Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পরিচ্ছন্ন নেতা পাওয়াই মুশকিল শ্রমিক লীগে

ইয়াছিন রানা | প্রকাশের সময় : ২৮ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

শ্রমিক নেতাদের সম্পর্কে সাধারণ মানুষের নেতিবাচক ধারণা দীর্ঘদিনের। শ্রমিক নেতাদের কর্মকান্ডই এর জন্য দায়ী। বিভিন্ন সেক্টরে শ্রমিক নেতাদের চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে শ্রমিক লীগ বা ট্রেড ইউনিয়নে ভাল নেতার দেখা পাওয়াই দায়। তাই চলমান শুদ্ধি অভিযানের মধ্যে শ্রমিক লীগের আসন্ন সম্মেলনে স্বচ্ছ ভাবমূর্তির নেতা বাছাই করাই মুশকিল হয়ে দেখা দিয়েছে আওয়ামী লীগের কাছে।

তবে দীর্ঘদিন পর সম্মেলনের তারিখ ঘোষণায় প্রাণচাঞ্চল্য ফিরেছে আওয়ামী লীগের তিন সহযোগী সংগঠন- আওয়ামী যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগের পাশাপাশি ভ্রাতৃপ্রতিম জাতীয় শ্রমিক লীগই উজ্জীবিত। নতুন কমিটিতে স্থান পেতে বিভিন্ন পর্যায়ে চলছে পদপ্রত্যাশীদের দৌড়ঝাঁপ। তদবির করছেন নীতিনির্ধারকদের কাছে। কর্মীরাও যোগাযোগ করছেন পদপ্রত্যাশীদের কাছে। সব মিলিয়ে আনন্দময় পরিবেশ বিরাজ করছে রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর অফিসগুলোতে। এরই মধ্যে পোষ্টারও বিতরণ করছে শ্রমিক লীগ।

জানা যায়, শ্রমিক লীগে স্বচ্ছ ভাবমূর্তির দক্ষ নেতৃত্ব চাচ্ছে আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড। আগামী কমিটি থেকে বাদ পড়তে যাচ্ছেন টেন্ডার ও চাঁদাবাজি এবং ক্যাসিনো পরিচালনার সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িতরা। পাশাপাশি অন্য দল থেকে এসে সংশ্লিষ্টদের ‘ম্যানেজ’ করে যারা বড় পদ বাগিয়ে নিয়েছেন- এমন বিতর্কিত নেতাদেরও জায়গা হবে না নতুন কমিটিতে।

২০১২ সালের ১৯ জুলাই ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন জাতীয় শ্রমিক লীগের সম্মেলন হয়। দুই বছর মেয়াদি এই কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে ৭ বছরের বেশি সময় আগে। আগামী ৯ নভেম্বর জাতীয় শ্রমিক লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলন সামনে রেখে মাঠে নেমেছেন পদপ্রত্যাশীরা। সমালোচনার মধ্যেও শ্রমিক লীগের শীর্ষ পদে আলোচনায় রয়েছেন শ্রমিক লীগের বর্তমান কমিটির কার্যকরী সভাপতি ফজলুল হক মন্টু, সহ-সভাপতি হাবিবুর রহমান আকন্দ, সহ-সভাপতি মো. জহিরুল ইসলাম চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মো. সিরাজুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর দক্ষিন শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবীব মোল্লা। বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মো. সিরাজুল ইসলাম, কোনো পদপ্রার্থী না হলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোন দায়িত্ব দিলে তিনি তা পালন করতে প্রস্তুত।

কেন্দ্রীয় শ্রমিক লীগের সহ-সভাপতি ও বিদ্যুৎ শ্রমিক লীগের সভাপতি জহিরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, খেলোয়াড় হিসেবে আমার সরকারি চাকুরী শুরু। এরপর ধীরে ধীরে শ্রমিক সংগঠনে যুক্ত হয়েছি। শ্রমিক সংগঠনগুলো নিয়ে জনসাধারণের মধ্যে নেতিবাচক ধারণা রয়েছে। আমরা চাই জাতীয় শ্রমিক লীগ নেতিবাচক ধারণার বাইরে সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হোক। এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একজন যোগ্য নেতৃত্বকে দায়িত্ দেবেন বলে আশা করি।

সহ-সভাপতি হাবিবুর রহমান আকন্দ। তিনি দীর্ঘদিন ঢাকা মহানগর শ্রমিক লীগ ও রেলওয়ে শ্রমিক লীগের শীর্ষ পদে নেতৃত্ব দিয়েছেন। এছাড়া ১/১১ এর সময় শেখ হাসিনার কারা মুক্তি আন্দোলনে সরাসরি অংশগ্রহণসহ গোপনীয় মিটিং এবং শ্রমিক প্রতিনিধি হিসেবে সমস্ত শ্রমিক সংগঠনের নেতা হিসেবে বিবৃতি ও সংগঠিত করনে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বলেন, আমি দীর্ঘদিন শ্রমিক লীগের সঙ্গে আছি। দীর্ঘদিন মহানগরের নেতৃত্ব দিয়েছি। কেন্দ্রীয় কমিটির সম্মেলন সামনে। আমি চাই অভিজ্ঞ ও যোগ্যরা নেতৃত্বে আসুক।

অন্যদিকে সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির বলেন, আমি ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারীর দায়িত্ব পালন করেছি। আমরা একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমাদের নেত্রী যেটা করে দিবেন আমরা সেটা মেনে নেব। এছাড়া সাধারণ সম্পাদক পদের দৌড়ে আছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিন শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবীব মোল্লা। তিনি বলেন, ওয়ার্ড পর্যায় থেকে শ্রমিক লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত আমি। তৎকারীন ২৬ নং ওয়ার্ড বর্তমান ২০ নং ওয়ার্ডের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং পল্টন থানার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতির দায়িত্ব পালন করি। এখন মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছি। নেত্রীর কর্মী হিসেবে আছি। তিনি যে পদে দেবেন সেখানেই কাজ করতে চাই। এছাড়া শ্রমিক লীগের বর্তমান মহানগর কমিটির সিরাজুল ইসলাম এবার সভাপতি পদে আলোচনায় রয়েছেন।

১৯৬৯ সালের ১২ অক্টোবর প্রতিষ্ঠা লাভ করে জাতীয় শ্রমিক লীগ। ২০১২ সালের সর্বশেষ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পান নারায়ণগঞ্জের শ্রমিক নেতা শুক্কুর মাহমুদ ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আছেন জনতা ব্যাংক ট্রেড ইউনিয়নের নেতা সিরাজুল ইসলাম। এই সময়ে ৪৫টি সাংগঠনিক জেলার কমিটি করা হয়েছে। ###



 

Show all comments
  • দীনমজুর কহে ২৭ অক্টোবর, ২০১৯, ৮:০৩ এএম says : 0
    শিল্প ও শ্রমিক প্রেমি শ্রমিক নেতা পাওয়া সত্যি বড় অভাব ।ক জন আছে আহসান উল্লাহ মাষ্টার।ট্রেড ইউনিয়ান /ফেডাড়েশন যারা নেতৃত্ব দেয়, তাদের মধ্যে অধিকাংশ ই নিতিহীন নেতা।দীর্ঘ ৩০ বছরের শ্রমিক আন্দলনের অভিগ্যতা থেকে বলছি ।বিশেষ করে ট্রেড ইউনিয়ানের নেতারা আন্দলন ও বিকিয়ে দিয়ে থাকে।এক সময় আন্দলনে তোড়ে বিমান আকাশে উড়েঁনাই খেয়াঘাটের মাঝি খেয়াদেয় নাই ।।আজ........।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ