Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ঠাকুরগাঁওয়ের জমিদার বাড়ী জামে মসজিদ

ঐতিহাসিক নিদর্শন কি হারিয়ে যাবে

রুবাইয়া সুলতানা বাণী, ঠাকুরগাঁও থেকে | প্রকাশের সময় : ২ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

দেশের উত্তরাঞ্চল বলতে এক সময় ছিল রাজশাহী বিভাগ। রাজশাহী ভেঙে রংপুর বিভাগ হয়েছে। রংপুর বিভাগে বৃহত্তর রংপুর ও বৃহত্তর দিনাজপুর জেলা। 

প্রাচীনকালে যে সমস্ত মসজিদ গড়ে উঠেছে তার মধ্যে ঠাকুরগাঁওয়ের জামালপুর ইউনিয়নের জমিদারবাড়ি জামে মসজিদটি উল্লেখযোগ্য। দেড় শতাধিক বছরের পুরনো এই মসজিদ বর্তমানে কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
ঠাকুরগাঁও শহর থেকে পীরগঞ্জ যাওয়ার পথে বিমানবন্দর পেরিয়ে শিবগঞ্জহাট। হাটের প্রায় তিন কিলোমিটার পশ্চিমে জামালপুর জমিদারবাড়ি জামে মসজিদ। মসজিদের প্রবেশমুখে শোভা পাচ্ছে একটি বড় সুন্দর তোরণ। মসজিদের নির্মাণশৈলী বলে দিচ্ছে সে সময় কারুকাজ কতটা নিখুঁত ছিল।
ব্রিটিশ শাসনামলে তাজপুর পরগনার জমিদারবাড়ি থেকে রওশন আলী নামে এক ব্যক্তি এ অঞ্চলে আসেন। তারই বংশধররা পরবর্তীতে ব্রিটিশের কাছ থেকে জমিদারী পান। ১৮৬২ সালে জমিদারবাড়ির ভিত্তি স্থাপন করা হয়। বাড়িটির নির্মাণ শেষ হওয়ার আগেই ১৮৬৭ সালে মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ফলে মসজিদের ব্যয়বহুল নির্মাণ কাজ শেষ হলেও জমিদার বাড়িটির নির্মাণ অসমাপ্ত থেকে যায়।
মসজিদে বড় আকৃতির তিনটি গম্বুজ। গম্বুজের শীর্ষদেশ কাঁচ পাথরের কাজ করা। মসজিদের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো মিনারগুলো। ছাদে রয়েছে আটাশটি মিনার। অপরূপ নকশা করা প্রতিটি মিনার ৩৫ ফুট উঁচু। অপূর্ব সৌন্দর্যের গম্বুজ ও মিনার দেখার জন্য লোকজন জড়ো হওয়া নিয়মে পরিণত হয়েছে।
মাত্র একটি মসজিদে এত মিনার সচরাচর দেখা যায় না। মসজিদের চারটি অংশ হলো মূল কক্ষ। মূল কক্ষের সঙ্গে ছাদসহ বারান্দা। পূর্ব দিকের মাঝখানে চার থামের উপর ছাদ বিশিষ্ট মূল দরজা। খোলা বারান্দার প্রাচীরে এবং মূল দরজার ছাদে ছোট ছোট মিনারের অলঙ্কার রয়েছে।
মসজিদের অভ্যন্তরে দরজা, বারান্দা এবং বাইরের দেয়ালগুলোতে প্রচুর লতাপাতা ও বাহারি ফুলের সুদৃশ্য নকশা রয়েছে। ইতিহাস থেকে জানা যায়, ভারতের উত্তর প্রদেশের হংসরাজ এবং তার ছেলে রামহিৎ মসজিদের মূল কারিগর।
মসজিদের সংস্কার বিষয়ে মসজিদ নির্মাণকারীর বংশধর খোকন চৌধুরী ও মোসেদ আলী চৌধুরী ইনকিলাবকে জানান, যে তারা পারিবারিকভাবে ও স্থানীয়দের সহায়তায় সংস্কার কাজ করছেন। সংস্কারা কাজের খরচ বহন করা খুবই কষ্টকর। তদুপরি পরিবারের ঐতিহ্য রক্ষায় হাল ছাড়েননি।
জামালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম চৌধুরী কিছুটা আক্ষেপের সাথেই বলেন অনেকবার বিভিন্ন মহল এবং প্রত্সতত্ত¡ বিভাগে জানিয়েও কোন লাভ হয়নি। এ বিষয়ে তিনি সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেন। ঐতিহাসিক মসজিদের সংস্কার বিষয়ে জেলা প্রশাসকে একেএম কামরুজ্জামান সেলিম ইনকিলাবকে জানান ঠাকুরগাঁওয়ে ঐতিহাসিক ঐতিহ্য রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে লিখিত আবেদন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।



 

Show all comments
  • Nannu chowhan ২ নভেম্বর, ২০১৯, ৯:১০ এএম says : 0
    Maashallah,boroi oporbbu shondor Allah'r eai ghorti...
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ