পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
যুক্তরাজ্যের প্রিন্স অফ ওয়েলস প্রতিষ্ঠিত দক্ষিণ এশিয়ার শীর্ষস্থানীয় প্রবাসী উন্নয়ন সংস্থা ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্ট আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করেছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানী ঢাকার ওয়েস্টিন হোটেলের গ্র্যান্ড বল রুমে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এর উদ্বোধন করা হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী প্রধান অতিথি ও ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অতিথিদের উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান এমপি, ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্ট বাংলাদেশের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ও বাংলাদেশের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ফারুক সোবহান, ট্রাস্টের প্রধান নির্বাহী রিচার্ড হকস, সোসাইটি ফর প্রমোশন অব বাংলাদেশ আর্টের গভর্নর এলথাম কবির এবং বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের দরিদ্র মানুষকে সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত বেসরকারি সংস্থা ফ্রেন্ডশিপের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক রুনা খান। ব্রিটিশ এশীয়ান ট্রাস্টের বাংলাদেশ উপদেষ্টা কাউন্সিলের সভাপতি এবং বেক্সিমকো গ্রুপের পরিচালনা পরিষদের উপদেষ্টা শায়ান এফ রহমান অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন।
ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্ট দক্ষিণ এশিয়ায় দারিদ্র মোকাবেলায় কাজ করছে। প্রাথমিকভাবে শিক্ষা, জীবিকা, মানবপাচার ও মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এই ট্রাস্ট। ভারতের টেলিকম জায়ান্ট বিটির সাথে ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্ট যৌথভাবে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে পাঁচ লাখ তরুণ-তরুণীদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন এবং দক্ষতা বৃদ্ধিতে কাজ করছে। এছাড়াও পাকিস্তানের মানুষের মানসম্পন্ন মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা প্রদানে সে দেশের ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে কাজ করছে সংস্থাটি। দেশটির সুবিধাবঞ্চিত এলাকায় আগামী ২০২১ সালের মধ্যে পাঁচ লাখ তরুণ বিশেষ করে কিশোরীদের সেবা প্রদানের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে তারা।
সংস্থাটি সামাজিক কাজে অর্থায়নের জন্যও সুপরিচিত। বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করার আগেই সংস্থাটি সামাজিক অর্থায়ন সম্পর্কে উন্নয়ন গোষ্ঠীকে উদ্বুদ্ধ করতে একটি কর্মশালা আয়োজন করেছে। এটি গত বছর ভারতের শিক্ষার ফলাফল উন্নয়নের লক্ষ্যে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে নেওয়া ১১ মিলিয়ন ডলারের ডেভলপমেন্ট ইমপ্যাক্ট বন্ডের (ডিআইবি) প্রকল্পকে অনুসরণ করে আয়োজন করা হয়। অর্থনীতিতে কর্মীদের দক্ষতা বাড়াতে আগামী বছর বাংলাদেশে সামাজিক অর্থায়নে আরো বড় একটি ডিআইবি চালু করবে ট্রাস্ট।
বাংলাদেশ বিশ্বের সর্বাধিক ঘনবসতিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে একটি। টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি থাকা সত্তে¡ও এখানে প্রায় ২৪ মিলিয়ন বা আড়াই কোটি মানুষ দারিদ্রতার মধ্যে জীবনযাপন করছে এবং ক্রমবর্ধমান যুব সমাজের জন্য পর্যাপ্ত কর্মসংস্থান তৈরি করতে অর্থনীতিতে বিশাল চাপ বাড়ছে। এছাড়া মায়ানমার থেকে পালিয়ে আসা প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
অনুষ্ঠানে ট্রাস্টের বাংলাদেশ উপদেষ্টা কাউন্সিলের সভাপতি শায়ান এফ রহমান বলেন, বাংলাদেশে ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্ট চালু করা গৌরবজনক। এটি বাংলাদেশের সামাজিক উন্নয়ন এবং অব্যাহত সাফল্যের জন্য বিনিয়োগে যুক্তরাজ্যসহ সারা বিশ্বে থাকা প্রবাসী বাংলাদেশীদের আগ্রহী করবে।
তিনি বলেন, ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্ট এই অঞ্চলজুড়ে উন্নয়নের অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে এবং এর ধারায় বাংলাদেশও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়নের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এবং স্থায়ী প্রভাব ফেলতে আমরা আসন্ন বছরগুলোতে বিভিন্ন এনজিও, সমাজসেবী ও বিনিয়োগকারীদের সাথে কাজ করার অপেক্ষায় রয়েছি।
বাংলাদেশে যুক্তরাজ্য সরকারের ডিপার্টমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভলপমেন্টের বিভাগীয় প্রধান (ডিএফআইডি) জুডিথ হারবার্টসন বলেন, আমরা বাংলাদেশে ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্টের সূচনা দেখে আনন্দিত, দশ বছরেরও বেশি সময় ধরে এটি দক্ষিণ এশিয়া জুড়ে দুর্দান্তভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ যুক্তরাজ্যের জন্য একটি অন্যতম ব্যবসায়িক অংশীদার। আমরা দেশটির অর্থনৈতিক বিকাশ এবং টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়ার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশী প্রবাসীদের নিয়ে যৌথভাবে কাজ করবে ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্ট।
ট্রাস্টের প্রধান নির্বাহী রিচার্ড হকস বলেন, বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করাটা আনন্দের। বাংলাদেশ সা¤প্রতিক বছরগুলোতে সৃজনশীল উদ্যোগ এবং জনগণের কঠোর পরিশ্রমের কারণে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। আমরা বাংলাদেশের দক্ষ উদ্যোক্তাদের সাথে কাজ করবো। এতে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে গুুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের পাশাপাশি প্রবাসে আমাদের সমর্থকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে।
#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।