Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দু’টি ভিডিওতে ঘটনায় নতুন মোড়

যৌন নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার দিনাজপুর ডিসির

মাহফুজুল হক আনার, দিনাজপুর থেকে | প্রকাশের সময় : ১ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০৬ এএম

একের পর এক ঘটনার জন্ম দিয়ে ক্রমেই আলোচনার খোরাক যোগান দিচ্ছে দিনাজপুর জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগকারী নারী। অভিযোগ সত্য নয় বলে স্যোশাল মিডিয়ায় দেয়া ঐ নারীর দু’দফায় দেয়া দুটি ভিডিও মোড় নিয়েছে নতুন ঘটনার।

ভিডিওতে দেখা যায়, যার একটিতে তার স্বামীর প্ররোচনা এবং অপরটিতে এক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের প্ররোচনায় করেছেন বলে জানিয়েছেন। জেলার সর্বোচ্চ পর্যায়ের একজন সরকারী কর্মকর্তাকে নিয়ে এমন ন্যাক্কারজনক ভিডিও ভাইরাল এবং অস্বীকার করে দু’ধরনের বক্তব্য দিয়ে আবারও প্রকাশের ঘটনাটি এখন দিনাজপুরে টক অব দ্যা টাউনে পরিণত হয়েছে।

প্রায় দু’মাস আগে দিনাজপুর সদরের খানপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে কর্মরত স্কুল শিক্ষিকা আঞ্জু বেগমের (ছদ্মনাম) একটি ভিডিও প্রকাশ হয়। ভিডিওতে ঐ নারী বলেন যে কোন ভাবেই হোক জেলা প্রশাসকের সাথে তার অবৈধ সম্পর্ক গড়ে উঠে। তিনি বলেন, স্বামীর সাথে সম্পর্ক খারাপ হওয়ার বিষয়টি ডিসিকে জানানোর পর পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস পেয়ে তিনি স্বামীকে তালাক দেন। যা তার ম্যাসেঞ্জার চেক করলেই পাওয়া যাবে। পরবর্তীতে সম্পর্ক অবনতি হলে চাকুরী খাওয়াসহ বিভিন্ন হুমকি দিতে থাকে জেলা প্রশাসক। আরো অনেক কিছুই তিনি ঐ ভিডিওতে উল্লেখ করেন।
তার সূত্র ধরে কয়েকদিন পরেই আঞ্জু নামের ঐ নারী আরো একটি ভিডিও স্যোশাল মিডিয়ায় প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আমার আই ডি থেকে একটি ভিডিও ও বেশ কিছু ছবি পোস্ট করা হয়। যৌতুক দাবী, অত্যাচারসহ বিভিন্ন কারণে গত ফেব্রুয়ারী মাসে স্বামীকে তালাক দেই। পরবর্তীতে পরিবারের ও জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রাহুল, ডিপিও এবং জেলা প্রশাসককে জানালে তাদের সহযোগিতায় পিটিআইয়ে ট্রেনিংয়ে আসি। তবে এ সকল ভিডিও অল্প সময়ের মধ্যেই ডিলিট করে দেয়া হলেও তা ভাইরাল হয়ে ছড়িয়ে পড়তে থাকে।

সম্প্রতি বিষয়টি বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রচার হলে বিষয়টি আবারও টক অব দ্যা টাউনে পরিণত হয়। এরই মধ্যে গত দুদিন আগে তাকে আরো একটি ভিডিও স্যোশাল মিডিয়ায় স্থান পেয়েছে। সেই ভিডিওতে তিনি ৯ নং আস্করপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জিয়া তাকে দিয়ে জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ করিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন। তার ভাষ্যমতে বিভিন্ন দুর্নীতির হাত থেকে বাঁচার জন্য জিয়া চেয়ারম্যান তাকে অপহরণসহ বিভিন্ন হুমকি দিয়ে এই কাজ করিয়েছে।

এদিকে তার সাবেক (ডিভোর্সি) স্বামী’র পক্ষ থেকে কোন বক্তব্য না আসলেও ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জিয়া তার বিরুদ্ধে করা অভিযোগটিকে ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছেন। তবে জেলা প্রশাসক, অভিযোগকারী নারী ও তার সাবেক স্বামী বা ইউপি চেয়ারম্যান কোন পক্ষ থেকেই কারো বিরুদ্ধেই কোন মামলা দায়েরের তথ্য পাওয়া যায়নি।
সরকারের একজন উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের মত গুরুতর অভিযোগ এবং পর পরই তা অস্বীকার এবং প্রথম নিজ স্বামী ও পরে এক ইউপি চেয়ারম্যানের উপর দোষ চাপানোর ঘটনাটি এখন মুখরোচক হয়ে উঠেছে। দ্বিতীয়তো কোন পক্ষই এখনও কেন আইনের আশ্রয় নিলো না তা প্রশ্নবোধক হয়ে উঠেছে সচেতন মহলে।

এদিকে দিনাজপুরের জেলা প্রশাসকের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নারী কর্তৃক যৌন হয়রানীর মত সম্মানহানিকর মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য প্রচারের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ ভূমি অফিসার্স কল্যাণ সমিতি’র সদস্যরা। গতকাল সন্ধায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে বিভিন্ন শাখার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাতে অংশগ্রহণ করেন।
এসময় তারা জেলা প্রশাসক মাহমুদুল আলম এর বিরুদ্ধে করা বিভিন্ন সম্মানহানিকর বক্তব্য মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য প্রচারের নিন্দা জানায়। তারা বিষয়টি নিয়ে নোংরামী না করার আহবান জানান।

 



 

Show all comments
  • Md Shamim Ahmed ১ নভেম্বর, ২০১৯, ১:১৭ এএম says : 0
    এরা হলো শিক্ষিত বাটপার - জাতির নষ্টের মুল - চাকরি থেকে বহিষ্কার করা হউক - এবং সঠিক বিচার করা হউক - --৷
    Total Reply(0) Reply
  • Nazrul Islam ১ নভেম্বর, ২০১৯, ১:১৮ এএম says : 0
    এদেরকে চাকরী কেথে বের করে দেওয়া দরকার, মানুষে বাড়ি গিয়া কামলা দিয়া খাক তাহলে ঠিক হবে ওরা ।ওদের জন্য সমাজ আজ নষ্ট হয়ে গেছে।
    Total Reply(0) Reply
  • Faisal Ahmed ১ নভেম্বর, ২০১৯, ১:১৯ এএম says : 0
    দেশ থেকে পুলিশ ডিসি এসপির নাম টা মুছে পেলা দরকার। র‍্যাবের মত নতুন করে ঘঠন করে নতুন নাম দেওয়া দরকার
    Total Reply(0) Reply
  • মজুমদার রুবেল ১ নভেম্বর, ২০১৯, ১:২১ এএম says : 0
    এসব চরিত্রহীন অপদার্থ গুলি কিভাবে প্রশাসনের এমন উচ্চ পর্যায়ে যায়, এটাই একটা অবাক করা বিষয়!
    Total Reply(0) Reply
  • আশরাফ আল দ্বীন ১ নভেম্বর, ২০১৯, ১:২২ এএম says : 0
    ডিসি সাহেবরা পাইছে কি এরা তো দেশের মানসম্মান নষ্ট করতেছে এদের এমন শাস্তি দেয়া হোক যাতে আর কেউ খারাপ কাজ করার সাহস না পায়।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ