Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাবা আম নিয়ে আসবে

সাড়ে ৪ মাস ধরে অপেক্ষা প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

বাবা আম নিয়ে আসবে চার বছর বয়সী ছেলে ইনামের জন্য। সাড়ে চার মাস পেরিয়ে গেলেও বাবার জন্য অপেক্ষা শেষ হচ্ছে না ইনামের। আইন-শৃংখলা বাহিনীর দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোনো সন্ধান মেলেনি শিশুটির বাবা ব্যবসায়ী ইসমাইল হোসেন বাতেনের। গাবতলী লালকুঠি প্রথম কলোনির বাসা থেকে অফিসে যাওয়ার উদ্দেশে গত ১৯ জুন বের হয়ে আর বাসায় ফিরেননি তিনি। গতকাল শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেন বাতেনের পরিবারের সদস্যরা। এ সময় পরিবারের সদস্যরা সাংবাদিকদের এ সব তথ্য জানান। তারা দ্রæত বাতেনের সন্ধান চান বলে গতকালের মানবন্ধনে দাবি করেন।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন ইসমাইল হোসেন বাতেনের স্ত্রী নাসরিন জাহান স্মৃতি। তার সঙ্গে ছিল ছেলে ইনাম ও মেয়ে ইনশাক (১৪)। নাসরিন জাহান বলেন, আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের কাছে দিনের পর দিন ধরনা দিয়েও স্বামীর কোনো খোঁজ পাননি সাড়ে চার মাসে। বাতেন যেদিন নিখোঁজ হয়, ছোট ছেলেকে বলে গিয়েছিল বাবা, তোমার জন্য আম আনব। সেই যে গেল, আর ফিরে আসেনি। দুপুরে নাকি ওর অফিস থেকে খাবার খাওয়ার জন্য বের হয়েছিল। কিন্তু বাসায় আর আসেনি।
তিনি বলেন, ছেলে সেদিন রাত ২টা পর্যন্ত জেগেছিল বাবার জন্য। বলে, বাবা আম নিয়ে আসলে তারপর ঘুমাবে। এখনো বাবার জন্য অপেক্ষা করে থাকে ছেলেটা। সারাদিন দরজার সামনে ঘুরঘুর করে, কখন বাবা আসবে সেই অপেক্ষায়। শুধু বাবার কাছে যেতে চায়। বলে, বাবা না আসলে ঘুমাবে না, খাবে না, কিচ্ছু করবে না। এইভাবেই তো চলে গেল মাসের পর মাস। ছেলের বাবা আর আসেনি। এই বলে তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। সাথে ছেলে-মেয়েও কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে।
বাতেনের স্ত্রী বলেন, ছেলে-মেয়েকে নিয়ে সব জায়গায় ঘুরেছি। কত জায়গাতেই না চিঠি দিয়েছি স্বামীর খোঁজ পেতে। কিন্তু এখনো কেউ কোনো খবর দিতে পারেনি। লোকটা বেঁচে আছে না মরেই গেছে, সে কথাও তো জানি না! আমাদের বাসা লালকুঠি প্রথম কলোনিতে। বাতেনের অফিস মিরপুরে। সকালে বের হয়ে যায় বাসা থেকে। প্রতিদিন দুপুরে খেতে আসত বাসায়। সেদিন দুপুর পেরিয়ে গেলেও বাতেনের দেখা নেই। মোবাইলে কল যায় না। অফিসে ফোন করি, বলে বাসায় যাওয়ার কথা বলে বেরিয়ে গেছে। এরপর আর বাসা, অফিস কোথাও সন্ধান পাওয়া যায়নি তার।
তিনি বলেন, স্বামী নিখোঁজ হওয়ার পর থেকেই টিউশনি করে কোনোমতে সংসার চালাচ্ছি। পুরনো শত্রুতার জের ধরে কেউ হয়তো অপহরণ করে থাকতে পারে বাতেনকে। বাতেনদের বাড়ি কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরের কুকরারাই গ্রামে মিন্টু মিয়া নামে একজন খুন হন কয়েকবছর আগে। ওই মামলায় বাতেনকে আসামি করা হয়েছিল। কিন্তু খুনের সঙ্গে জড়িত না থাকায় বেসকুর খালাস পায় বাতেন। কিন্তু মিনটু মিয়ার সন্তানেরা বাতেনকেই খুনি মনে করে। ২০১৫ সালের ১৮ মার্চ মাসে সন্ত্রাসী বাহিনী বাতেনের ওপর হামলা করেছিল। মিন্টুর ছেলেরাই এই হামলা করিয়েছিল। আইন-শৃংখা বাহিনী সক্রিয় হলে বাতেনের সন্ধান পাওয়া সম্ভব বলে মনে করেন তার পরিবারের সদস্যরা।



 

Show all comments
  • Nannu chowhan ২ নভেম্বর, ২০১৯, ১০:২৪ এএম says : 0
    Enquilab potrikar kritoggotai eai goom khooner o manush basha theke ber hoye gele na fere asha kono shongbad na paowa jeno ekta ridoy bidarok kahini nitto noimotto bepar,eai deshe thana polish nana rokom ayn sringkhola bahini ase,tar poreo shovbo joge eaita ki kore shomvob
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ