পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা সক্ষমতা সূচকে দুই ধাপ পিছিয়েছে বাংলাদেশ। এ বছরের প্রতিবেদনে ১৪১টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১০৫তম। গত বছর ১৪০ দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ছিল ১০৩তম। মূলত একটি দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিবেশ কতটা সহায়ক এবং প্রতিযোগিতায় সক্ষম, সেটাই এই সূচক দিয়ে বোঝানো হয়।
গতকাল ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম (ডব্লিউইএফ) সারা বিশ্বে একযোগে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বা গ্লোবাল কম্পিটিটিভনেস রিপোর্ট (জিসিআর) প্রকাশ করেছে। ডব্লিউইএফের পক্ষে বাংলাদেশে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে। এ উপলক্ষে রাজধানীতে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
একটি দেশের অবস্থান বিচারের জন্য প্রতিষ্ঠান, অবকাঠামো, তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার, সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, স্বাস্থ্য, দক্ষতা, পণ্য বাজার, শ্রম বাজার, আর্থিক ব্যবস্থা, বাজারের আকার, বাজারের গতিশীলতা, উদ্ভাবনী সক্ষমতা- এই ১২টি মানদন্ড ব্যবহার করেছে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম। এসব মানদন্ডের ভিত্তিতে ১০০ ভিত্তিক সূচকে সব মিলিয়ে এবার বাংলাদেশের স্কোর হয়েছে ৫২, যা গতবছরের স্কোরের চেয়ে শূন্য দশমিক ১ কম। গত বছর বাংলাদেশের অবস্থান একধাপ অবনমন হয়েছিল। ২০১৮ সালে ১৪০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ১০৩তম অবস্থানে ছিল। তার আগে ২০১৭ সালে ১৩৫ দেশের মধ্যে ছিল ১০২তম অবস্থানে।
সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম প্রতিবেদন প্রকাশের সময় বলেন, ১২টি সূচকের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১০টিতেই পিছিয়েছে। মাত্র দুটিতে এগিয়েছে। যেসব সূচকে বাংলাদেশ পিছিয়েছে, সেগুলো হলো সামষ্টিক অর্থনীতি, শ্রমবাজার, তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার, অবকাঠামো, দক্ষতা, প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ, আর্থিক ব্যবস্থাপনা, ব্যবসায় বৈচিত্র্য, উদ্ভাবন এবং বাজারের আকার। অন্যদিকে এগিয়েছি মাত্র পণ্যবাজার ও স্বাস্থ্যসূচকে।
বিশ্বে প্রতিযোগিতা সক্ষমতার দিক দিয়ে এবারের সূচকের শীর্ষে উঠে এসেছে সিঙ্গাপুর; এশিয়ার এই দেশটির স্কোর ৮৪ দশমিক ৮। এরপরই রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, হংকং, নেদারল্যান্ডস, সুইজারল্যান্ড, জাপান, জার্মানি, সুইডেন, যুক্তরাজ্য ও ডেনমার্ক। এই দশটি দেশই গতবারের সূচকে শীর্ষ দশে ছিল, এবার শুধু অবস্থানের হেরফের হয়েছে।
এই সূচকে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবার চেয়ে এগিয়ে আছে ভারত। ৬১ দশমিক ৪ স্কোর নিয়ে ভারত আছে সূচকের ৬৮ নম্বরে। তবে গতবারের চেয়ে ১০ ধাপ অবনমন ঘটেছে দেশটির। শ্রীলঙ্কা ৫৭ দশমিক ১ স্কোর নিয়ে সূচকের ৮৪তম, নেপাল ৫১ দশমিক ৬ স্কোর নিয়ে সূচকের ১০৮তম এবং ৫১ দশমিক ৪ স্কোর নিয়ে পাকিস্তান সূচকের ১১০ নম্বরে রয়েছে।
খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, প্রতিযোগিতা সক্ষমতায় বাংলাদেশ চতুর্মুখী সমস্যায় আটকে গেছে। একদিকে অবকাঠামো তৈরি করতে হচ্ছে, আবার দক্ষ মানবসম্পদ গঠনের কথাও চিন্তা করতে হচ্ছে। এ ছাড়া সুশাসনের অভাবও আছে। তিনি বলেন, বড় ধরনের সংস্কার করা না হলে উন্নত দেশ বা উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ হওয়া কঠিন হবে।
বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা সক্ষমতা সূচক প্রতিবেদনের বাংলাদেশ অংশের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করতে গিয়ে সিপিডি প্রতিবারের মতো এবারও বাংলাদেশ ব্যবসায় পরিবেশ সমীক্ষা ২০১৯ করেছে। এই সমীক্ষা ঢাকা, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরের ৭৭টি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের ওপর জরিপ করা হয়। সুশাসন সম্পর্কে জরিপের ফলাফলে বলা হয়েছে, ৭৮ শতাংশ উত্তরদাতা জানিয়েছেন, সরকারি ঠিকাদারি কাজ পেতে ঘুষ দিতে হয়েছে। ৭৬ শতাংশ উত্তরদাতা জানিয়েছেন, আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম পরিচালনায় ঘুষ দিয়েছেন। ৭৪ শতাংশই কর পরিশোধের সময় ঘুষ দিয়েছেন।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্য যদি একটি বিশেষ গোষ্ঠীর হাতে থাকে, তাহলে একচেটিয়া হয়। এটি অর্থনীতির জন্য ভালো নয়। একক ব্যবসায়ীর হাতে যদি একটি ব্যবসা খাত থাকে, তাহলে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা ওই ব্যবসা খাতে আসতে পারেন না। ভোক্তাকে বেশি দাম দিয়ে ওই পণ্য বা সেবা কিনতে হয়।
চলমান দুর্নীতি বিরোধি অভিযান প্রসঙ্গে ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, দুর্নীতি অর্থনীতির জন্য অভিশাপ। এতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের ব্যবসার খরচ বাড়িয়ে দেয়। দুর্নীতির কারণে প্রবৃদ্ধি কম হচ্ছে। তাই হঠাৎ হঠাৎ নয় সারাবছরই এই ধরনের অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে। হঠাৎ হঠাৎ অভিযান হলে একটি চক্রের হাত থেকে দুর্নীতি আরেক চক্রের হাতে চলে যায়। কিন্তু অর্থনীতি তার সুফল পায় না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।