পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দলের (আওয়ামী লীগ) ভেতর ও দলের বাইরে যারা অপকর্মে লিপ্ত তারা সকলেই নজরদারিতে রয়েছেন জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, চলমান শুদ্ধি অভিযান শুধু ঢাকা নয়, তৃর্ণমূলেও চলবে। সুনামগঞ্জ থেকে সুন্দরবন, কুতুবদিয়া থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত অভিযান শুরু হচ্ছে। যারা অপরাধ করবেন (তাদের) কোনো ছাড় নেই। শেখ হাসিনাপ প্রমাণ করেছেন, অপরাধ করলে পার পাওয়া যায় না। গতকাল ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে তিনি এই মন্তব্য করেন। তিনি আরো বলেন, অভিযোগ অনেকের বিরুদ্ধ থাকতে পারে, কিন্তু তথ্য প্রমাণ পেলেই ব্যবস্থা। দুদকের মামলায় ইতোমধ্যে কক্সবাজার অঞ্চলের একজন দলীয় এমপির দন্ড হয়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনাই দেশের একমাত্র শাসক। তিনি ইতি মধ্যে প্রমাণ করেছেন অপরাধ করলে অপকর্ম করলে নিজ দলের নেতাকর্মীদের ছাড় দেন না। তিনি সারা দেশে শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছেন। নিজের ঘরের নেতাকর্মীরা যারা অপকর্ম করেছে, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজী, টেন্ডারবাজী,মাদক ব্যবসায়ী ও দূর্নীতির সাথে.জড়িত তাদের বিরুদ্ধে শেখা হাসিনার এ্যাকশান শুরু হয়ে গেছে। শুধু আওয়ামীলীগে নয়, দলের বাহিরেও যারা দুর্নীতির সাথে জড়িত আছে তারা রেহাই পাবেনা। তিনি বলেন, অতিতে এই ফেনীতে কত ঘটনা ঘটেছে। তখন বেগম খালেদা জিয়া ক্ষমতায় ছিলেন। এই এলাকায় যে গড়ফাদাররা নিপীড়ন, অত্যাচার দুর্নীতি করেছেন এবং দু:শাসনের সহযোগি হয়েছেন তখন এসবের কোন বিচার হয়নি। খালেদা জিয়া বাংলাদেশের একাধিক বারের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। এই ফেনীতে তিনি তার বাড়ি দাবি করেন। কিন্তু আমি ফেনীবাসীর বিবেকের কাছে প্রশ্ন রাখতে চাই, ফেনীতে দেখানোর মতো কি এমন দৃশ্যমান কাজ করেছেন বিএনপি যে মানুষকে দেখাতে পারবে। তারা শুধু বড় বড় কথা বলতে পারে। মন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের আমলে দৃশ্যমান উন্নয়ন ফেনীবাসী দেখেছেন। এই ফেনীতে শতভাগ বিদ্যুৎ দিয়েছে, দেশের প্রথম ৬ লেনের ফ্লাইওভার নির্মাণ,রেলওয়ে ওভারপাস করেছে, রাস্তাঘাট ও পুল কালভার্ট, সড়ক বিস্তৃত হয়েছে। আগামী দিনগুলোতে আমাদের আরো বৃহৎ উন্নয়ন পরিকল্পনা রয়েছে। ফেনী শহরের গুদাম কোয়ার্টার এলাকায় একটি রেলওয়ে ওভারপাস নির্মাণ করা, ফেনী বিলোনিয়া সড়ক প্রশস্তকরণ, ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের লালপোলে একটি ফ্লাইওভার বা আন্ডারপাস করার প্রক্রিয়া হাতে নেয়া হয়েছে। ফেনী আলোকদিয়া ভালুকিয়া ও ছাগলনাইয়া সড়ক প্রসস্ত করণের কাজ করা হবে। মহুরীসেতু ও ফাযিলের ঘাট সেতু নির্মাণ করা হবে। এ মাসের শেষে প্রকল্পটি একনেকে পাস হওয়ার কথা রয়েছে।
ফেনী সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে ওভায়দুল কাদের বলেন, আপনারা দলমত নির্বিশেষে সরকারের উন্নয়নের পক্ষে থাকুন। শেখ হাসিনার শুদ্ধি অভিযানের পক্ষে থাকুন। ইনশাআল্লাহ ফেনী বাসীর উন্নযনের ঘাটতি থাকবে না। মন্ত্রী সম্মেলনে উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ক্ষমতা চিরকাল থাকে না। আজ ক্ষমতা আছে কাল নেই। শুধু উন্নয়ন করে মানুষের মন জয় করা যাবে না। জনগণের সঙ্গে ভালো আচরণ করে মানুষের মন জয় করতে হবে। তিনি দুর্যোগ ও ঝড় বৃষ্টির মধ্যে জেলা আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন আয়োজক কমিটি এবং আগত নেতাকর্মী ও সমর্থকদেরকে ধন্যবাদ জানান।
পরে ওয়াবদুল কাদের ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের নতুন কমিটির সভাপতি সম্পাদকের নাম ঘোষণা করেন। এড. আক্রামুজ্জামানকে সভাপতি ও নিজাম উদ্দিন হাজারীকে সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত ঘোষণা করেন।
ফেনী জেলা আওয়াম লীগ সভাপতি ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুর রহমান বিকমের সভাপতিত্বে ও সদর উপজেলা আ.লীগ সাধারণ সম্পাদক শুসেন চন্দ্র শীলের সঞ্চালনায় সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক ও পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক প্রটোকল অফিসার আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম, চট্রগ্রাম সিটি মেয়র আ জ ম নাছির, অ্যাডভোকেট প্রিয়রঞ্জন দত্ত, অ্যাডভোকেট হাফেজ আহাম্মদ, ফেনী পৌরসভার মেয়র হাজী আলাউদ্দিন প্রমূখ।
ফেনী সরকারি কলেজ মাঠে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন সম্পন্ন হয়। এ সম্মেলনে জেলার ৬টি উপজেলার হাজার হাজার নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন এ বর্ণাঢ্য আয়োজনে শুধু দলের নেতাকর্মী নয় দলমত নির্বিশেষে ব্যাপক লোকের সমাগম হয়েছিল। সম্মেলনের নির্ধারিত সময় ছিল বেলা ২টা। কিন্তু দুপুর ১২টা থেকেই সম্মেলন স্থল কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়।
এদিকে সকাল থেকে শহরের ট্রাংক রোডের সাথে অন্যান্য অংশের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এসময় নেতাকর্মীদের ভিড়ে ফেনী শহরের বিভিন্ন সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে দুর দুরান্ত থেকে আসা মানুষজন ও রোগিরা সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়েন। উৎসব মুখর সম্মেলনে হাজার হাজার নেতাকর্মী নানা রকমের ব্যানার, পোস্টার ও ফেস্টুন নিয়ে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন। নেতাকর্মীদের শ্লোগানে, শ্লোগানে ফেনী শহর প্রকম্পিত হয়।
অতীতে ফেনীতে এত ব্যয়বহুল আর সুন্দর আয়োজনে আওয়ামী লীগের সম্মেলন হতে দেখা যায়নি। ফলে দুর দুরান্ত থেকে মানুষ সৌন্দর্য দেখতে সম্মেলনস্থলে আসেন। পদ্মা সেতুর আদলে তৈরি করা হয়েছে সম্মেলনের মঞ্চ। এদিকে সম্মেলনের আগের রাতে বিপুল পরিমাণ আতশবাজিতে কেঁপে উঠে পুরো শহর।
এসময় সম্মেলনে স্থলের সৌন্দর্য দেখতে ফেনী সরকারি কলেজ মাঠে জড়ো কয়েক দর্শনার্থীরা। ফেনী-২ আসনের এমপি ও জেলা আ.লীগ সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দীন হাজারীর কঠোর নির্দেশনার কারণে সম্মেলনস্থলে নেতাকর্মীরা সর্বসাধারণের নিরাপত্তায় ভূমিকা রাখেন। ফলে আগের দিন গভীর রাত পর্যন্ত ফেনীর মানুষ রঙ বে-রঙের আলোকজ্জল সম্মেলনস্থলের সৌন্দর্য উপভোগ করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।