Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

‘দুদককে বিবাদী করা যথার্থ নয়’

ঋণ পুনঃতফসিলের সার্কুলার রিটের দশম দিনের শুনানি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৫ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:১৪ এএম

খেলাপি ঋণের ২ শতাংশ পরিশোধ করে ১০ বছরের জন্য পুনঃতফসিলের সুবিধা প্রদান সংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলার চ্যালেঞ্জ করে দায়েরকৃত রিট শুনানির পরবর্তী তারিখ রোববার। গতকাল বৃহস্পতিবার বিচারপতি জেবিএম হাসান এবং বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের ডিভিশন বেঞ্চ এ তারিখ নির্ধারণ করেন। ওইদিন বাংলাদেশ ব্যাংকের কৌঁসুলি ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কিউ.সি. শুনানি করবেন বলে জানানো হয়েছে। দশম কার্যদিবসে রিটকারি অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক)র পক্ষে অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান শুনানি করেন। এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের কৌঁসুলি মো. মুনীরুজ্জামান, ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ’র কৌঁসুলি শাহ মঞ্জুরুল হক উপস্থিত ছিলেন।

মনজিল মোরসেদ বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিতে না পারার ব্যর্থতা থেকেই দুর্নীতি দমন কমিশন নামক স্বশাসিত স্বাধীন কমিশনটির প্রতিষ্ঠা। দুদক আইনের ঘোষণাতেই রয়েছে যে, প্রতিষ্ঠানটি দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি তার ভূমিকা যথাযথভাবে পালন করছে না। এ কারণেই পুন:তফসিলীকরণের সার্কুলার চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিটে দুদককে বিবাদী করা হয়েছে। দুদক আইনের ১৭ (গ) ধারায় বলা হয়েছে, কমিশন স্বপ্রণোদিত হয়ে দুর্নীতির বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে পারবে। অথচ সেটি নিচ্ছে না। এ কারণে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলা রোধে কমিশন গঠনের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। দুদক নিজেও বলেছে, এ ধরণের কমিশন দুর্নীতি চিহ্নিতকরণে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। কিন্তু পরক্ষণেই দুদক তার অবস্থান পরিবর্তন করে। আইনজীবী পরিবর্তন করে এখন বলছে, দুদককে বিবাদী করাই সঙ্গত নয়।

অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান বলেন, দুদক স্বশাসিত স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান এবং দুর্নীতি মামলার তদন্ত করাই প্রতিষ্ঠানটির মূল কাজ। কোনো বিষয় নিয়ে দুদককে কাজ করতে হলে তার কাছে আগে অভিযোগ আসতে হবে। মামলা হতে হবে। অন্যকোনো বিষয়ে দুদক হস্তক্ষেপ করতে পারে না। তিনি বলেন, দুদক মামলার বাদী কখনো বা বিবাদী হয়ে থাকে। এ কারণে সরকারের নীতিনির্ধারণী বিষয়ে দুদক কোনো মতামত দিতে পারে না। এ রিটে দুদককে পক্ষভুক্ত করাও যথার্থ নয়। শুধুমাত্র দুদকের অনুসন্ধান-তদন্ত বিষয়ে পক্ষভুক্ত করা যেতে পারে। এ প্রেক্ষাপটে মতামত প্রদানে দুদক নিজেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছে।

গত ১৩ ফেব্রুয়ারি আর্থিক খাতে অনিয়ম, দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা বন্ধে সংশ্লিষ্টদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, শৃঙ্খলা ফেরাতে কমিশন গঠনের কেন নির্দেশ দেয়া হবে না এবং এই কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে নাÑ এই মর্মে রুলনিশি জারি করেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে রুলে ২ শতাংশ সুদ জমা দিয়ে ১০ বছরের জন্য ঋণ পুনঃতফসিলের সুবিধা প্রদান সংক্রান্ত ১৬ মে’র প্রজ্ঞাপন কেন বাতিল করা হবে না তাও জানতে চাওয়া হয়। ‘হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) করা রিট পিটিশনের প্রেক্ষিতে গত ২৩ জুলাই এ রুল জারি করা হয়। গত ১৩ অক্টোবর থেকে রুলের চূড়ান্ত শুনানি চলছে। এতে দুদকের পক্ষ থেকে হাইকোর্টে লিখিত বক্তব্য দাখিল করা হয়। পরবর্তীতে ২৪ জুন বাংলাদেশ সিলগালা করে ঋণখেলাপিদের তালিকা হাইকোর্টে দাখিল করে। গত ১৬ মে বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করা হয়। রিটকারীদের শুনানি নিয়ে গত ২১ মে ওই সার্কুলারের ওপর ২৪ জুন পর্যন্ত স্থিতাবস্থা বজায় রাখার জন্য আদেশ দেন আদালত। এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২ জুলাই আপিল বিভাগের চেম্বারকোর্ট ৮ জুলাই পর্যন্ত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেন। ৮ জুলাই এ স্থগিতাদেশের মেয়াদ আরও দুই মাস বাড়ান। তবে যারা ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্টের সুবিধা নেবেন তারা নতুন করে ঋণ নিতে পারবেন না। এছাড়া বিচারপতি জে বি এম হাসানের নেতৃত্বাধীন আদালতে রুল শুনানি করতে বলেন। সে অনুসারে রুলের চূড়ান্ত শুনানি চলছে। এ অবস্থায় ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট নিয়ে আদালতের আদেশের সময়সীমা কয়েকবার বাড়ানো হয়। তবে এ রিটের দোহাই দিয়ে ঋণ পুনঃতফসিলে নতুন কোনো আবেদন গ্রহণ করছে না ব্যাংকগুলো।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ