পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
লাইটারেজের পরিবর্তে পাইপ লাইনে জ্বালানি তেল সরবরাহ হলে সিস্টেম লস ও অন্যান্য ঝুঁকি শূন্যে নেমে আসবে। এতো সম্ভাবনার পরও শুধু লাইটারেজ মালিকদের তদবিরের মুখে ঢিমেতালে চলছে ঢাকা-চট্টগ্রাম পাইপ লাইনের কাজ। প্রধানমন্ত্রীর একজন প্রভাবশালী উপদেষ্টা লাইটারেজ মালিকদের পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় সম্ভাবনাময় এ প্রকল্পের বাস্তবায়ন অনেকটা অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) চেয়ারম্যান মো. সামছুর রহমান ইনকিলাবকে বলেন, সেনাবাহিনীকে কাজটি দেওয়া হয়েছে। অধিগ্রহণের জন্য জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। এখন দাগ খতিয়ান সংগ্রহ করা হচ্ছে। সারা বিশ্বেই এখন পাইপ লাইনে তেল সরবরাহ হচ্ছে, এখানেও হবে। এখান থেকে সরে আসার কোনো সুযোগ নেই। কাজের অগ্রগতি প্রসঙ্গে বিপিসি চেয়ারম্যান বলেন, আর্থিক অগ্রগতি সম্ভবত ৫ থেকে ৭ শতাংশ হবে। কাজের অগ্রগতি ১০ থেকে ১৫ শতাংশ হতে পারে। প্রকল্পটির কাজ শেষ হতে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে একটু বেশি সময় লাগতে পারে।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা চট্টগ্রাম পাইপ লাইন জ্বালানি তেল সরবরাহ প্রকল্পটির কাজ শেষ হলে বছরে ৬৫ কোটি টাকা পরিবহন খরচ সাশ্রয় হবে। আবার লাইটারেজের পরিবর্তে পাইপ লাইনে জ্বালানি তেল সরবরাহ হলে সিস্টেম লস ও ঝুঁকি শূন্যে নেমে আসবে। এতো সম্ভাবনাময় এই প্রকল্পটি কাজ লাইটারেজ মালিকদের তদবিরের মুখে ঝিমিয়ে পড়েছে। লাইটারেজ মালিকদের সঙ্গে সরকারি মালিকানাধী অয়েল কোম্পানি পদ্মা, মেঘনা, যমুনার কিছু অসাধু কর্মকর্তা জড়িত বলে জানা গেছে। এই অসাধু কর্মকর্তারা লাইটারেজ মালিকদের কাছ থেকে নিয়মিত কমিশন পান বলেও অভিযোগ রয়েছে। প্রকল্পটি ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু সে অনুযায়ী দৃশ্যমান অগগ্রতি নেই। এখনও ভ‚মি অধিগ্রহণের কাজই শেষ করা যায়নি। ঠিক কতখানি অগ্রগতি হয়েছে, সে বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেননি প্রকল্পটির দায়িত্বে থাকা পদ্মা অয়েল কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজার আমিনুল ইসলাম।
তিনি বলেন, এ কথা ঠিক যে লাইটারেজ মালিকদের পক্ষ থেকে চাপ রয়েছে। তারা দাবি করছেন, এ পাইপ লাইন হলে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তারা ব্যাংক ঋণ নিয়েছেন, ভাড়া বন্ধ হয়ে গেলে ঋণ পরিশোধে সংকটে পড়বেন। তবে লাইটারেজ মালিকরা দাবি করতেই পারেন, সেজন্য প্রকল্পের কাজ আটকে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলছে।
আমিনুল ইসলাম বলেন, প্রকল্পটি সেনাবাহিনীকে দেওয়া হয়েছে। তারা দেখভাল করছেন। নির্ধারিত সময় ২০২০ সালের ডিসেম্বরে কাজ শেষ করা যাবে কি না, সেটা তারা ভালো বলতে পারবেন।
প্রকল্পটির ইঞ্জিনিয়ারিং ডিজাইনের জন্য ভারতীয় কোম্পানি সেকন ইঞ্জিনিয়ারিং এবং রুট চূড়ান্ত করার জন্য কনসালটেশন ফার্ম হিসেবে চাইনিজ প্রতিষ্ঠান কেএমসির সঙ্গে চুক্তি করা হয় ২০১৮ সালের আগস্টে। সে কাজের অগ্রগতি সম্পর্কেও জানাতে পারেননি তিনি।
মূল প্রকল্পের নাম ঢাকা-চট্টগ্রাম পাইপ লাইন প্রকল্প। ২০১৭ সালে প্রাক সমীক্ষা শেষ হয়। প্রকল্পের মূল ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৮৬১ কোটি টাকা। বাংলাদেশ পেট্্েরালিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) অর্থায়নে গৃহীত এ প্রকল্পের আওতায় ঢাকা-চট্টগ্রাম ২৩৭ কিলোমিটার, কুমিল্লা থেকে চাঁদপুর পর্যন্ত ৫৯ কিলোমিটার এবং ফতুল্লা থেকে গোদনাইল ডিপো পর্যন্ত সাড়ে ৮ কিলোমিটার পাইপ লাইন স্থাপন করা হবে। বিপিসি ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে ১.১৭ মিলিয়ন মেট্রিক টন ক্রড অয়েল এনে চট্টগ্রামে অবস্থিত ইস্টার্ন রিফাইনারিতে শোধন করে বাজারজাত করে। আর ৫.৫৪ মিলিয়ন মেট্রিক টন পরিশোধিত তেল আমদানি করে। এর মধ্যে নারয়ণগঞ্জে অবস্থিত গোদনাইল ও ফতুল্লা ডিপোর মাধ্যমে ৩২ শতাংশ অর্থাৎ ২.২ মিলিয়ন টন বিতরণ করা হয়ে থাকে। এ জ্বালানির প্রায় পুরোটাই চট্টগ্রাম থেকে লাইটারেজ জাহাজে করে চট্টগ্রামে নেওয়া হয়।
বিপিসির এক সমীক্ষায় দেখা গেছে প্রতি টন জ্বালানি তেল পরিবহনের জন্য নটিক্যাল মাইল প্রতি ৪.৬৯ টাকা হারে মাসুল দিতে হয়। বছরে ১৫ লাখ মেট্রিক টন জ্বালানি তেল চট্টগ্রাম থেকে নারায়ণগঞ্জে (১৫৩.৮ নটিক্যাল মাইল) পরিবহনের জন্য ১০৮ কোটি ১৯ লাখ টাকা গুণতে হয়। এর সঙ্গে দশমিক ১৭ শতাংশ হারে সিস্টেম লস সমান ১৫ কোটি ৯৪ লাখ টাকা গচ্চা গেছে। একই পরিমাণ জ্বালানি তেল পরিবহনে পাইপ লাইনের অপারশনাল খরচসহ ৬২ কোটি টাকার মতো খরচ পড়বে। সিস্টেম লস নেই, পরিবহনের ঝুঁকিও কম। দেশের এমন স্বার্থ লাইটারেজ মালিকদের কাছে ক্ষুদ্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা একজোট হয়ে এর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছেন। অভিযোগ রয়েছে, স¤প্রতি এ জোটেভুক্ত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর একজন প্রভাবশালী উপদেষ্টা। প্রকল্পের কাজ বন্ধ করার জন্য তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন বলে বিপিসি ও জ্বালানি বিভাগ সূত্র দাবি করেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।