পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রেমিক মাইন উদ্দিন হাত-পা চেপে ধরতেই মা হাসিনা বেগম গলায় ছুরি চালান। মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে সাড়ে চার বছরের শিশু কন্যা ফাতেমা নূর। মেয়ের গলা কাটা রক্তাক্ত লাশ বিছানায় ঢেকে রেখে অপেক্ষা করেন স্বামীর জন্য। কিছুক্ষণের মধ্যে স্বামী আবু তাহের বাসায় ঢুকতেই তাকে ঝাপটে ধরেন হাসিনা ও মাইন উদ্দিন। কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই তার গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে খাটে শুইয়ে দেয়া হয়। এরপর পেট ও উরুতে ছুরিকাঘাত করা হয়। হাসিনা নিজেই স্বামীর গলায় ছুরি চালিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করেন।
পরকীয়া প্রেমিককে নিয়ে নিজ সন্তান ও স্বামীকে খুনের এমন বর্ণনা দেন হাসিনা বেগম। গতকাল রোববার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) সম্মেলন কক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে হাসিনা বেগমের জবানবন্দির বরাত দিয়ে এসব তথ্য জানান সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার আমেনা বেগম। তিনি বলেন, পাশের বাসার মাইন উদ্দিনের সাথে তার পরকীয়া চলছিল। স্বামী মেয়ে বাসায় নেই, এই সুযোগে ওই প্রেমিকের সাথে অনৈতিক কাজে লিপ্ত হন হাসিনা। হঠাৎ বাসায় ফিরে কন্যা ফাতেমা নূর এই দৃশ্য দেখে ফেলে। বাবা আসলে তাকে ঘটনা বলে দেবে বলেও জানায়।
আর তাতে ক্ষুদ্ধ হয়েই এই জোড়া খুন করেন হাসিনা ও তার প্রেমিক মাইন উদ্দিন। হাসিনা বেগমের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল ভোরেই নোয়াখালী সদর থেকে মাইন উদ্দিনকে পাকড়াও করার কথাও জানান অতিরিক্ত কমিশনার। আমেনা বেগম জানান, হাসিনার স্বীকারোক্তির মাধ্যমে মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে চাঞ্চল্যকর এই জোড়া খুনের রহস্য উদঘাটন হলো।
নগরীর বন্দর থানার নিমতলার বুচুইক্ক্যা কলোনির একটি বাসা থেকে শনিবার আবু তাহের (৩৫) ও তার মেয়ে ফাতেমা নূরের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। আমেনা বেগম জানান, হাসিনা বেগম স্বামী ও মেয়েকে খুনের পর প্রেমিক মাইন উদ্দিনের পরামর্শে শোর-চিৎকার শুরু করেন। এতে আশপাশের লোকজন জড়ো হন। পুলিশ লাশ উদ্ধার করতে গেলে তিনি তার স্বামী শিশু কন্যাকে খুনের পর আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি করেন।
তবে পারিপার্শ্বিক অবস্থা এবং খুনের ধরন দেখে পুলিশের সন্দেহ হয়। হাসিনাকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে হাসিনা তার প্রেমিক মাইন উদ্দিনকে নিয়ে এই জোড়া খুন করার কথা স্বীকার করেন। খুনের পর মাইন উদ্দিন নোয়াখালীতে গ্রামের বাড়ি পালিয়ে যান।
এ ঘটনায় তাহেরের বড় ভাই নুর আলম বাদী হয়ে তাহেরের স্ত্রী হাসিনা ও প্রতিবেশী মাইন উদ্দিনকে আসামি করে বন্দর থানায় মামলা করেন। পুলিশ জানায়, যে বাসাটিতে তাহের তার পরিবার নিয়ে থাকতেন তার পাশের কক্ষে ভাড়া থাকতেন মাইন উদ্দিন। দীর্ঘদিন থেকে তাদের মধ্যে অনৈতিক সর্ম্পক চলছিলো। তাহের ও হাসিনা দুইজনেরই আগে বিয়ে হয়েছিল। তাহেরের আগের স্ত্রী মারা গেছেন। আর হাসিনার সাথে তার স্বামীর বনিবনা না হওয়ায় ছাড়াছাড়ি হয়েছিল।
বিচ্ছেদের পর নিমতলী এলাকায় বড় বোনের বাসায় থাকার সময় পাঁচ বছর আগে তাহেরের সাথে হাসিনার পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। আর মাইন উদ্দিনের স্ত্রী তার নোয়াখালীর বাড়িতে থাকেন। মাইন উদ্দিন এসএপিএল কন্টেইনার ডিপোতে শ্রমিকদের সরবরাহকারীর কাজ করেন। আর তাহের ওই কন্টেইনার ডিপোসহ বিভিন্ন স্থানে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজ করেন। হাসিনা মানুষের বাসায় কাজ করতেন।
বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকান্ত চক্রবর্তী জানান, হাসিনা ও মাইন উদ্দিনকে রিমান্ডে নিয়ে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।