পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের অপসারণের দাবিতে চলমান তৃতীয় দিনের সর্বাত্মক ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করার সময় এক সহকারী প্রক্টর আন্দোলকারীদেরকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে। ওই সহকারী প্রক্টরের নাম মহিবুর রৌফ শৈবাল। আর লাঞ্ছিত হওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন- ছাত্র ইউনিয়ন বিশ^বিদ্যালয় সংসদের সভাপতি ও চারুকলা বিভাগের ৪২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী নজির আমিন চৌধুরী জয় ও নাটক ও নাট্যতত্ত¡ বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ক্যামেলিয়া শারমিন চূড়া। এই ঘটনায় উভয় শিক্ষার্থী বিচার চেয়ে বিশ^বিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়, ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে পূর্বঘোষিত প্রশাসনিক ভবন অবরোধ ও ধর্মঘটের সমর্থনে পুরাতন কলা ভবনের সামনে অবস্থান নেই। ভবনের সামনে অবস্থান করা অবস্থায় বেশ কয়েকজন শিক্ষক ভেতরে ঢোকার জন্য অনুরোধ জানান। আমাদের পাল্টা অনুরোধে সম্মানিত শিক্ষকরা ভবনে ঢোকেননি। এমন অবস্থায় সহকারী প্রক্টর মহিবুর রৌফ শৈবাল নাটক ও নাট্যতত্ত¡ বিভাগের কিছু শিক্ষার্থীকে নিয়ে আমাকে টানা হেচড়া করা শুরু করে এবং এক পর্যায়ে আমি মাটিতে পড়ে যাই। এই ঘটনায় আমি যথাযথ বিচার প্রত্যাশা করছি।’
এদিকে এই ঘটনার প্রতিবাদে তাৎক্ষনিক বিক্ষোভ করেছেন আন্দোলনকারীরা।
তবে লাঞ্ছনার অভিযোগ অস্বীকার করে মহিবুর রৌফ শৈবাল দাবি করেছেন উল্টো নিজে আন্দোলনকারীদের হাতে আহত হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি তাদের ওপর কোনো হামলা করিনি। ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি জয়কে জামার কলার নয়, ঘাড় ধরে গেট থেকে সরিয়ে এনেছিলাম। এসময় নীচে থেকে কেউ একজন আমার তলপেটে ৮-১০টি লাথি মারে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এতে আমি গুরুতর আহত হই। পরে সেখান থেকে দ‚রে সরে আমি দেখি আমার ইউরিন লাইনে আঘাত লেগেছে। এখন আমি সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিচ্ছি।’
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীর ওপর হামলার ব্যাপারে চলমান আন্দোলনের অন্যতম মুখপাত্র অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেন, ‘একজন সহকারী প্রক্টরের নেতৃত্বে আন্দোলনকারীদের ওপরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। তার একটা ভিডিও দেখে আমরা অত্যন্ত মর্মাহত হয়েছি। একজন শিক্ষক তার ছাত্রের ওপর কিভাবে হামলা করতে পারে। একজন মাস্তান শিক্ষক আমরা চাই না।’
তবে ভিসিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ’ এক বিজ্ঞপ্তিতে সহকারী প্রক্টর মহিবুর রৌফ শৈবাল হামলায় মারাত্মক ভাবে আহত হয়েছেন দাবি করে তীব্র নিন্দা ও শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। এছাড়া শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সহকারী প্রক্টরের উপর হামলার প্রতিবাদ ও শিক্ষার্থীদের ক্লাস পরীক্ষায় অংশগ্রহণে বাঁধা না দিয়ে বিশ^বিদ্যালয়ে শিক্ষার সুষ্ঠ পরিবেশ বজায় রাখতে এবং আন্দোলনে চিহিৃত শিবিরকর্মীদের অংশগ্রহণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান টানা অবরোধ ও ধর্মঘটের কারণে শিক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম কার্যত অচল হয়ে পড়ছে। এমন অবস্থায় আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, দাবি আদায়ে আজ বৃহস্পতিবারও তারা সর্বাত্মক ধর্মঘট কর্মসূচী চালিয়ে যাবেন। বুধবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত সর্বাত্মক ধর্মঘট কর্মসূচী পালন করে আন্দোলনকারীরা। কর্মসূচীর অংশ হিসেবে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ও পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে কোন কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ প্রশাসনের কাউকেই ভিতরে প্রবেশ করতে দেয়নি। এতে প্রশাসনিক ভবন লাগাতার চারদিন অবরোধ থাকায় কার্যত অচল হয়ে আছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম।
অন্যদিকে দুইদিনের ধর্মঘটের কারণে অধিকাংশ বিভাগেই ক্লাস পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। দেখা যায়, সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের সামনে অবস্থান নেয় আন্দোলনকারীরা। এই সময় তারা ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশ নিতে আসা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদেরকে ভিতরে প্রবেশে বাঁধা দেয়। এই সময় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে তাদের বাক বিতন্ডা করতেও দেখা যায়।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষককে ক্লাস-পরীক্ষা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এছাড়া আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দ্বারা প্রশাসনিক ভবন লাগাতার অবরোধের কারণে স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে দাবি করে প্রশাসন অবরোধ কর্মসূচী প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আব্দুস সালাম মিঞাঁ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ অনুরোধ জানানো হয়।
অন্যদিকে বিকেল চারটার দিকে পুরোনো প্রশাসনিক ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে আন্দোলনকারীরা। সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেন, ‘ভিসি অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত অবরোধ কর্মসূচী চলবে। এছাড়া আগামীকালও ক্লাস পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। সঙ্গে সঙ্গে আগামী শুক্র ও শনিবার উইকেন্ড প্রোগ্রামও ধর্মঘটের আওতায় থাকবে। তবে জরুরী সেবা সমূহ এর মধ্যে গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি ও চিকিৎসা সেবা ধর্মঘটের আওতামুক্ত থাকবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষক সমিতির নেতাদের অনুরোধের কারণে আগামীকাল একাউন্ট সেকশন দুই ঘন্টার জন্য খেলা থাকবে। যাতে করে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা তাদের বেতন তুলতে পারেন।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।