পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অবশেষে চার লেনে গড়াচ্ছে দেশের অন্যতম অর্থনীতি সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপ‚র্ণ মহাসড়ক সিলেট-তামাবিল। প্রায় ৫৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই মহাসড়কটি এশিয়ান হাইওয়ে-১, এশিয়ান হাইওয়ে-২, সার্ক করিডোর-৫ এবং বিমসটেক করিডোর-৩ এর অন্তর্ভ‚ক্ত। গুরুত্বপূর্ণ এই মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়। এ জন্য প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছে তিন হাজার ৭২৯ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। এ টাকার মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল (জিওবি) থেকে ব্যয় হবে ৬২৯ কোটি এবং এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি) থেকে ঋণ নেয়া হবে তিন হাজার ১০০ কোটি ৫০ লাখ টাকা। তবে পরিকল্পনা কমিশন এ ব্যয়ের বিভিন্ন অসামঞ্জ্যসতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে যাচ্ছে।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক ৪-লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পটি গতকাল প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভায় উপস্থাপিত হয়। গত ২১ অক্টোবর এ বিষয়ে পরিপত্র জারি করে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সড়ক পরিবহন উইং। এ উইংয়ের যুগ্ম প্রধান অঞ্জন কুমার বিশ্বাস পরিপত্রে স্বাক্ষর করেন। পরিপত্রের একটি কপি সূত্রে দেখা গেছে, সিলেট-তামাবিল মহাসড়ককে চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছে চলতি বছরের ১লা অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। এই প্রকল্পের উদ্যোগ নিয়েছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদফতর। আর প্রকল্পের এলাকা হলো সিলেট সদর, দক্ষিণ সুরমা, জৈন্তাপুর ও গোয়াইনঘাট উপজেলা।
পরিপত্রে ‘প্রকল্পের উদ্দেশ্য’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, সিলেট থেকে তামাবিল পর্যন্ত সড়কের উভয়পাশে ধীরগতির যানবাহনের জন্য পৃথক লেনসহ চার লেনে উন্নীত করা, ঢাকা ও সিলেট-তামাবিল করিডোরের মাধ্যমে উপ-আঞ্চলিক সংযোগ স্থাপন করা, স্থলবন্দর, অর্থনৈতিক অঞ্চল, রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে যাতায়াত সহজীকরণ এবং পর্যটন বিকাশে সুযোগ সৃষ্টি করাসহ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখা। পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সড়ক পরিবহন উইংয়ের পরিপত্রে ‘প্রকল্পের পটভ‚মি’তে উল্লেখ করা হয়েছে, সিলেট-তামাবিল উপ-আঞ্চলিক বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলের সঙ্গে রাজধানী ঢাকাসহ অন্য অঞ্চলের যোগাযোগের প্রধান করিডোর। এই সড়ক উন্নয়নের ফলে যাত্রী ও মালামাল দ্রæত ও নিরাপদে পরিবহন সহজতর হবে।
উপ-আঞ্চলিক যোগাযোগ বিশেষ করে ভারত, মিয়ানমার, নেপাল, ভুটান এবং চীনের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য ভৌগোলিকভাবে বাংলাদেশ কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। ঢাকা থেকে সিলেট পর্যন্ত ২২৬ কিলোমিটার মহাসড়ক এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নে চার লেনে উন্নীতকরণের কার্যক্রম চলমান। সিলেট থেকে তামাবিল সড়কটি চার লেনে উন্নীত করা হলে বাংলাদেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলের সাথে ভারতের ক্রস বর্ডার সংযোগ স্থাপিত হবে এবং উপ-আঞ্চলিক সংযোগ স্থাপন করা সম্ভব হবে। এ প্রেক্ষিতেই সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
জানা গেছে, প্রকল্পের আওতায় ভ‚মি অধিগ্রহণ ও পুনর্বাসন, ৫৯.৬৮ লাখ ঘনমিটার মাটির কাজ, ৫৬.১৬ কিলোমিটার পেভমেন্ট নির্মাণ, ২১টি সেতু নির্মাণ (১৬৩৯.৮৪৯ মিটার), ৫৪টি কালভার্ট নির্মাণ, ১০টি পদচারী সেতু নির্মাণ, ২৬৩১.১০৯ মিটার স্ট্রাকচার ফাউন্ডেশন, ৫৬.১৬ কিলোমিটার সড়কের কনস্ট্রাকশন সাইট ফ্যাসিটিলিজ, টোল প্লাজা, এক্সেল লোড স্টেশন, মোটরযান ও যন্ত্রপাতি ক্রয় প্রভৃতি কাজ করা হবে। প্রকল্পটির বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশন কিছু প্রশ্নও তুলেছে। এসব বিষয়ে গতকাল পিইসি’র সভায় বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।
পরিকল্পনা কমিশন বলছে, সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করা নিয়ে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনায় (ডিপিপি) বলা হয়েছে, এআইআইবি ২৬৮ মিলিয়ন ডলার ঋণ হিসেবে প্রদান করবে। এক ডলার সমপরিমাণ ৮৪.৫০ টাকা ধরে বাংলাদেশি টাকায় তা হয় দুই হাজার ২৬৪ কোটি ৬০ লাখ টাক। কিন্তু ডিপিপিতে প্রকল্প সাহায্যে বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ধরা হয়েছে তিন হাজার ১০০ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এ অসামঞ্জস্যের বিষয়ে পিইসি’র সভায় আলোচনা হয়। সব মিলিয়ে পরিকল্পনা কমিশন এ প্রকল্পের ২০টি বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছে, মতামত দিয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে ব্যয় হ্রাসের কথাও বলা হয়েছে। তবে বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্তের মধ্যে দিয়ে দেশের গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি নতুন রূপ পেলে দেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন তথা অর্থনীতির গতি বেগবান হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।