পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অ্যাকশন ডাইরেক্ট অ্যাকশন। আমরা লোক দেখানো শুদ্ধি অভিযান চালাচ্ছি না। শুদ্ধি অভিযান শুধু আওয়ামী লীগের লোকের বিরুদ্ধে নয়। বিএনপির নেতাকর্মীরা কোথায় বসে কে, কী অপকর্ম করছেন তার সবই খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে। সময়মতো টের পাবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজের ঘর থেকে শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছেন। নিজের লোককে শায়েস্তা করার সৎ সাহস শেখ হাসিনার আছে। নেটের জালে সব অপরাধী ধরা পড়বে। চিহ্নিত চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজ, ভূমিদস্যু, সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ীরা সাবধান হয়ে যান।
তিনি গতকাল (রোববার) চট্টগ্রাম বিভাগীয় ছয়টি সাংগঠনিক জেলার প্রতিনিধি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। নগরীর দি কিং অব চিটাগাং-এ অনুষ্ঠিত প্রতিনিধি সভায় সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনায় চলমান শুদ্ধি অভিযানের প্রেক্ষাপটে অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রতিনিধি সভায় গতকাল ক্যাসিনো জুয়াড়ি, গডফাদার, মাদক ও অস্ত্র কারবারী, হাইব্রিডরাসহ চিহ্নিত এবং অভিযুক্ত দলীয় নেতাকর্মীরা ছিলেন না কেউই। গরহাজির ছিলেন হুইপ পটিয়ার এমপি সামশুল হক চৌধুরী। শুদ্ধি অভিযানের মুখে গা ঢাকা দেওয়া চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-ক্যাডাররা আশপাশেও ছিলেন না। সুশৃঙ্খল পরিবেশে সম্পন্ন হয় প্রতিনিধি সভা। নেতাদের ভিড় চোখে পড়েনি সভামঞ্চে। এমনকি চট্টগ্রামের নেতা-এমপিদের কারও নামেই শ্লোগান আর পাল্টা শ্লোগান কিংবা শোডাউনের মতো তৎপরতা চোখে পড়েনি। অথচ চট্টগ্রামে নিকট অতীতেও দলীয় গ্রুপিংয়ের কারণে ঘটে হরেক অপ্রীতিকর ঘটনা। এবার ছিল ভিন্নমাত্রায় সুনসান সভা।
দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক করে দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ক্ষমতার দাপট দেখাবেন না। ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়। যখন ক্ষমতা থাকবে না তখন কোথায় যাবেন, কোথায় পালাবেন? তিনি বিএনপির সমালোচনা করে বলেন, শুদ্ধি অভিযান নিয়ে ফখরুলরা বড় বড় কথা বলেন। অথচ তারাই পরপর দুর্নীতিতে পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। তাদের কথা ‘ভূতের মুখে রাম রাম’। ক্যাসিনো কেলেঙ্কারীতে তাদের নেতাও ধরা পড়েছে। অথচ সে ব্যাপারে কিছু বলছেন না। শুধু যুবলীগের সমালোচনা করছেন। তাদের সময়ে হাওয়া ভবন খাওয়া ভবনে অনেক অপকর্ম হয়েছে। কী অ্যাকশন তারা নিয়েছে? চট্টগ্রামে বিএনপির নেতা জামাল উদ্দিনকে অপহরণ করেছিল তারাই। একজনকেও শায়েস্তা করেনি। জামাল উদ্দিন হত্যার বিচার তার পরিবার পায়নি।
তারেক রহমানকে উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে মুচলেকা দিয়ে তিনি রাজনীতি ছেড়ে দেবেন বলে বিদেশ চলে গিয়েছিলেন। এখন লন্ডনের টেমস নদীর পাড়ে বসে দেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করছেন, দেশের রাজনীতিকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ফেনীর নুসরাত হত্যা মামলার রায় দেখেছেন। সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতিরও ফাঁসির রায় হয়েছে। নিজ দলের নেতাকর্মীদের আওয়ামী লীগ সরকার ছাড় দেয়নি। আমাদের অনেক এমপিকেও দুদক নোটিশ দিয়েছে। কোনো কোনো সাবেক মন্ত্রীকে আদালতে হাজিরা দিতে হচ্ছে। একজন এমপি দন্ডিত হয়ে জেলে আছেন।
তিনি বলেন, আমরা আদালতে হস্তক্ষেপ করছি না, দুদকও স্বাধীনভাবে কাজ করছে। তিনি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, দেশের উন্নয়ন হচ্ছে। মানুষের সঙ্গে ভালো আচরণ করতে হবে। দলে বসন্তের কোকিল, মৌসুমী পাখিদের ভিড়াবেন না। দলের দুঃসময়ে হাজার ভোল্টের বাতি দিয়েও তাদের পাওয়া যাবে না।
বাংলাদেশ শুধু পরমাণু বোমা বানানো ছাড়া আর্থ সামাজিক সকল উন্নয়নে এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, ভারত, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানকে পেছনে ফেলে আজ বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এ কৃতিত্ব শেখ হাসিনার। গত ৪৪ বছরে সবচেয়ে জনপ্রিয়, ক‚টনৈতিক, সাহসী ও দূরদর্শী নেত্রীর নাম শেখ হাসিনা।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, শেখ হাসিনা দলকে শক্তিশালী করেছেন। তিনি দেশে না ফিরলে আমি মোশাররফ হারিয়ে যেতাম। তিনি ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে দু’বেলা খাবার তুলে দিয়ে বিশ্বের মাদার অব হিউম্যানিটি উপাধি পেয়েছেন।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল আলম হানিফ বলেন, ক্যাসিনো নিয়ে আওয়ামী লীগকে নিয়ে বিতর্কের ষড়যন্ত্র চলছে। ক্যাসিনো কেলেঙ্কারিতে বিএনপির অনেকে গ্রেফতার হয়েছেন। অথচ যুবলীগের কথাই শুধু বলা হচ্ছে। ক্যাসিনোর সাথে জড়িতরা যে দলেরই হোক তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আওয়ামী লীগ পরপর তিনবার রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকার কারণে দলে যে সমস্ত অনুপ্রবেশকারী, উইপোকা ও ছারপোকা ঢুকেছে তাদেরকে বের করে দিতে হবে। ২১ বছর যখন রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিলাম না তখন আমাদের উপর যারা অত্যাচার করেছে, পেট্রোল বোমা মারার সাথে যুক্ত ছিল তাদেরকে সংগঠনে দরকার নেই। আগামী সম্মেলনের মাধ্যমে দলকে পরিষ্কার করতে হবে।
চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। শেখ হাসিনা শক্তিশালী হলে দেশ আরও শক্তিশালী হবে। তার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ। তার নেতৃত্বেই বাংলাদেশ সম্মুখপানে এগিয়ে যাবে।
আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়নের উইপোকা দমন করার উদ্যোগ নেয়ায় সারাদেশে নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হয়েছেন। দলের উপ-দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, সৎ, ত্যাগী নেতারা ঐক্যবদ্ধ থাকলে হাইব্রিড অনুপ্রবেশকারীরা কোনো সুযোগ পাবে না। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে এ দেশ স্বাধীন হয়েছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে।
প্রতিনিধি সভায় আরও বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, উত্তর জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি ও সাধারণ সম্পাদক এম এ সালাম, দক্ষিণ জেলার সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান। এছাড়া ছয় সাংগঠনিক জেলার প্রতিনিধিগণ বক্তব্য রাখেন। সভামঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বীর বাহাদুর এমপি, দীপঙ্কর তালুকদার এমপি, আফছারুল আমীন এমপি, এমএ লতিফ এমপি, নজরুল ইসলাম চৌধুরী এমপি প্রমুখ। সভা সঞ্চালনা করেন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।
চট্টগ্রামে ৭ প্রকল্প উদ্বোধন করলেন সেতুমন্ত্রী
চট্টগ্রাম ব্যুরো
চট্টগ্রামে প্রায় ৫২৪ কোটি টাকা ব্যয়ে সাতটি প্রকল্পের কাজ উদ্বোধন করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গতকাল (রোববার) আগ্রাবাদ সড়ক ভবনের সম্মেলন কক্ষে তিনি এসব প্রকল্পের উদ্বোধন করেন।
প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে- প্রায় ৪৫৮ কোটি ব্যয়ে চট্টগ্রাম-রাঙামাটি জাতীয় মহাসড়ক (এন-১০৬) হাটহাজারী থেকে রাউজান পর্যন্ত ৪ লেনের প্রকল্প, এক কোটি টাকা ব্যয়ে ফটিকছড়ি সড়ক উপ-বিভাগ অফিস কাম পরিদর্শন বাংলো নির্মাণ প্রকল্প, শাহ আমানত সেতুর ইলেকট্রনিক্স টোল সিস্টেম ও ওজন স্কেলের কার্যক্রম, ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই আঞ্চলিক মহাসড়কের ৪৪তম কিলোমিটারে ৩১ দশমিক ৮২ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সেতু প্রকল্প, সীতাকুন্ডের বড় দারোগারহাট ওজন স্কেলের নবনির্মিত ৫ম লেনের কার্যক্রম।
এছাড়া প্রায় ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে মইজ্জারটেক-বিএফডিসি-মৎসবন্দর ফেরিঘাট সড়কে ২টি পিসি গার্ডার সেতুর পুনঃনির্মাণসহ এক কিলোমিটার থেকে ৫ কিলোমিটার পর্যন্ত সেতু মজবুতকরণ, স¤প্রসারণ ও নতুন সড়ক নির্মাণ কাজ প্রকল্প এবং প্রায় ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে হাশিমপুর-রেলওয়ে স্টেশন-বাগিচারহাট সড়কের চেইনেজ: ০+০০০ থেকে ১০+০০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত ফ্লেক্সিবল পেভমেন্ট ও রিজিড পেভমেন্ট দ্বারা মান উন্নীতকরণ প্রকল্প উদ্বোধন করেন সেতুমন্ত্রী। #
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।