Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রুমমেট মিজান ৫ দিনের রিমান্ডে

আবরার হত্যা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৪ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:০০ এএম

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় তার রুমমেট মিজানুর রহমান মিজানকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। গতকাল বুধবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হাকিম বাকী বিল্লাহ শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ওয়াহিদুজ্জামান ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে মিজানকে আদালতে হাজির করেন। মিজান বিচারকের জিজ্ঞাসাবদে আবরার তার রুমমেট বলে জানায়। এছাড়া আবরারকে ডেকে নেওয়ার পরে তিনি যে রুমে আবরারকে নির্যাতন করা হয়েছে সেই রুমে (২০১১) যান। পরবর্তীতে ১৬ ব্যাচের দু’জন তাকে চলে যেতে বললে তিনি তার নিজের রুমে (১০১১) ফিরে আসেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, আদালতে শুনানিকালে মিজানের পক্ষে কোনও আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না। বিচারক তাকে জিজ্ঞাস করেন, ‘আপনার আইনজীবী আছে?, আপনি কি আবরারের রুমমেট?’ এ সময় মিজান আইনজীবী নেই জানিয়ে আদালতকে বলেন, ‘জি, আবরার আমার রুমমেট।’ আদালতের প্রশ্ন, ‘আপনি কোন বিভাগের?’ মিজানের জবাব, ‘পানিসম্পদ বিভাগের।’ এরপর আদালতের শুনানি শেষে সাংবাদিকদের মিজান জানায়, ‘আবরারকে ডেকে নেওয়ার পরে আমি যাই। এরপর রাত ১১টার দিকে আমাকে ১৬ ব্যাচের দু’জন বলে তুই চলে যা। এরপর আমি চলে আসি।’
গত ১১ অক্টোবর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিজানকে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। একইসঙ্গে আবেদনে তিনি বলেন, ‘পরবর্তীতে প্রয়োজন হলে রিমান্ডের আবেদন করবেন। এরপর বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
উল্লেখ্য, গত ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষ থেকে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয় বুয়েটের ১৭তম ব্যাচের ইলেকট্রিক অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র আবরার ফাহাদ রাব্বীকে। রাত ৩টার দিকে শেরে বাংলা হলের দ্বিতীয় তলা থেকে আবরারের লাশ উদ্ধার করে কর্তৃপক্ষ। পুলিশ জানিয়েছে, তাকে পিটিয়ে হত্যার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এই ঘটনায় একাধিক ভিডিও ফুটেজও পাওয়া গেছে। আবরারকে হত্যার ঘটনায় তার বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় ১৯ জনকে আসামি করা হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত এজাহারভুক্ত ১৯ আসামির মধ্যে ১৬ জন এবং সন্দেহভাজন হিসেবে চারজনসহ মোট ২০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৮জন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন। তারা হলেনÑ ইফতি মোশাররফ সকাল, মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, অনিক সরকার, মো. মোজাহিদুর রহমান, মেহেদি হাসান রবিন, মনিরুজ্জামান মনির, তাবাখখারুল ইসলাম তানভীর ও এ এস এম নাজমুস সাদাত। এছাড়া আবরার হত্যার ঘটনায় আরো দু’জন সাক্ষী এখন পর্যন্ত স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তারা হলেনÑ বুয়েটের শেরেবাংলা হলের নিরাপত্তা রক্ষী মো. মোস্তফা ও একই হলের ক্যান্টিন বয় জাহিদ হোসেন। এজাহারভুক্ত তিন আসামি এখনো অধরা। তারা হলেনÑ জিসান, মো. মোর্শেদ ও মো. তানিম।
পুলিশ ও কারা সূত্র জানায়, গ্রেফতার ২০ আসামির মধ্যে ১৯ জন গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছে। গ্রেফতারের পর বিভিন্ন সময়ে তাদেরকে এ কারাগারে স্থানান্তর করা হয়েছে।
কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার বিকাশ রায়হান বলেন, গ্রেফতারকৃত ১৯ আসামিকে ঢাকার কেরাণীগঞ্জ কারাগার থেকে পর্যায়ক্রমে গাজীপুরের এ কারাগারে স্থানান্তর করা হয়েছে। সর্বশেষ গত সোমবার অমিত সাহাসহ তিনজনকে ঢাকার ওই কারাগার থেকে এখানে পাঠানো হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ