পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজধানীর কাকরাইলের উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী সুরাইয়া আক্তার রিশা (১৫) হত্যা মামলার একমাত্র আসামি ওবায়দুল খানকে (২৯) মৃত্যুদন্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে আসামিকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ এ রায় ঘোষণা করেন। এ সময় আদালতে আসামি ওবায়দুল উপস্থিতি ছিলেন। এদিকে, রায় ঘোষণার আগে আসামির ফাঁসির দাবিতে আদালত চত্বরে সমবেত হন রিশার সহপাঠী ও শিক্ষকরা। রিশা উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে পড়তো। ২০১৬ সালের ২৪ আগস্ট দুপুরে স্কুলের সামনের ফুটওভার ব্রিজে তাকে ছুরিকাঘাত করা হয়। চারদিন পর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সে। তাদের বাসা পুরান ঢাকার সিদ্দিক বাজার এলাকায়। তার বাবা রমজান হোসেন ব্যবসায়ী।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী তাপস কুমার পাল বলেন, গতকাল বেলা ২টা ৫৫ মিনিটে আসামি ওবায়দুল খানকে আদালতে হাজির করা হয়। বিচারক রায় পড়া শুরু করেন ৩টা ৪ মিনিটে। রায় পড়া শেষ হয় ৩টা ৪৫ মিনিটে। রায় ঘোষণার সময় সুরাইয়া আক্তার রিশার মা ও তার ছোটবোন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুনানি শেষে রায় ঘোষণার জন্য ৬ অক্টোবর নির্ধারণ করেছিলেন আদালত। তবে ওই দিন আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির না করায় রায় ঘোষণা করা হয়নি। তখন রায় ঘোষণার জন্য ১০ অক্টোবর দিন ধার্য করেন বিচারক।
রায় ঘোষণার আগে ওবায়দুলের ফাঁসির দাবিতে আদালত চত্বরে সমবেত হন উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা। বেলা আড়াইটার দিকে ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে তারা আদালত চত্বরে আসেন। মামলার সাক্ষী ও রিশা হত্যার প্রত্যক্ষদর্শী রাফি রহমান বলেন, আমাদের একটাই দাবি হত্যাকারীর ফাঁসি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, ওবায়দুলের মৃত্যুদন্ডের রায় শোনার পর আদালত চত্বরে কান্নায় ভেঙে পড়েন রিশার মা। তিনি বলেন, রায়ে আমি খুশি। ফাঁসির রায় যেন দ্রুত কার্যকর করা হয়। আমার মতো যেন আর কোনো মায়ের কোল খালি না হয়। এ সময় আদালতে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উইলস লিটলের অধ্যক্ষ আবুল হোসেন ও গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান আরেফুর রহমান টিটু।
রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক ইমরুল কায়েশ বলেন, ঘটনাটি একটি অসম প্রেম বলে মনে হয়েছে। ভালোবাসা যেন সহিংসহতায় রূপ নিতে না পারে সে জন্য আসামির সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদন্ড দেওয়াই শ্রেয়। তিনি আরও বলেন, ওবায়দুল হচ্ছেন একজন টেইলার আর রিশার বাবা একজন ব্যবসায়ী। সে ভালোবাসতে পারে, কিন্তু ভালোবাসা যেন এমন সহিংসতায় রূপ নিতে না পারে।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ২৪ আগস্ট দুপুরে রিশাকে ছুরিকাঘাত করা হয়। এরপর তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৮ আগস্ট তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় রিশার মা তানিয়া হোসেন বাদী হয়ে রমনা থানায় মামলা করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের শুরুর দিকে ইস্টার্ন মল্লিকা শপিং কমপ্লেক্সের বৈশাখী টেইলার্সে পোশাক বানাতে দেয় রিশা। ওই টেইলার্সের রসিদে বাসার ঠিকানা ও তার মায়ের মোবাইল নম্বর দেওয়া ছিল। সেখান থেকে মোবাইল নম্বর নিয়ে টেইলার্সের কাটিং মাস্টার ওবায়দুল খান রিশাকে উত্ত্যক্ত করা শুরু করে। পরে ফোন নম্বরটি বন্ধ করে দিলে স্কুলে যাওয়ার পথে রিশাকে উত্ত্যক্ত করতে থাকে সে। তার প্রেমের প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় রিশাকে ছুরিকাঘাত করে ওবায়দুল খান। ২০১৬ সালের ১৪ নভেম্বর মামলার তদন্ত শেষে ওবায়দুল খানকে একমাত্র আসামি করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রমনা থানার পুলিশ পরিদর্শক আলী হোসেন। এর পরের বছর ১৭ এপ্রিল আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। মামলায় ২৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ২১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে।##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।