Inqilab Logo

শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২২ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

অবশেষে ক্ষমা চাইলেন বুয়েট ভিসি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১২ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

আবরার ফাহাদের জানাজায় উপস্থিত হতে না পারায় দুঃখ প্রকাশ করে অবশেষে ক্ষমা চেয়েছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি সাইফুল ইসলাম।
গতকাল শুক্রবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার সময় তিনি ক্ষমা চান। ভিসি বলেন, আবরারের ময়নাতদন্তের পর ক্যাম্পাসে যে জানাজা হবে সেই ইনফরমেশন আমার কাছে ছিল না। একটা গ্যাপ হয়েছিল। পরে জানতে পেরে যখন যেতে চেয়েছি, ততক্ষণে তার লাশ নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের ১০ দফা দাবির মধ্যে এই জবাবদিহির দাবিও ছিল। সপ্তম দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি কেন ৩০ ঘণ্টা অতিবাহিত হওয়ার পরও ঘটনাস্থলে উপস্থিত হননি এবং ৩৮ ঘণ্টা পরে উপস্থিত হয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিরূপ আচরণ করেন। কেন তিনি কোনও প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে স্থান ত্যাগ করেন। সশরীরে ক্যাম্পাসে এসে এর জবাবদিহি করতে হবে।

বুয়েট অডিটোরিয়ামে ভিসি সাইফুল ইসলাম উল্লেখ্য, ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেয়ার জের ধরে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে রোববার রাতে ডেকে নিয়ে যায় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। এরপর রাত ৩টার দিকে শেরেবাংলা হলের নিচতলা ও দোতলার সিঁড়ির করিডোর থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সোমবার দুপুরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে আবরারের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ লাশের ময়নাতদন্ত করেন। তিনি বলেন, ছেলেটিকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। নিহত আবরার কুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন। আবরার হত্যাকান্ডের বিচার দাবিসহ ১০ দফা দাবিতে আন্দোলনে উত্তাল রয়েছে বুয়েট ক্যাম্পাস। এর আগে আবরার ফাহাদের কুষ্টিয়ার গ্রামের বাড়িতে যান বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি সাইফুল ইসলাম কিন্তু গ্রামবাসী তাকে তারা করেন। ফাহাদের খুনিদের ফাঁসিসহ শিক্ষার্থীদের ১০ দফা দাবি নিয়ে বুয়েটের ১৫, ১৬, ১৭ ও ১৮ ব্যাচের সঙ্গে এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

শিক্ষার্থীরদের শর্ত অনুযায়ী, গণমাধ্যমের সামনে আলোচনা করতে রাজি না হলেও পরে ভিসি সাংবাদিকদের সামনে আলোচনা করতে রাজি হয়েছেন। তবে তিনি বৈঠক সরাসরি স¤প্রচার না করার শর্তজুড়ে দিয়েছেন।
বিকেল সাড়ে তিনটা থেকে শিক্ষার্থীদের পরিচয়পত্র দেখে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে দেয়া হয়। শিক্ষার্থীদের দশ দফা দাবিগুলো ছিল, খুনিদের শনাক্ত করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, খুনিদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১১ অক্টোবরের মধ্যে আজীবন বহিষ্কার করতে হবে, আবরার হত্যা মামলার সব খরচ এবং ক্ষতিপূরণ বিশ্ববিদ্যালয়কে বহন করতে হবে, মামলা দ্রæতবিচার ট্রাইব্যুনালের অধীন স্বল্পতম সময়ে নিষ্পত্তি করতে হবে, অবিলম্বে চার্জশিটের কপিসহ অফিসিয়াল নোটিশ দিতে হবে, বুয়েটে সাংগঠনিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে, ঘটনার পর ভিসি কেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হননি এবং ৩৮ ঘণ্টা পর গিয়ে কোনো প্রশ্নের উত্তর না দেয়ায় শিক্ষার্থীদের কাছে তার জবাব দিতে হবে, আবাসিক হলগুলোতে র‌্যাগের নামে এবং ভিন্নমত দমানোর নামে নির্যাতন বন্ধে প্রশাসনের সক্রিয় ভ‚মিকা নিশ্চিত করতে হবে, এ ধরনের ঘটনা প্রকাশে একটি কমন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করতে হবে, নিরাপত্তার জন্য সব হলের উইংয়ের দু’পাশে সিসি ক্যামেরা বসাতে হবে এবং ১১ অক্টোবরের মধ্যে শেরেবাংলা হলের প্রভোস্টকে প্রত্যাহার করতে হবে।

 



 

Show all comments
  • মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম ১২ অক্টোবর, ২০১৯, ৪:৫১ এএম says : 0
    তিনি নিজেকে পিতৃতু্ল্য দাবী করার অধিকার রাখেন না। পিতা কখনো সন্তানের মৃত লাশ রেখে মন্ত্রী মহোদয়ের সাথে কথা বলার ছুঁতা খোঁজেন না। তিনি নিজে নিজেই পদত্যাগ করে চলে যাওয়া উচিত। কার নাম বাদ দেবেন আর কার নাম রাখবেন এগুলো তার কাজ নয়। পুলিশকে স্বাধীনভাবে আসামীদের ধরতে দিনে। স্বীকারোক্তিতে এবং আসামীদের ল্যাপটপ ও তাদের মোবাইল সার্চ করে সত্যিকারের আসামীদের কাঠগড়ায় তুলোন এটিই সরকার চাইছে এবং আমরা জনগনও চাই।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ