Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ছাত্রদলের কমিটিতে পদ পেতে বিবাহিতদের অনশন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩১ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:০০ এএম

ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে পদ পেতে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছে সদ্য বিদায়ী কমিটির বিবাহিত অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী। তাদের দাবি, ছাত্রদলের রাজনীতি করার সব যোগ্যতা থাকা সত্তে¡ও রাজপথের ত্যাগী, নির্যাতিত ও পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের শুধুমাত্র বিবাহিত এই অজুহাতে পূর্ণাঙ্গ কমিটি থেকে বাদ দেয়ার চক্রান্ত হচ্ছে। এই চক্রান্তের বিরুদ্ধে তারা গতকাল বুধবার সাড়ে ১১টা থেকে নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের প্রবেশ মুখে অনশন কর্মসূচি শুরু করেন।

আমরণ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী ছাত্রদলের সদ্য বিদায়ী কমিটির স্কুল বিষয়ক সম্পাদক আরাফাত বিল্লাহ খান বলেন, ছাত্রদলের কাউন্সিলের তফসিলের সময় কোথাও বিবাহিতরা ছাত্রদল করতে পারবে না তার উল্লেখ করা হয়নি। কিন্তু পরবর্তীতে মৌখিক নির্দেশনায় বলা হয় বিবাহিত কেউ প্রার্থী হতে পারবেন না। সে সময় বিবাহিত ছাত্রদলের সাবেক নেতারা সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের কাছে জানতে চান পরবর্তীতে পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে বিবাহিতরা জায়গা পাবে কিনা। সে সময় প্রত্যেকেই বলেছিলেন পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে কোন সমস্যা হবে না। কিন্তু এখন পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার সময় হঠাৎ করেই ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল তাদেরকে বাদ দেয়ার কথা বলছেন। আরাফাত বিল্লাহ আরও বলেন, ছাত্রদলের যাদেরকে বাদ দেয়ার জন্য ষড়যন্ত্র হচ্ছে তারা বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারসহ ১/১১ পরবর্তী সময়ে রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন। একাধিকবার জেলে গেছেন, তাদের বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা হয়েছে।

ছাত্রদলের এই সাবেক নেতা বলেন, এর আগে ২০০০ সালের এসএসসি পাস যোগ্যতা নির্ধারণ করে কাউন্সিল করা হয়েছে। এই যোগ্যতার কারণে অনেকেই ছাত্রদল থেকে বাদ পড়েছেন। তারা যখন যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলে পদ পাওয়ার জন্য যোগাযোগ করছেন তখন তাদেরকে বলা হচ্ছে ‘জুনিয়র’। আমাদের আগের ছাত্র নেতারাই যদি জুনিয়র হিসেবে অন্য সংগঠনে পদ না পান তাহলে আমরা কোথায় যাবো?

সাবেক সহ-মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক মো. নিজাম উদ্দিন বলেন, ছাত্রদলের সাংগঠনিক অভিভাবক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় গত ১৮ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হওয়া ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের বিবাহিত কেউ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হতে পারবে না। তার নির্দেশ মেনে আমরা কাউন্সিলে সহযোগিতা করি। কিন্তু এখন বলা হচ্ছে বিবাহিতদের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতেও রাখা হবে না। ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হওয়ার আগে আপনার কিভাবে বুঝলেন যে বিবাহিতদের রাখা হচ্ছে না কমিটিতে- এমন প্রশ্নের জবাবে নিজাম উদ্দিন বলেন, আমার গত কয়েকদিন ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন ও সম্পাদক ইকবাল হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছি, তারা আমাদের বলে দিয়েছে পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে বিবাহিত রাখা হবে না। বিবাহিত ছাত্রদলের নেতাকর্মী বলছে, আমরা আজকে বাধ্য হয়ে আমরণ কর্মসূচি পালন করছি। এই কর্মসূচি পালন করার আগে বিএনপির সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছি, কিন্তু কেউ আমাদের সুস্পষ্ট আশ্বাস দিতে পারেনি। তাই আমাদের রাজনৈতিক অধিকার নিশ্চিত করতে কর্মসূচি পালন করছি।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সহ-সম্পাদক মোঃ সাইদুর রহমান সোহেল বলেন, বিবাহ বিষয়টা একান্তই ব্যক্তিগত। এটা কখনো সংগঠন পরিপন্থী হতে পারে না। তবে বিবাহিত কোন ছাত্রনেতা যদি অন্যান্য অবিবাহিত নেতাদের চেয়ে সংগঠনে বেশি সময় দিতে পারেন এবং ত্যাগ-শ্রম দিতে পারেন তাহলে সংগঠন কেন তাকে বঞ্চিত করবে?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএম হলের ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মোজাহিদুর রহমান বলেন, আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে। শুধুমাত্র বিবাহিত অভিযোগে কমিটিতে আমাদের রাখা হচ্ছে না। তাহলে এখন আমার কোথায় যাবো? আর ছাত্রদলের গঠনতন্ত্রে কোথাও লেখা নেই বিবাহিতরা সংগঠন করতে পারবে না।
গতকাল ছাত্রদলের এই কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন- সাবেক সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক মাইনুল ইসলাম, সহ-গণযোগাযোগ সম্পাদক মাহমুদুল আলম শাহিন, সহ-অর্থ বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক সানোয়ার হোসেন, সহ-আইন বিষয়ক সম্পাদক আশরাফ জালাল খান মনন, সহ-সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক মাতিস হাসান, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কামরুল হাসান, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের যুগ্ম আহ্বায়ক কামাল আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-সভাপতি বিশ্বজিৎ ভদ্র, মোহাম্মদ ফরিদ হোসেন খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহিদ মল্লিক, সাইফুজ্জামান, সহ-সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী হাসান, ঢাকা কলেজের সিনিয়র সহ-সভাপতি এইচএম রাসেদ, সহ-সভাপতি নূরুল আলম আল আমিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজমির হোসেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরমান হোসেন।



 

Show all comments
  • মজদুর জনতা ৩১ অক্টোবর, ২০১৯, ৮:৫৯ এএম says : 0
    আসলে যতদিন লেখাপড়ারত থাকবে ততো দিন।পদ পদবিতে থাকবে।ছাত্রত্ব না থাকলে কমিটিতে থাকা কি বান্চনিয়? কি বলবো ৭১ বছর বয়সে যুব সংগঠনের কমিটি আসিন।এ অবস্থা ও আমাদের দেখতে হচ্চে।
    Total Reply(0) Reply
  • Nannu chowhan ৩১ অক্টোবর, ২০১৯, ১০:২৩ এএম says : 0
    Satro holei satrodoler pod, satro na hoyeto satrodoler pod asha korata obanchonio,bibahito othoba obibahito ete kono shomoshsha nai,tobe obibahito hole tara doler kaje beshi shomoydite parbe....
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ