Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৮ জুন ২০২৪, ১৪ আষাঢ় ১৪৩১, ২১ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

কাউন্সিলর মঞ্জু ১০ দিনের রিমান্ডে

অস্ত্র ও মাদক মামলা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

অস্ত্র ও মাদক মামলায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) ৩৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ময়নুল হক মঞ্জুকে ১০ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন আদালত। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত গতকাল শুক্রবার বিকেলে এ আদেশ দেন। এর আগে ওয়ারী থানা পুলিশ কাউন্সিলর মঞ্জু ও তার গাড়িচালক সাজ্জাদকে আদালতে হাজির করে। দুই মামলায় ১৪ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ওয়ারী থানার এসআই হারুন-অর রশিদ। আর সাজ্জাদকে মাদক মামলায় সাত দিন রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ। পরে আদালত সাজ্জাদকে ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আদালতের কাছে দাবি করা হয়, কাউন্সিলর মঞ্জু একজন চিহ্নিত চাঁদাবাজ ও মাদক ব্যবসায়ী। তার কাছে ইয়াবা পাওয়া গেছে। দীর্ঘদিন ধরে তিনি এই অবৈধ কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন। তার সহযোগী অন্য আসামিদের গ্রেফতারের জন্য এই আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হেমায়েত উদ্দিন খান আদালতকে বলেন, আসামি ময়নুল হক একজন কাউন্সিলর। তিনি একজন জনপ্রতিনিধি। অথচ একজন জনপ্রতিনিধির হাতে অস্ত্র ও মাদক। এটি কাম্য নয়। এই অস্ত্র ও মাদকের উৎস এবং আসামির সহযোগীদের খুঁজে বের করার জন্য তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি।
এরপর আসামিপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ ওয়ালী উল্লাহ বলেন, আক্রোশ চরিতার্থ করার জন্য তাকে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। র‌্যাব অফিস ও কাউন্সিলর অফিস পাশাপাশি। আগে কখনও এমন অভিযোগ তারা পাননি। হঠাৎ করে তারা সন্ধান পেয়ে অভিযান চালালেন। তিনি (মঞ্জু) দুইবারের কমিশনার। তিনি চাইলে অস্ত্র লাইসেন্স নিতে পারতেন। তার ডায়বেটিস ও হার্টের সমস্যা আছে। এখন অস্ত্র যেহেতু ওনারা উদ্ধারই করে ফেলছে, তাহলে আর রিমান্ডের প্রয়োজন কি। তাই আমরা রিমান্ড বাতিল করে জামিনের আবেদন করছি।
এরপর কাউন্সিলর মঞ্জু কথা বলতে শুরু করেন। তিনি বলেন, আমি ১৫ বছর কাউন্সির, আমার ঢাকায় একটা বাড়ি পর্যন্ত নেই। আমি জীবনে চাঁদাবাজি করিনি, চাঁদাবাজিকে আমি ঘৃনা করি। আমার কোনো অস্ত্র নেই, অস্ত্র জীবনে দেখিনি। আইনজীবীদের বক্তব্যের আগে কাউন্সিলর মঞ্জু আরো বলেন, আমি হলফ করে বলতে পারি আমার অফিসে এসব কিছু পায়নি। আমি ১৫ বছর কাউন্সিলর আমি রাজধানী মার্কেটের সভাপতি। একটি খারাপ গোষ্ঠী আমাকে ফাঁসিয়েছে। আমাকে সরাতে পারলে তাদের উদ্দেশ্য হাসিল হয়। আমি গাঁজা, বাবা এগুলো ঘৃণা করি। তখন আদালত বলেন, বাবা কি? জবাবে মঞ্জু বলেন ওই যে ওনারা যেগুলো বললেন, ইয়াবা। এরপর আরেকবার মঞ্জু বলেন, আমি কসম খেয়ে বলতে পারি এগুলো কিছু পায়নি। এগুলো সব মিথ্যা। পরে আসামি পক্ষের আইনজীবীর সহযোগিতায় তার কথা বলা বন্ধ করেন বিচারক। এরপর উভয়পক্ষের আইনজীবীর শুনানি শেষে আদালত দুই মামলায় মঞ্জুর ৫ দিন করে ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
গত ৩১ অক্টোবর বৃহস্পতিবার দুপুরে মঞ্জুকে আটক করে র‌্যাব। এ সময় র‌্যাব-৩-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল শাফি বুলবুল সাংবাদিকদের বলেন, মঞ্জু দীর্ঘদিন ধরে চাঁদাবাজির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা অবৈধভাবে উপার্জন করে আসছিলেন। এ ছাড়া তিনি মাদক সেবন এবং মাদক কেনাবেচার সঙ্গে যুক্ত। তার অবৈধ কাজকর্ম এবং অর্থ উপার্জনের বিষয়টি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নজরে আসার পর গ্রেপ্তার করা হলো। তিনি আরো বলেন, এখানে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, দখলবাজি করে আমেরিকায় পরিবারের কাছে হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠান তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ