Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মসজিদের দানবাক্সে দেড় কোটি টাকা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৭ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:১৩ এএম

মসজিদের দানবক্স নয়, এ যেন ব্যাংকের ভোল্ট। কিশোরগঞ্জের এক মসজিদের দানবক্সে দেড় কোটির বেশি টাকা জমা পড়েছে। তিন মাসে দানবক্স এই টাকা জমা পড়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। মাদরাসার ছাত্র, শিক্ষক, মসজিদের মোতয়াল্লি স্থানীয় রুপালী ব্যাংক কর্মকর্তারা মিলে ৬০ জন মিলে সেই টাকা গোনেন। এই খবর প্রচার হওয়ায় আশপাশের লোকজন ছুটে আসেন এই বিপুল পরিমান টাকার গণনা দেখতে।
জানা যায়, কিশোরগঞ্জ শহরের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের পাঁচটি লোহার তৈরি দানবাক্স রয়েছে। প্রতি তিন মাস পরপর লোহার তৈরি দানবাক্সগুলো খোলা হয়। কিন্তু এবার দানবাক্স খুলে সবার চক্ষু চড়কগাছ! এবার মসজিদের দানবাক্সে মিলেছে নগদ এক কোটি ৫০ লাখ ৮৪ হাজার ৫৯৮ টাকা ও একই সঙ্গে পাওয়া গেছে স্বর্ণ ও রুপার অলঙ্কারসহ বিদেশি মুদ্রা। গতকাল শনিবার টাকার গণনা শেষে এই পরিমাণ টাকার হিসাব পাওয়া যায়।
বিপুল পরিমাণ দানের এই নগদ টাকা ছাড়াও এবার বিপুল পরিমান বিভিন্ন বৈদেশিক মুদ্রা ও দান হিসেবে বেশ কিছু স্বর্ণালঙ্কার পাওয়া গেছে। বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কারও অন্যবারের চেয়ে পরিমাণে বেশি পাওয়া গেছে। এর আগে ২০১৮ সালের ৬ জানুয়ারি দানবাক্সগুলো থেকে সর্বোচ্চ এক কোটি ২৭ লাখ ৩৬ হাজার ৪৭১ টাকা পাওয়া গিয়েছিল। সাধারণত তিন মাস পর পর পাগলা মসজিদের দানবাক্স খোলা হয়। সর্বশেষ গত ১৩ জুলাই এক কোটি ১৪ লাখ ৭৪ হাজার ৪৫০ টাকা পাওয়া গিয়েছিল।
মসজিদ কমিটি সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকালে জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণের উপস্থিতিতে মসজিদের আটটি দান দানবাক্স খোলা হয়। দানবাক্স থেকে টাকা বের করে প্রথমে বস্তায় ভরা হয়। এরপর শুরু হয় দিনব্যাপী টাকা গণনা। টাকা গণনায় মসজিদ মাদরাসার ৬০ জন ছাত্রশিক্ষক ছাড়াও রূপালী ব্যাংকের কর্মকর্তাগণ অংশ নেন।
কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফার তত্ত¡াবধানে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মীর মো. আল কামাহ তমাল, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহামুদুল হাসান, পাগলা মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মুক্তিযোদ্ধা মো. শওকত উদ্দীন ভূঞা, রূপালী ব্যংকের এজিএম অনুফ কুমার ভদ্র প্রমুখ টাকা গণনার কাজ তদারকি করেন। এছাড়া অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আব্দুল্লাহ আল মাসউদ, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মো. আসাদ উল্লাহ টাকা গণনার কাজ পর্যবেক্ষণ করেন।
এ সময় দানবাক্স খোলা কমিটির সদস্যরা ছাড়াও প্রশাসনের কর্মকর্তা, মসজিদ পরিচালনা কমিটির সদস্যবৃন্দ সার্বক্ষণিক দায়িত্বরত কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ উপস্থিত ছিলেন। টাকা গণনার এই এলাহি কান্ড নিজ চোখে অবলোকন করতে শহরের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষ মসজিদে ছুটে আসেন। প্রতিদিনই অসংখ্য মানুষ মসজিদটির দানবাক্সে নগদ টাকা-পয়সা ছাড়াও স্বর্ণালঙ্কার, গবাদিপশু, হাঁস-মুরগিসহ বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র দান করেন। কথিত আছে খাস নিয়তে এই মসজিদে দান করলে মনোবাসনা পূর্ণ হয়।
সেজন্য দূর-দূরান্ত থেকেও অসংখ্য মানুষ এখানে দান করে থাকেন। টাকা গণনা কার্যক্রম তদারকির দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ গোলাম মেস্তাফা সাংবাদিকদের জানান, পাগলা মসজিদের দান সিন্দুক খুলে এবার এক কোটি ৫০ লাখ ৮৪ হাজার ৫৯৮ টাকা পাওয়া গেছে। টাকাগুলো রূপালী ব্যাংকে জমা করা হয়েছে। এছাড়া ডলার, রিয়ালসহ বিভিন্ন দেশের মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কার পাগলা মসজিদের দানবাক্সে জমা পড়েছে।
জানা যায়, কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের পশ্চিম প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে আনুমানিক চার একর জায়গায় ‘পাগলা মসজিদ ইসলামি কমপ্লেক্স’ অবস্থিত। প্রায় ২৫০ বছর আগে মসজিদটি প্রতিষ্ঠিত হয় বলে ইতিহাস সূত্রে জানা যায়। এই মসজিদের প্রতিষ্ঠা নিয়ে অনেক কাহিনী প্রচলিত আছে, যা ভক্ত ও মুসল্লিদের আকর্ষণ করে। সাধারণ মানুষের মধ্যে বিশ্বাস রয়েছে পগলা মসজিদে মানত করলে মনোবাসনা পূর্ণ হয়। আর এ কারণেই দূর-দূরান্তের মানুষও এখানে মানত করতে আসেন। দানবাক্সে পাওয়া টাকা সাধারণত কমিটি, জনপ্রতিনিধি ও দায়িত্বশীলদের পরামর্শে বিভিন্ন মসজিদে দান-খয়রাত, মাদরাসার উন্নয়ন ও জনকল্যাণমূলক কাজে ব্যয় হয়ে থাকে। ##



 

Show all comments
  • হারুন ২৭ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:২৪ এএম says : 0
    এ পবিত্র মসজিদের কমিটিতে যেন ক্যাসিনোর কোন খেলোয়াড় জডিত না থাকে।
    Total Reply(0) Reply
  • সুন্দরের ভূস্বর্গ বাংলাদেশ ২৭ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:৫৬ এএম says : 0
    আলহামদুলিল্লাহ।
    Total Reply(0) Reply
  • Noble Karim ২৭ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:৫৭ এএম says : 0
    আল্লাহ ঘড়ে দান করবে এমনটাই তো প্রত্যাশিত তাই নয় কি।
    Total Reply(0) Reply
  • Mustafizur Rahman ২৭ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:৫৭ এএম says : 0
    মানুষ আল্লাহর ঘর মসজিদ ও মাদ্রাসা এভাবেই দান করোক।
    Total Reply(0) Reply
  • Abdus Samad ২৭ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:৫৭ এএম says : 0
    এই টাকা সমাজ সেবায়, মানুষের বিপদে খরচ করা হোক। স্বাস্থ্য, শিক্ষায় ব্যয় করা হোক।
    Total Reply(0) Reply
  • Jalal Uddin Ahmed ২৭ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:৫৮ এএম says : 0
    Peoples are wide mindset for donations to Masjid
    Total Reply(0) Reply
  • নূরুল আমীন রাসেল আহাম্মেদ ২৭ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:৫৮ এএম says : 0
    মসজিদ নির্মান কত বছর হয়েছে,,আর এই টাকা কতদিন যাবত দরে হচ্চে,তিন মাস পর পর যদি এককোটি টাকা উপরে জমা পড়ে,তাহলে ১২মাসে ৪/৫কোটি টাকা জমা হয়,,যদি মসজিদটি ২০বছর হয়,তাহলে এই টাকার পরিমাণ দাড়ায় ১০০কোটি টাকা,,এই টাকা আছে জমা কি,,আমি মনে করি সারা দেশে ইসলাম প্রচার ও ভিন্ন এলাকায় অবহেলিত মসজিদ মাদ্রাসা উনুদান দিয়ে টাকা গুলি কাজে লাগানো হক।
    Total Reply(0) Reply
  • Hazi Hasmot ২৭ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:৫৯ এএম says : 0
    মসজিদ,আল্লাহর ঘর।মসজিদের দানের টাকা, শুধু মাত্র মসজিদের উন্নয়নের খাতে ব্যয় করতে হয়।।কিশোরগঞ্জ পাগলা মসজিদ, সবাই জানে।দান, মান্নত করতে আসে দূর দুর্দান্ত থেকে।।যেহেতু অনেক টাকা উঠে, কমিটি ও মনে হয় শক্তিশালী,,
    Total Reply(0) Reply
  • Md Mizan Faqir ২৭ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:৫৯ এএম says : 0
    আমাদের কিশোরগঞ্জের এই মসজিদের প্রতি, সকল মানুষের অন্য রকমের বিশ্বাস তাই সবাই এখানে টাকা দান করেন। অনেক বছর যাবৎ এই ভাবেই দান বাক্স ভর্তি হয়ে আসছে। আলহামদুলিল্লাহ
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Kowaj Ali khan ২৭ অক্টোবর, ২০১৯, ১:২০ এএম says : 1
    মসজিদের টাকার জাকাত যেন দেওয়া হয়। ইনশাআল্লাহ। আমার ও একান্ত ইচ্ছা পাগলা মসজিদের মতো একটি মসজিদ করার। স্থান ও নিরবাচিত করিয়া রাখিয়াছি। আশা আল্লাহতা'আলা পুরণ করিতেন। আরো কত কিচু আশা আছে। ইনশাআল্লাহ।
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Kowaj Ali khan ২৭ অক্টোবর, ২০১৯, ৪:৪১ এএম says : 0
    মসজিদের টাকার জাকাত যেন দেওয়া হয়। ইনশাআল্লাহ। আমার ও একান্ত ইচ্ছা পাগলা মসজিদের মতো একটি মসজিদ করার। স্থান ও নিরবাচিত করিয়া রাখিয়াছি। আশা আল্লাহ তাআলা পুরণ করিবেন। আরো কত কিচু আশা আছে। ইনশাআল্লাহ।
    Total Reply(0) Reply
  • কাজী মুছা ২৭ অক্টোবর, ২০১৯, ৬:৩৭ এএম says : 0
    । আল্লাহর ঘর আল্লাহই হেফাজত করিবেন আল্লাহ মহান
    Total Reply(0) Reply
  • Nannu chowhan ২৭ অক্টোবর, ২০১৯, ৯:৫৭ এএম says : 0
    Maashallah, Alhamdulillah, Bangladeshe ekhono onek dhormo pran manush asen jara naki ovab onotoner moddheo eai Allah'r ghore mukto hoste dan koren,"jajakallahu khair"
    Total Reply(0) Reply
  • মোঃ আনোয়ার আলী ২৭ অক্টোবর, ২০১৯, ১০:১৩ এএম says : 0
    আল হামদূলিল্লাহ! মানূষের মনের বাসনা যেন আল্লাহ তায়ালা কবূল করেন।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ