Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পদ্মার ভাঙনে বন্ধ দৌলতদিয়ার আরেকটি ফেরিঘাট

ব্যাহত ফেরি চলাচল, বাড়ছে গাড়ির সারি

রাজবাড়ী জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৭ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ার পদ্মা নদী তীরবর্তী এলাকায় আবারো ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দৌলতদিয়ার ৩ নম্বর ফেরি ঘাটসহ ওই এলাকার অন্তত ২শ’ ফুট এলাকা নদীতে বিলীন হওয়ায় ঘাটটি বন্ধ রয়েছে। এর আগে ভাঙনের কারণে ১ ও ২ নম্বর ফেরিঘাট বন্ধ হয়ে যায়।
বর্তমানে ছয়টির মধ্যে মাত্র তিনটি ঘাট চালু রয়েছে। ঘাট সংকটের কারণে অলসভাবে বসিয়ে রাখা হয়েছে ৪টি ফেরি। এতে যানবাহন পারাপার বন্ধ থাকায় উভয় ঘাটে গাড়ির চাপ পড়েছে।

বিআইডবিøউটিসি’র দৌলতদিয়া ঘাট অফিস জানায়, পদ্মা নদীতে পানি কমে যাওয়ায় এবং গত বুধবার বিকেল থেকে হালকা ও মাঝারী বৃষ্টিপাতের ফলে নদী উত্তাল হয়ে উঠে। ভাঙতে শুরু করে নদীর পাড় ও তীরবর্তী এলাকা। বৃহস্পতিবার ৩ নম্বর ঘাটের পল্টুনের নীচের অংশসহ ওই এলাকার অন্তত ২শ’ ফুট হঠাৎ করে দেবে যায়।
ইতোঃপূর্বে পানি উন্নয়ন বোর্ড ওই এলাকায় বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেললেও তা নিমিষেই ৩০-৪০ ফুট গভীর পানিতে তলিয়ে যায়। এতে বন্ধ হয়ে যায় ফেরিঘাটটি। বর্তমানে ৪, ৫ ও ৬নম্বর ঘাট দিয়ে ফেরিতে যানবাহন ওঠানামা করছে। এরমধ্যে ৬ নম্বর ঘাটটি শুধুমাত্র ছোট ফেরির জন্য হওয়ায় সেখানে কোন বড় ফেরি ভিড়তে পারছে না। এর আগে ভাঙন তীব্র হওয়ায় ৪ অক্টোবর ১নম্বর এবং পরদিন ৫ অক্টোবর ২নম্বর ঘাটের সংযোগ সড়ক বিলীন হওয়ায় ঘাট দুটি বন্ধ হয়ে যায়। রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ড সেখানে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেললেও এখন পর্যন্ত ওই দুটি ঘাট চালু করা সম্ভব হয়নি।

গতকাল শনিবার দৌলতদিয়ায় গিয়ে দেখা যায় ছয়টি ঘাটের মধ্যে শুধুমাত্র ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ঘাট চালু রয়েছে। ১, ২ এবং ৩নম্বর ঘাট বন্ধ রয়েছে। ৩ নম্বর ঘাট চালু করতে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডবিøউটিএ) বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলছে।
এ সময় বিআইডবিøউটিএ’র আরিচার নির্বাহী প্রকৌশলী নিজামউদ্দিন পাটোয়ারী জানান, বৃহস্পতিবার রাত থেকেই আমরা ঘাটটি দ্রুত সচল করতে পুনরায় জিও ব্যাগ ফেলে পল্টুন স্থাপনের চেষ্টা চালাচ্ছি। নদীর তীরবর্তী এলাকা অনেক গভীর ও খাড়া হওয়ায় কাজটি করতে অনেক বেগ পেতে হচ্ছে। পল্টুনের নীচের অংশ সম্পন্ন করার পর পাশের ভাঙন এলাকায় জিও ব্যাগ ফালানো শুরু করা হবে। শনিবার বিকেল নাগাদ ৩২শ’ ব্যাগ বালু ফেলা হয়েছে।

এদিকে দৌলতদিয়ায় মাত্র ৩টি ফেরিঘাট চালু থাকায় ঘাট সঙ্কটে শুক্রবার হতে বসিয়ে রাখা হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ এ রুটের ৪টি ফেরি। এগুলো হচ্ছে রোরো ফেরি বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমীন, কেরামত আলী, শাহ জালাল ও ইউটিলিটি ফেরি বনলতা। শনিবার সন্ধ্যা নাগাদ ৭টি ইউটিলিটি (বড়) ও ৬টি ছোট মিলিয়ে চলছিল মাত্র ১৩টি ফেরি।
ফেরি কমে যাওয়ায় গাড়ি পার হতে না পেরে বেলা বাড়ার সাথে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে ঢাকাগামী গাড়ির দীর্ঘ সারির সৃষ্টি হয়েছে। শনিবার ৫টা নাগাদ দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় প্রায় ৩ কি.মি. জুড়ে ৩ শতাধিক যানবাহন আটকে থাকতে দেখা যায়। এদের মধ্যে যাত্রীবাহী বাসের সংখ্যাই বেশি। পাটুরিয়া ঘাটেও একইভাবে লম্বা লাইনের সৃষ্টি হয়েছে। পরিস্থিতি দেখতে শুক্রবার বিকেলে দৌলতদিয়া ঘাট পরিদর্শনে আসেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও বিআইডবিøউটিএ’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. গোলাম মোস্তফা, যুগ্ম সচিব ও বিআইডবিøউটিসি’র জিএম (বাণিজ্য) মো. আশিকুজ্জামানসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

বিআইডবিøউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয়ের সহকারী ব্যবস্থাপক রুহুল আমিন বলেন, পদ্মায় দ্রুত পানি কমে পাড় খাড়া হয়ে যাওয়ায় এবং দুই দিনের বৃষ্টির সাথে বাতাস থাকায় নদীর পাড় ভাঙতে শুরু করে। যে কারণে নদী তীরবর্তী ঘাট এলাকার বেশকিছু অংশ নদীতে বিলীন হয়ে যায়। ভাঙনের কারণে ৩নম্বর ঘাট বৃহম্পতিবার সন্ধ্যায় বিলীন হয়ে গেছে। এর আগে ১ ও ২নং ঘাট বিলীন হওয়ায় চালু আছে মাত্র ৩টি ঘাট। ঘাট সমস্যায় বসিয়ে রাখা হয়েছে ৪টি ফেরি। এ সকল কারণে মহাসড়কে শতশত যানবাহন নদী পার হতে না পেরে আটকা পড়ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ