Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দ্বিতীয় দিনের ধর্মঘটে জাবিতে অচলাবস্থা

আজও সর্বাত্মক ধর্মঘট

জাবি সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৩০ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের অপসারণের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মত সর্বাত্মক ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করছে ‘দুর্নীতির রিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। বিশ^বিদ্যালয়টিতে চলমান টানা অবরোধ ও ধর্মঘটের কারণে শিক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম কার্যত অচল হয়ে পড়ছে। এমন অবস্থায় আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, দাবি আদায়ে আজ বুধবারও তারা সর্বাত্মক ধর্মঘট কর্মসূচী চালিয়ে যাবেন।

এদিকে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত সর্বাত্মক ধর্মঘট কর্মসূচী পালন করে আন্দোলনকারীরা। কর্মসূচীর অংশ হিসেবে তারা বিশ^বিদ্যালয়ের নতুন ও পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে কোন কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ প্রশাসনের কাউকেই ভিতরে প্রবেশ করতে দেয়নি। এতে প্রশাসনিক ভবন লাগাতার চারদিন অবরোধ থাকায় কার্যত অচল হয়ে আছে বিশ^বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম।
অন্যদিকে দুইদিনের ধর্মঘটের কারণে অধিকাংশ বিভাগেই ক্লাস পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। দেখা যায়, সকাল থেকে বিশ^বিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের সামনে অবস্থান নেয় আন্দোলনকারীরা। এই সময় তারা ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশ নিতে আসা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদেরকে ভিতরে প্রবেশে বাঁধা দেয়। এই সময় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে তাদের বাক বিত-া করতেও দেখা যায়।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষককে ক্লাস-পরীক্ষা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আব্দুস সালাম মিঞাঁ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ অনুরোধ জানানো হয়। এরপরেও আন্দোলনকারীরা তাদের কর্মসূচী চালিয়ে যায়।
অন্যদিকে দুপুর ১২ টায় আন্দোলনকারীদের ১০ জন প্রতিনিধির সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি ‘সংকট সমাধানের লক্ষ্যে’ বৈঠকে বসেন। শিক্ষক সমিতির কার্যালয়ের এ বৈঠক দুপুর সোয়া একটায় শেষ হয়। বৈঠকে শিক্ষক সমিতির পক্ষে ছিলেন সমিতির সভাপতি অধ্যাপক অজিত কুমার মজুমদার, সাধারন সম্পাদক সোহেল রানা ও সদস্য সৈয়দ হাফিজুর রহমান। আন্দোলনকারীদের পক্ষে ছিলেন নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস, দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রায়হান রাইন, পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক খবির উদ্দিন ও জামাল উদ্দিন, ছাত্র ইউনিয়নের বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সভাপতি নজির আমিন চৌধুরী, জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি আশিকুর রহমান, একই জোটের সাবেক সহ-সভাপতি মুশফিক-উস-সালেহীন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (মার্ক্সবাদী) বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মাহাথির মোহাম্মদ, সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক শাকিল-উজ-জামান ও বাংলা সংসদের সাধারণ সম্পাদক মনির উদ্দিন।

এরপর বিকেল সোয়া চারটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরোনো প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন আন্দোলনকারীরা। মিছিলটি কয়েকটি সড়ক ঘুরে ভিসির বাসভবনের সামনে যায়। সেখানে ভিসির অপসারণের দাবিতে নানা স্লোগান দেন তাঁরা।
এর আগে বিকেল পৌঁনে চারটায় পুরোনো প্রশাসনিক ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে আন্দোলনকারীরা। সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেন, ‘শিক্ষক সমিতির প্রতিনিধিরা আমাদের দাবি-দাওয়া সম্পর্কে জানতে চেয়েছে। আমরা তাঁদেরকে জানিয়েছি। তারপর তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটি ও ভিসিপন্থী শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত জানাবেন তারা।’

এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান পরিস্থিতি মোটেই অভিপ্রেত নয়। তাই আমরা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ও ভিসিপন্থী শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আমরা শিগগিরই ভিসির সঙ্গে বসার চেষ্টা করবো। সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা পরবর্তী পদক্ষেপের কথা জানাবো।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ