পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
যুক্তরাষ্ট্রের চালানো সেনা অভিযানে নিহত হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সন্ত্রাসী সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) শীর্ষ নেতা আবু বকর আল বাগদাদি। রোববার এই খবর নিশ্চিত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই ঘটনায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়ব এরদোগান। তবে বাগদাদির মৃত্যু নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে রাশিয়া। এদিকে, নিজের আজ্ঞাবহকেই কেবল হত্যা করেছেন, বলে ট্রাম্পকে কটাক্ষ করেছে ইরান। অন্যদিকে, আমেরিকা ও কুর্দি যোদ্ধাদের (এসডিএফ) সমন্বিত অভিযানে উত্তর সিরিয়ায় নিহত হয়েছে আইএস’র মুখপাত্র ও বাগদাদির ডান হাত বলে পরিচিত আবু হাসান আল-মুহাজির।
রোববার হোয়াইট হাউজ থেকে সরাসরি স¤প্রচারিত ভাষণে ট্রাম্প বলেন, ‘গত রাতে বিশ্বের এক নম্বর সন্ত্রাসী নেতার বিচার হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আবু বকর আল-বাগদাদি নিহত হয়েছেন। তিনি ছিলেন বিশ্বের সবচেয়ে নিষ্ঠুর ও সহিংস সন্ত্রাসী সংগঠন আইএসআইএসের প্রতিষ্ঠাতা ও নেতা।’ বাগদাদি কীভাবে নিহত হয়েছে জানিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘ইদলিবের রারিশা এলাকায় মার্কিন সেনাদের অভিযানের মুখে একটি টানেলে তিন সন্তানসহ আটকা পড়ে বাগদাদি। এসময় সে আত্মঘাতী বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়।’ অভিযানে কোনো মার্কিন সেনা হতাহত হয়নি বলেও জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ট্রাম্প জানান ‘সুড়ঙ্গের শেষ প্রান্তে লুকানোর পর সে নিহত হয়েছে। পুরোটা পথ সে চিৎকার করেছে ও কেঁদেছে। পরীক্ষার মাধ্যমে বাগদাদির নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সুড়ঙ্গে বাগদাদির দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে পড়েছিল। তবে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া গেছে এগুলো তারই দেহাবশেষ।’
এদিকে, বাগদাদীর মৃত্যুর কয়েক ঘন্টা পরেই উত্তর সিরিয়ার আইন আল-বেয়দা গ্রামে ইসলামিক স্টেট এর মুখপাত্র আবু হাসান আল-মুহাজির নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুত কুর্দি নেতৃত্বাধীন সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সেস (এসডিএফ) -এর এক কর্মকর্তা এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তার আগে এসডিএফ’র প্রধান মজলুম আবদি জানিয়েছিলেন, আল-মুহাজিরের সন্ধান পাওয়া গেছে ও তার উপর নজর রাখা হচ্ছে।
এর আগে রোববার সকালে পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমগুলো মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানিয়েছিল, শনিবার রাতভর সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অভিযান চালিয়েছে মার্কিন সেনারা। মাসব্যাপী গোয়েন্দা অনুসন্ধানের পর বাগদাদির অবস্থান চিহ্নিত করতে সমর্থ হন তারা। তুর্কি সীমান্তবর্তী এলাকায় বাগদাদির লুকিয়ে থাকার স্থানের কাছাকাছি সেনারা পৌঁছলে তিনি আত্মঘাতী বোমার বিস্ফোরণ ঘটান। দুই স্ত্রীসহ আইএসের এই শীর্ষ নেতা ঘটনাস্থলেই নিহত হন। এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় রোববার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়ব এরদোগান বলেছেন, ‘ইসলামিক স্টেটের নেতা আবু বকর আল-বাগদাদীর মৃত্যু সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যৌথ লড়াইয়ের এক মাইল-ফলক হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে। তুরস্ক এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানায়।’ তিনি জানান, তুরস্ক অতীতের মতোই ভবিষ্যতেও যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টা সমর্থন করবে।
এদিকে গতকাল সোমবার এক প্রতিবেদনে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের অভিযানে বাগদাদীর মৃত্যুর খবর নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে রাশিয়া। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম আরআইএ-এর সঙ্গে আলাপকালে এ বিষয়ে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মেজর জেনারেল ইগোর কোনশেনকোভ বলেন, ‘সিরিয়ার ইদলিবে তুরস্ক নিয়ন্ত্রিত যুদ্ধবিরতি অঞ্চলে সাবেক আইএস নেতা বাগদাদী-র ওপর মার্কিন অভিযানের ব্যাপারে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে কোনও নির্ভরযোগ্য তথ্য নেই।’ এর আগেও অবশ্য একাধিকবার বাগদাদি নিহত হওয়ার খবর এসেছিল। তবে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইরাকি কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে আল জাজিরা জানায়, এখনও বেঁচে আছে এ জঙ্গি নেতা। তখন সিরিয়ার একটি হাসপাতালে তার চিকিৎসা নেওয়ার খবর দেয় সংবাদমাধ্যমটি। রুশ উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওলেগ সিলোমলোটভ জানিয়েছিলেন, ২০১৭ সালের মে মাসের শেষ দিকে সিরিয়ার রাকা শহরের কাছে রাশিয়ার বিমান হামলায় ‘খুব সম্ভবত’ বাগদাদি নিহত হয়েছেন। এছাড়া, লন্ডনভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটসও নির্ভরযোগ্য সঝত্রের বরাত দিয়ে বাগদাদীর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে। পাশাপাশি আইএস-এর কথিত বার্তা সংস্থা আমাক এজেন্সিও ইতোপূর্বে বাগদাদির মৃত্যুর খবর প্রচার করেছিল। সর্বশেষ শনিবার মার্কিন অভিযানে তার মৃত্যুর খবর এলো।
অপরদিকে, আবু বকর আল-বাগদাদীকে হত্যা গুরুত্বপ‚র্ণ কোনো কাজ নয় বলে মন্তব্য করেছেন ইরানের তথ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ আজহারি-জোহরমি। রোববার এক টুইটবার্তায় তিনি বলেন, এটা কোনো বড় কাজ না। আপনি নিজের আজ্ঞাবহকেই কেবল হত্যা করেছেন।
আইএসর নতুন প্রধান ‘প্রফেসর’
যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় নিহত হয়েছেন আইএস’র প্রধান আবু বকর আল-বাগদাদি। তার মৃত্যুর পর আইএস’র দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন ‘প্রফেসর’ নামে পরিচিত আবদুল্লাহ কারদাশ। ইরাকের প্রয়াত প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের সেনাবাহিনীর সাবেক একজন অফিসার তিনি।
গতকাল সোমবার আইএসের বার্তা সংস্থা ‘আমাক’ জানিয়েছে, চলতি বছরের আগষ্টে আবদুল্লাহ কারদাশকে ‘সেকেন্ড ইন কমান্ড’ বানিয়ে আইএস এর প্রতিদিনের কর্মকান্ড নির্ধারণের দায়িত্ব দেয় বাগদাদি। তার পুরো নাম হাজী আবদুল্লাহ আল আফারি। আইএস’র সবার কাছে তিনি প্রফেসর নামেই পরিচিত। জেলে থাকার সময় বাগদাদির সাথে তার পরিচয় হয়। সে বাগদাদির দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র ও উপদেষ্টা ছিল। এখন বাগদাদির অনুপস্থিতিতে তিনিই আইএস’র প্রধানের দায়িত্ব পালন করবেন। সূত্র : ডেইলি মেইল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।