Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বালাগাল উলা বিকামালিহি কাসাফাদ্দোজা বিজামালিহি

এ. কে. এম. ফজলুর রহমান মুন্শী | প্রকাশের সময় : ১ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০৬ এএম


(গ) অন্য একটি বর্ণনায় ইহুদীদের উত্তর এবং মহানবী (সা.)-এর নির্দেশ এভাবে বিবৃত হয়েছে : তারা বলল, এটা খুবই বড়দিন। আল্লাহ তায়ালা এই দিনে মূসা (আ.) এবং তার কাওমকে নাজাত দিয়েছেন এবং যখন ফেরাউন ও তার কাওমকে ডুবিয়ে দিয়েছেন মূসা (আ.) শোকর গুজারীর লক্ষ্যে এই রোজা রেখেছেন। সুতরাং আমরাও রোজা পালন করি। একথা শুনে মহানবী (সা.) বললেন, তোমাদের তুলনায় আমি মূসার অধিক হকদার ও নিকটতম। সুতরাং সেই দিন তিনি নিজে রোজা রাখলেন এবং সাহাবাদেরকেও সেই দিন রোজা রাখার নির্দেশ দিলেন। [১। সহীহ বুখারী : কিতাবুল আম্বিয়া, বাবু কাওলিল্লাহি তায়ালা : ওয়া হাল, আতাকা হাদীসু মূসা, খ- ৩, পৃষ্ঠা ১২৪৪, বর্ণনা সংখ্যা ৩২১৩; ২। সহীহ মুসলিম; কিতাবুস সাওম, বাবু সিয়ামে ইয়াওমে আশুরা, খ- ২, পৃষ্ঠা ৭৯৬, বর্ণনা সংখ্যা ১১৩০, ৩। সুনানে ইবনে মাজাহ। কিতাবুস সিয়াম: বাবু সিয়ামে ইয়াওমে আশুরা, খ- ১ পৃষ্ঠা ৫৫২, বর্ণনা সংখ্যা ১৭৩৪; ৪। মুসনাদে আহমাদ বিন হাম্বল : খ- ১, পৃষ্ঠা ৩৩৬, বর্ণনা সংখ্যা ৩১১২।]

উল্লেখিত বর্ণনাবলীর দ্বারা জানা গেল যে, বনী ইসরাইল ফেরাউনের জুলুম ও নির্যাতনের শিকার হয়েছিল। যার কারণে আল্লাহ দ্বীনের পায়রবী করা তাদের জন্য কঠিন ছিল। কিন্তু হযরত মূসা (আ.)-এর ক্রমাগত চেষ্টার ফলে সেই সুন্দর দিনের উদয় ঘটল, যখন বনী ইসরাইল নীল দরিয়া পার হয়ে গেল এবং তাদের পশ্চাদ্ধাবনকারী ফেরাউন স্বীয় সৈন্যসহ সেই দরিয়ায় ডুবে গেল। এভাবে বনী ইসরাইল জুলুম ও নির্যাতন থেকে মুক্তি ও স্বাধীনতা লাভ করেছিল। বিজয় ও স্বাধীনতার এই নেয়ামত ছিল আল্লাহতায়ালার ফজল এবং রহমত। সুতরাং হযরত মূসা (আ.) আল্লাহর শোকর আদায় করতে গিয়ে রোজা রাখলেন এবং বনী ইসরাইলও রোজা রাখল। তারা সেই দিনটিকে মুক্তি ও স্বাধীনতার দিন হিসেবে অদ্যাবধি উদযাপন করছে। মহানবী (সা.) ও হযরত মূসা (আ.)-এর সাথে রাসূল হিসেবে সম্পর্কের কারণে সেই দিন রোজা রেখেছেন এবং মুসলমানদেরকেও রোজা রাখতে হুকুম দিয়েছেন। ইমাম তাহাভী (২২৯-৩২১ হি:) বলেন, এর দ্বারা সুস্পষ্ট হয়ে গেছে যে, রাসূলুল্লাহ (সা.)-মূসা (আ.)-এর ফেরাউনের ওপর বিজয় লাভের জন্য আল্লাহতায়ালার শোকর উদযাপনের লক্ষ্যে রোজা রেখেছেন। (তাহাভী : শরহে মায়ানিউল আছার, খ- ২, পৃষ্ঠা ১৩২, বর্ণনা সংখ্যা ৩২০৯)। এখানে একটি চিন্তার বিষয় এই যে, যদি ইহুদীরা নিজেদের পয়গাম্বরের বিজয় এবং তাদের আজাদী ও মুক্তি লাভের দিনকে সম্মানের উপযুক্ত মনে করে ইহা উদযাপন করার অধিকার রাখে, তাহলে মুসলমানগণ ও তাদের নবী (সা.)-এর মীলাদের দিনকেও সম্মানের যোগ্য মনে করে উদযাপন করার অধিক হক সংরক্ষণ করেন। তিনি হচ্ছেন খাতেমুল আম্বিয়া এবং সাইয়্যেদুল আম্বিয়া ও সাইয়্যেদুল মুরসালীন। তিনি আল্লাহপাকের ফজল ও রহমত হয়ে সকল মানবতাকে আজাদী দানের জন্য এবং জুলুম ও অত্যাচার থেকে মুক্তিদানের জন্য তশরিফ আনয়ন করেছেন।

 

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ