মালয়েশিয়া প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিয়ে শুরু হয়েছে গানের প্রতিযোগিতা “এমএম লাইভ-সিঙ্গারস অফ লাইফ ২০২০”। রোববার কুয়ালালমপুরে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এক সংবাদ সম্মেলনে এই প্রোগ্রামের ঘোষণা দেন এমএম লাইভের সিইও জাফর ফিরোজ। তিনি জানান, ‘প্রবাসী গাও জীবনের গান’এই স্লোগানে মালয়েশিয়া প্রবাসী ছাড়াও এই প্রতিযোগিতায় সিঙ্গাপুর, ব্রুনাই, ইন্দোনেশিয়া এবং থাইল্যান্ডের প্রবাসী বাংলাদেশিরা অংশ গ্রহণ করতে পারবে। এই প্রতিযোগিতার লক্ষ্য শুধু প্রতিভার সন্ধান নয়; বরং এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে মালয় এবং বাঙ্গালি সংস্কৃতির মাঝে একটি ভালোবাসার বন্ধন তৈরি করা। সেই সাথে বাঙ্গালি সুরকে বিশ্ব মাঝে ছড়িয়ে দেয়া। আমরা আশা রাখি গ্র্যান্ড ফিনালেতে মালয়েশিয়ান শিল্পীদের সাথে কয়েকটি দেশের শিল্পীরাও বাংলা গান পরিবেশন করবে। এই মহৎ কর্মযজ্ঞ আমাদের একার পক্ষে সম্ভব নয়। আমরা মালয়েশিয়া প্রবাসী বাংলাদেশিদের অভিভাবক বাংলাদেশ হাইকমিশন, বাংলাদেশ কমিউনিটি, মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান এবং সকল প্রবাসীদের নিয়ে এই কাজটি সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে চাই। সংস্কৃতির আদান-প্রদানের মাধ্যমে আমরা দুই দেশের মাঝে বন্ধনকে আরও দৃঢ় করতে চাই।
জাফর ফিরোজ জানান, “এমএম লাইভ সিঙ্গারস অফ লাইফ-২০২০” এর অনলাইন অডিশন রাউন্ড রোববার থেকেই শুরু হয়েছে। এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার জন্যে প্রতিযোগীদের এমএম লাইভ মোবাইল অ্যাপসে গিয়ে রেজিস্ট্রেশন ফর্ম পূরণ করতে হবে। এমএম লাইভ এপ্সে অডিশন নামে একটি অপশন দেয়া আছে। প্রতিযোগীগণ মোবাইলে গানের ভিডিও ধারণ করে আপলোড করবে । সেখান থেকে ১০০ জনকে বাছাই করে দর্শকদের ভোটের জন্য এমএম লাইভ এপ্সে সবার জন্য ভিডিওটি উন্মুক্ত করা হবে। দর্শকদের ভোট এবং বিজ্ঞ বিচারক মণ্ডলীর রায়ে সেখান থেকে ৫০ জনকে স্টুডিও রাউন্ডের জন্য বাছাই করা হবে। স্টুডিও রাউন্ডে থাকবে বাংলা চলচ্চিত্রের চার মহা নায়ক সালমান শাহ, রাজ রাজ্জাক, ফারুক এবং ইলিয়াস কাঞ্চন অভিনীত চলচ্চিত্রের গান। এখানেও দর্শকদের ভোট এবং বিচারকদের ভোটে সেরা ২০ জনকে বাছাই করা হবে। সেমিফাইনালে সেরা ২০ জন থেকে ১০ জনকে বাছাই করে ফাইনাল রাউন্ডের জন্য মনোনীত করা হবে। সেরা ১০ জন নিয়ে হবে গ্রুমিং রাউন্ড। গ্রুমিং রাউন্ড শেষে সেরা ১০ জন গাইবে ফাইনাল রাউন্ডে । দর্শকগণ ফাইনাল রাউন্ডসহ সকল রাউন্ড এমএম এপ্সে দেখতে পারবে। প্রতিযোগী এবং অনলাইন দর্শকদের জন্য রয়েছে ২০ হাজার রিঙ্গিত সমমানের পুরষ্কার। আমরা আশা করি পুরষ্কারের পরিমাণটা গ্র্যান্ড ফিনালে পর্যন্ত আরও কয়েক গুন বাড়তে পারে।
তিনি বলেন, অডিশন রাউন্ডের বাছাইকৃত প্রতিযোগীদের নিয়ে ইভেন্টের মূল পর্বে বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন- একুশে পদক প্রাপ্ত বাংলা গানের জীবন্ত কিংবদন্তি প্লেব্যাক সিঙ্গার মোঃ খুরশিদ আলম, বাংলা চলচ্চিত্রের রাজপুত্র একুশে পদক ও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের ভূষিত চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন, অসংখ্য কালজয়ী গানের স্রষ্টা বিশিষ্ট সঙ্গীত পরিচালক মইনুল ইসলাম খান, চলচ্চিত্রের তিন হাজারেরও বেশি গানে যার কণ্ঠ, খ্যাতিমান প্লেব্যাক সিঙ্গার কনক চাঁপা, বর্তমান সময়ের আলোচিত সঙ্গীত পরিচালক সজীব দাশ এবং ইয়াং ক্রেজ শিল্পী ফাতেমা তুজ জোহরা ঐশী।
“এমএম লাইভ- সিঙ্গারস অফ লাইফ ২০২০” এর মিডিয়া পার্টনার হিসেবে থাকছে এনটিভি। অনলাইন মিডিয়া পার্টনার হিসেবে থাকছে প্রবাসীর দিগন্ত ।
এরই মাঝে প্রতিযোগিতার টাইটেল সং তৈরি করা হয়েছে। জাফর ফিরোজের কথায় এর সুর করেছেন সজীব দাস, কণ্ঠ দিয়েছেন শিল্পী আরজে রাজু । অডিশন রাউন্ডের প্রাথমিক বাছাই চলবে এই মাস ব্যাপী। অর্থাৎ ৩১ অক্টোবর ২০১৯ অনলাইন ভিডিও জমা দেয়ার শেষ দিন।
জাফর ফিরোজ আরো জানান, বিচারকদের রায় ও দর্শকদের অনলাইন ভোটে নির্বাচন করা হবে সেরা তিন। সেরা তিন জনকে নিয়ে মৌলিক মিউজিক ভিডিও নির্মাণ করা হবে। “এমএম লাইভ সিঙ্গারস অফ লাইফ-২০২০” সেরা ৩ জনের জন্য রয়েছে ১০ হাজার মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত (বাংলাদেশি ২ লক্ষ টাকা) সমমানের পুরষ্কার এবং সেরা ২০ জনকে ক্রেস্ট, সার্টিফিকেট ও আকর্ষণীয় গিফট দেয়া হবে। অনলাইন ভোটে অংশগ্রহণকারি দর্শকদের মধ্য থেকে লটারির মাধ্যমে তিনজনকে ১০ হাজার রিঙ্গিত (বাংলাদেশি ২ লক্ষ টাকা) সমমানের আকর্ষণীয় পুরষ্কার প্রদান করা হবে। মালয়েশিয়া–বাংলাদেশ ছাড়াও পৃথিবীর যেকোন প্রান্ত থেকে দর্শকরা এই ভোটে অংশ নিতে পারবে। “এমএম লাইভ-সিঙ্গারস অফ লাইফ-২০২০” এর গ্রান্ড ফিনালে অনুষ্ঠিত হবে ২৬ জানুয়ারি ২০২০, কুয়ালালুমপুর ক্রাফট কমপ্লেক্সে। গ্র্যান্ড ফিনালেতে সম্মানিত বিচারকদের সাথে মালয়েশিয়ান চলচ্চিত্র এবং সঙ্গীত জগতের খ্যাতিমান ব্যাক্তিবর্গ উপস্থিত থাকবেন।
###