পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশের সাধারণ মানুষ, ব্যবসায়ী নেতা ও রাজনৈতিক দলগুলোর বিরোধিতার মুখে গ্রাহক পর্যায়ে আবারও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। বর্তমান সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর নবম বারের মতো বাড়ানো হবে বিদ্যুতের দাম। পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের মূল্য বাড়াতে চায় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহের ঘাটতির কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) কাছে পিডিবি মূল্য বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে।
কমিশন পাইকারি বিদ্যুতের মূল্য বাড়ানোর প্রস্তাব বিবেচনায় নিলে গ্রাহক-পর্যায়েও মূল্য বাড়বে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, তখন লোকসানের অজুহাত দেখিয়ে বিতরণ কোম্পানিগুলোও বিদ্যুতের মূল্য বাড়ানোর প্রস্তাব দেবে।
২০১৭ সালের ২৩ নভেম্বর গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের মূল্য বাড়ানো হয়েছিল। তখন গড়ে ইউনিট প্রতি ৩৫ পয়সা মূল্য বাড়ানো হয়, যা ওই বছরের ডিসেম্বর থেকে কার্যকর করা হয়। এর আগে ২০১০ সালের ১ মার্চ থেকে ২০১৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছয় বছরে পাইকারি পর্যায়ে ৯ বার এবং খুচরা গ্রাহক পর্যায়ে ৭ বার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে।
বিইআরসি স‚ত্রে জানা গেছে, গত সপ্তাহের শেষে তারা এই প্রস্তাব কমিশনের কাছে জমা দেয়। যদি বিদ্যুতের মূল্য বাড়ানোর প্রস্তাব বিবেচনায় নেয়, তাহলে তা আগামী জানুয়ারি থেকে কার্যকরেরও প্রস্তাব করেছে পিডিবি। এই প্রস্তাবের সঙ্গে সঙ্গে বিতরণ কোম্পানিগুলো তাদের নিজেদের লোকসানের হিসাব করা শুরু করেছে বলেও জানা যায়।
গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি ইনকিলাবকে বলেন, বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হলে তার প্রভাব পড়বে সর্বত্র। তাই বিষয়টি বিবেচনায় রাখতে হবে।
বিদ্যুতের মূল্য বাড়ানোর প্রস্তাব প্রসঙ্গে পিডিবির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী খালেদ মাহমুদ ইনকিলাবকে বলেন, বিদ্যুতের ম‚ল্য বাড়ানোর জন্য একটি প্রাথমিক প্রস্তাব দিয়েছি। প্রস্তাবে কী পরিমাণ বৃদ্ধি করা হবে তা উল্লেখ করিনি। শুধু লোকসানের একটা হিসাব দিয়েছি। চিঠিতে বলেছি, সময় আসছে, বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে। গ্যাসের ম‚ল্য বেড়েছে। গ্যাসের ম‚ল্য বাড়ানোর ফলে বিদ্যুতের উৎপাদন খরচও বাড়ছে। ফলে বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পিডিবির এক কর্মকর্তা বলেন, আমরা ম‚ল্য বাড়ানোর কোনো প্রস্তাব দেইনি। আমরা বলেছি, আগামী ২০২০ সালে আমাদের বিদ্যুৎ বিক্রি করে আয় হতে পারে ৩৬ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। কিন্তু ওই সময় আমাদের প্রয়োজন হবে ৪৫ হাজার ২০৮ কোটি টাকা। ফলে বাকি আট হাজার ৬০৮ কোটি টাকা কিভাবে পূরণ করা হবে, তাই জানানো হয়েছে কমিশনকে। কমিশন এখন সিদ্ধান্ত নেবে, বিদ্যুতের মূল্য বাড়াবে নাকি ভর্তুকির আকারেই পিডিবিকে দেয়া হবে। তিনি বলেন, আমরা এক পয়সাও বাড়াতে বলিনি। আমরা শুধু লোকসানের হিসাব দিয়েছি। আমরা যেমন বলি, একটা নির্দিষ্ট সংখ্যা উল্লেখ করে ম‚ল্য বাড়াতে বলি।
বিইআরসি স‚ত্র জানায়, গত সপ্তাহের শেষে তারা এই প্রস্তাব কমিশনের কাছে জমা দেয়। যদি বিদ্যুতের ম‚ল্য বাড়ানোর প্রস্তাব বিবেচনায় নেয়, তাহলে তা আগামী জানুয়ারি থেকে কার্যকরেরও প্রস্তাব করেছে পিডিবি। এই প্রস্তাবের সঙ্গে সঙ্গে বিতরণ কোম্পানিগুলোও তাদের নিজেদের লোকসানের হিসাব করা শুরু করেছে বলেও জানা যায়।
পিডিবির চিঠিতে বলা হয়েছে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ৬ হাজার ৭৯ কোটি ৬২ লাখ কিলোওয়াট ঘণ্টা। গত অর্থবছর এ পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ৬ হাজার ৮৬১ কোটি ৬৩ লাখ কিলোওয়াট ঘণ্টা। চলতি অর্থবছর বিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাব্য পরিমাণ দাঁড়াবে ৭ হাজার ৫৮৭ কোটি ৪৬ লাখ কিলোওয়াট ঘণ্টা। ২০২০ সালে এর পরিমাণ দাঁড়াবে ৭ হাজার ৯২০ কোটি ৬২ লাখ কিলোওয়াট ঘণ্টা। এই হিসাবে আগামী বছর পিডিবির ব্যয় হবে ৪৫ হাজার ২০৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। অন্যদিকে, ২০২০ সালে পিডিবির সম্ভাব্য আয় দাঁড়াবে ৩৬ হাজার ৬৪৮ কোটি ২৪ লাখ টাকা। এতে পিডিবির ঘাটতি দাঁড়াবে প্রায় আট হাজার ৫৬০ কোটি ৬৯ লাখ টাকা।
গত ১২ অর্থবছরে বিদ্যুৎ খাতে মোট ৫৩ হাজার ৬৯৬ কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েছে সরকার। বছরভিত্তিক ভর্তুকির হিসাব বলছে, ২০০৬-২০০৭ অর্থবছরে বিদ্যুতে ভর্তুকির পরিমাণ ছিল ৩০০ কোটি টাকা। ২০০৭-২০০৮ অর্থবছরে ছিল ৬০০ কোটি, ২০০৮-২০০৯ অর্থবছরে এক হাজার ৭ কোটি, ২০০৯-২০১০ অর্থবছরে কিছুটা কমে ৯৯৪ কোটি, ২০১০-২০১১ অর্থবছরে তা তিনগুণ বেড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা, ২০১১-২০১২ অর্থবছরে ৬ হাজার ৩৫৭ কোটি, ২০১২-২০১৩ অর্থবছরে আবার একটু কমে ৪ হাজার ৪৮৬ কোটি, ২০১৩-২০১৪ অর্থবছরে আবার তা বেড়ে ৬ হাজার ১০০ কোটি টাকায় দাঁড়ায়। এরপর ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরে তা ৮ হাজার ৯৭৮ কোটি, ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে আবার কমে ৪ হাজার ৩৬৫ কোটিতে দাঁড়ায়। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে কমে ৩ হাজার ৯৯৪ কোটি টাকা, এরপর ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৪ হাজার ৫৪৫ কোটি টাকা, গত অর্থবছরে (২০১৮-১৯) ভর্তুকির পরিমাণ দাঁড়ায় হয় ৭ হাজার ৯৭০ কোটি। চলতি অর্থবছর ভর্তুকির সম্ভাব্য পরিমাণ ধরা হয়েছে ৯ হাজার কোটি টাকা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।