরেজমিনে রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের ২নং ফেরিঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, এখানে বসত হারিয়ে কোন রকমে খুপরি ঘর তৈরি করে বসবাস করছে প্রায় ৫০টি পরিবার। এসময় ভাঙনের শিকার কাঞ্চন বেগম বলেন, বছর তিনেক আগে সিদ্দিক কাজীর পারা এলাকায় বছরের ১৫০০ টাকা ভাড়া চুক্তিতে স্বামী সন্তান নিয়ে বসতি গড়ে ছিলাম। রাত এবং দিনে স্বামীকে নিয়ে মাটি কেটে ভিটা তৈরি করে কোন রকমে দোচালা চিনের ঘর করেছিলাম। স্বামী আর সন্তানদের নিয়ে ভালোর কাটছিলো দিন। এ বছর অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহের ভাঙনে পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে ভেঙেছে বসতভিটা। যতটুকু সম্ভব যে টুকু বাঁচিয়ে রাস্তা অবস্থান নেওয়া পনের দিন পরে আবার ফিরে এসেছি নদীর পারে। এখন কিভাবে ঘর তৈরি করবেন সেই চিন্তা দিন কাটছে বলে জানান তিনি।
এ সময় নদী পারে মাথায় হাত দিয়ে বসে থাকতে দেখা যায় পঁচাত্তর বছর বয়সী আব্দুল জলিল শেখকে। বসত হারিয়ে প্রমত্তা পদ্মার পানে তাকিয়ে আছেন তিনি। ভাঙন তার জীবনে এটাই প্রথম নয়। এর আগেও ভেঙেছে আরো পাঁচবার। তিনি জানান, এক সময় নদীর ঢল্লা পারা এলাকায় ছিলো তার সুখের সংসার। ছিলো মাঠ ভরা ফসল, গোয়াল ভরা গরু। সর্বনাশা পদ্মার থাবায় সব হারিয়ে নিঃস্ব তিনি। কোথায় যাবেন কি করবেন তাই এখন তার বড় চিন্তা।
শুধু হাজারো বসতবাড়ি ভেঙে শান্ত হয়নি পদ্মা ভেঙেছে দেশের গুরুত্বপূর্ণ নৌপথ দৌলতদিয়া-পাটুরিয়ার দৌলতদিয়ায় থাকা ছয়টি ঘাটের মধ্যে দুটি। যে কারণে এখন বন্ধ ঘাট দুটি। যদি ভাঙন ঠেকাতে বালুর বস্তা ফেলেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। পানি কমার কারণে সামনে আবারো ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে ঘাট এলাকার মানুষেরা।
বিআইডব্লিটিএ দৌলতদিয়া কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, এ বছর ফারাক্কার সবকটি গেট খুলে দেওয়ায় মূল ¯্রােত ছিলো দৌলতদিয়া ঘাট ও এর আশ পাশের এলাকায় যে কারনে ভাঙন তীব্র আকার ধারন করেছিলো। ভাঙনরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বিআইডব্লিটিএ কর্তৃপক্ষ যৌথভাবে জিও ব্যাগ ফেলে কোন রকমে ঘাট রক্ষা করেছিলো। রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম বলেন, এ বছর ভাঙনে যাদের বসতভিটা হারিয়েছে তাদের মধ্যে চাল বিতরণ করা হয়েছে। ভাঙনের কবলিত মানুষের বসত করার মতো জমি থাকলে তাদের টিন প্রদান করা হবে। জেলা প্রশাসনের কাছে পর্যাপ্ত টিন মজুদ আছে। এছাড়াও কোন পরিবার যদি আশ্রয়ন প্রকল্পে যেতে চায় তাদের জন্যও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।