পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কলড্রপ, মিউটকল, ধীরগতির ইন্টারনেট সেবাসহ টেলিযোগাযোগে মানসম্মত সেবা নিয়ে গ্রাহকদের বিস্তর অভিযোগ। রাজধানীতেই ফোরজি সেবা না পাওয়ার অভিযোগ গ্রাহকদের। জেলা, উপজেলা এবং গ্রামাঞ্চলে ফোরজি সেবার অভিজ্ঞতা পেয়েছেন এমন কম মানুষই রয়েছে। প্রতিদিনই শত শত মানুষ নিম্নমানের ইন্টারনেট সেবা পাওয়ায় অভিযোগ করছেন বিটিআরসি ও অপারেটরটির কাছে। এসবে প্রতিকার না পেয়ে অনেকেই তিক্ত অভিজ্ঞতা লিখছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এ থেকে বাদ যাননি মন্ত্রী-এমপিরাও। সংসদেও তারা ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীকে মোবাইল ফোনের সেবা নিয়ে প্রশ্ন করেন। এমনকি নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির জরিপেও ওঠে এসেছে মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোর নি¤œমানের সেবার চিত্র। রাজধানীসহ দেশের বড় বড় শহরগুলোতেই এখানো ফোরজি সেবা পুরোপুরি দিতে ব্যর্থ হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে সেই জরিপে। রাজধানীর বাইরে জেলা শহর ও উপজেলা শহরগুলোতে ফোরজির নামে টুজি, কখনো কখনো থ্রিজি সেবা পাওয়ার অভিযোগও আছে গ্রাহকদের। উপজেলা শহরগুলো বাইরের চিত্র তো আরও ভয়াবহ। গ্রামাঞ্চলে ইন্টারনেট সেবা অনেকটা দুষ্কর বিষয়। রাষ্ট্রীয় মোবাইল ফোন অপারেটর এখনো অনেকটা পিছিয়ে, অন্য তিন অপারেটর ফোরজি সেবা চালু করলেও তারা এখনো থ্রিজিতেই রয়েছে। এরই মধ্যে দেশে পঞ্চম প্রজন্মের (ফাইভ-জি) মোবাইল ফোন সেবা চালুর উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার।
মানসম্পন্ন থ্রিজি ও ফোরজি সেবা না মিললেও ২০২১ সালের মধ্যে ফাইভ জি চালু করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিতে বলছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তফা জব্বার। বুধবার সকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে এক সেমিনারে তিনি একথা বলেন। টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, ফাইভ জি চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য জরুরি। তাই ২০২১ সালের মধ্যে ফাইভ জি চালু করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হবে। অতীতের তিনটি শিল্প বিপ্লবের ট্রেন মিস করা আমাদের দেশটির জন্য ডিজিটাল শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য ফাইভ জি প্রযুক্তি অপরিহার্য।
মোস্তফা জব্বার বলেন, ফাইভ জি হচ্ছে একটি শিল্প বিপ্লবের মহাসড়ক। যথা সময়ে আমরা এই মহাসড়ক নির্মাণ করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। দেশে ফাইভ জির যাত্রা যাতে সহজ হয়, সেই লক্ষ্যে আমাদেরকে পরিকল্পিতভাবে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জসমূহ মোকাবেলা করতে হবে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, বাণিজ্য বিশেষজ্ঞদের নিয়ে এই সংক্রান্ত বিধিমালা তৈরির উপর জোর দেন মোস্তাফা জব্বার।
তবে অভিযোগ রয়েছে, থ্রিজি থেকে ফোরজি, ফাইভজি এসব গ্রাহক স্বার্থে নয়, এতে গ্রাহকের কোন লাভ হয় না। বরং প্রতিটি লাইসেন্স দেয়া হয় অর্থ আদায়ের জন্য। ফোরজি সেবা নিশ্চিত না করেই কেবল অর্থ আদায়ের ব্যবস্থা করতে ফাইভ জি’তে যাচ্ছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়।
বর্তমান সময়ে টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা ও কোয়ালিটি অব সার্ভিস এতোটাই খারাপ যে, ফোরজি’র জায়গায় থ্রিজি পাওয়া দুষ্কর। এমতাবস্থায় বিটিআরসি ও সরকারের ফাইভ জি চালুর সিদ্ধান্ত গ্রাহকদের সাথে প্রতারণা ছাড়া আর কিছুই নয় বলে মনে করে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন। সংগঠনটির সভাপতি মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, ফাইভ জি চালুর সিদ্ধান্তে সবচাইতে খুশি হবার কথা আমাদের। কিন্তু খুশি না হয়ে এ ধরণের সিদ্ধান্তে আমরা আতঙ্কিত হচ্ছি। কারণ ফোরজি চালুর সময় টেলিযোগাযোগের যে অবস্থা ছিল বর্তমানে তা নেই। ফোরজি চালুর ১৮ মাস পার হলেও সারাদেশে এখন পর্যন্ত ফোরজি দূরে থাক থ্রিজি নিশ্চিত করা যায়নি। তিনি বলেন, বর্তমান সময়ে কোয়ালিটি অব সার্ভিস যদি মাপা হয় তাহলে দেখা যাবে যে কোন সময়ের চাইতে অনেক নিম্নমানের। রাষ্ট্রীয় অপারেটর টেলিটক এখনও ফোরজি চালু করতে পারেনি। গ্রাহকদের ৯০ শতাংশ এখনও ফোরজি সেবা গ্রহণ করেননি। ফাইভ জির ডিভাইস দেশে পর্যাপ্ত নয়, তাও আবার অতি উচ্চ মূল্যে। নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা অত্যন্ত দুর্বল। অপারেটরদের এখন পর্যন্ত স্পেকট্রাম আছে ৩৫ মেগাহার্জ। অথচ ফাইভ জিতে লাগবে প্রায় ১০০ মেগাহার্জ। এমতাবস্থায় যদি ফাইভ জি চালু করা হয় তা হবে শুধু কাগজে কলমে। এটি একদিকে যেমন হাস্যকর অন্যদিকে গ্রাহকদের কাছে প্রতারণা ছাড়া কিছুই না।
যদিও বিটিআরসি বলছে, মোবাইল ব্রডব্যান্ড সেবার সর্বশেষ সংস্করণ ফাইভ-জি প্রযুক্তি, যার মাধ্যমে ফোর-জি প্রযুক্তির চেয়ে নেটওয়ার্ক সক্ষমতা বহুগুণ বাড়ানো যায়। বর্তমানে প্রচলিত মোবাইল গ্রাহক হিসেবে শুধু মানুষকে বিবেচনা করা হলেও ফাইভ-জি প্রযুক্তির অন্যতম প্রধান সেবা হল ইন্টারনেট অব থিংকস- আইওটি, যেখানে যন্ত্র থেকে যন্ত্রে যোগাযোগের জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসগুলোকেও গ্রাহক হিসেবে বিবেচনা করা হবে।
বিটিআরসি জানায়, দক্ষিণ কোরিয়া, আয়ারল্যান্ড, স্পেন, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এরই এই প্রযুক্তিতে প্রবেশ করেছে। প্রতিটি দেশেই অপারেটরকে ৩৩০০-৪২০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ডে প্রায় ১০০ মেগাহার্টজ এবং মিলিমিটার ওয়েভের জন্য ২৬-২৮ গিগাহার্টজ বা তদূর্ধ্ব ব্যান্ডে ৮০০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তবে কিছু কিছু দেশ ২.৫ গিগাহার্টজ (২৫০০-২৬৯০ মেগাহার্টজ) ব্যান্ডে ফাইভ-জির জন্য তরঙ্গ বরাদ্দ দেওয়ার পরিকল্পনা করছে।
বিটিআরসি জানায়, ২৮ গিগাহার্টজ ব্যান্ডে ফাইভ-জি সেবার ওপর একটি উপস্থাপনা প্রদর্শন করা হয়েছে। বর্তমানে ২.৬ গিগাহার্টজ, ৩.৫ গিগাহার্টজ ইত্যাদি ফাইভ-জি সেবার জন্য জনপ্রিয় ব্যান্ড হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার-২০১৮ অনুযায়ী ২০২১-২৩ সালের মধ্যে দেশে ফাইভ-জি সেবা চালুর প্রতিশ্রুতি রয়েছে।
১৯৯০ সালে টুজি প্রযুক্তির মোবাইল ফোন সেবা চালুর পর ২০১৩ সালে আসে থ্রিজি। গত বছর ফেব্রুয়ারিতে চালু হয় ফোরজি সেবা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।