Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঢাকায় সমাবেশ করবে বিএনপি

ফারুক হোসাইন | প্রকাশের সময় : ৯ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিভাগীয় সমাবেশ করেছে বিএনপি। অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোও টানা ১৭দিন মানববন্ধন করেছে। এসব কর্মসূচি থেকে বেগম জিয়ার মুক্তির দাবির পাশাপাশি সরকারের পতন এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি তুলেছেন দলটির শীর্ষ নেতারা। দাবি আদায়ে রাজপথে নামারও ঘোষণা দিয়েছেন কেউ কেউ। পূর্বঘোষিত বিভাগীয় কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে সফল হওয়ায় এবার রাজধানী ঢাকাতে সমাবেশ করার পরিকল্পনা করছে বিএনপি। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে তিনটি সমাবেশের টাগের্ট করেছে দলটি। একইসাথে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নতুন নির্বাচনের দাবিতে জেলা-উপজেলায়ও কর্মসূচি ঘোষণার পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে জানা যায়।

বিএনপি সূত্রে জানা যায়, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি, রোহিঙ্গা ইস্যুতে সরকারের কূটনৈতিক জোরালো তৎপরতা না থাকা, সম্প্রতি ভারতের সাথে আবারো সাতটি সমঝোতা ও চুক্তি হলেও তিস্তা ও সীমান্তে হত্যা বন্ধে কোনো সমাধান না হওয়া এবং বাণিজ্যে ভারসাম্যহীনতার প্রতিবাদে কর্মসূচি দিবে রাজপথের বিরোধী দল বিএনপি। ভারতের সাথে বাংলাদেশের চুক্তি ইস্যুতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির পক্ষে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আজ দুপুরে প্রতিক্রিয়া জানানো হবে।

বিএনপির একজন দায়িত্বশীল নেতা জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফরে যাওয়ার আগে প্রতিবারই দেশের মানুষ প্রত্যাশা করে তিস্তাসহ ঝুলন্ত বাংলাদেশের ইস্যুগুলোর সমাধান হবে। কিন্তু প্রতিবারই তিনি শুধু ভারতের চাওয়াগুলো পূরণ করে আসেন কিন্তু বিনিময়ে বাংলাদেশ কিছুই পায় না। এবারও তার সফরে বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী এবং দেশের জন্য ক্ষতিকর কিছু চুক্তি করে এসেছেন। আমাদের তিস্তার পানির বিষয়টি তিনি দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে না তুলে উল্টো ফেনী নদীর পানি দিয়ে এসেছেন। এছাড়া দেশের উপকূলে ভিনদেশের পর্যবেক্ষণ রাডার স্থাপনের চুক্তি করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব হুমকীর মধ্যে ফেলেছেন। এসব বিষয়ে ইতোমধ্যে আমাদের দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বিএনপির অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। বুধবার স্থায়ী কমিটির সদস্যরা আনুষ্ঠানিকভাবে সার্বিক বিষয় তুলে ধরবে।

সমাবেশের বিষয়ে বিএনপির ওই নেতা জানান, আগামী নভেম্বর ও ডিসেম্বরে তিনটি জনসভা করার পরিকল্পনা রয়েছে বিএনপির। আগামী ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস, ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের উদ্যোগে ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘ভোট ডাকাতির’ দিবসে তিনটি সমাবেশ করার কথা ভাবছে দলটি। এছাড়াও খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে আবারো সাদামাটা কর্মসূচিতেই থাকছে বিএনপি। মানববন্ধন, বা বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি আসতে পারে বলে সংশ্লিষ্টদের সাথে আলাপকালে জানা গেছে।

হালনাগাদ হচ্ছে সদস্য সংগ্রহের তথ্য : ২০১৭ সালের জুলাইয়ে শুরু হওয়া বিএনপির প্রাথমিক সদস্য সংগ্রহ অভিযান এবং পুরনো সদস্য নবায়ন কার্যক্রমের হালনাগাদ তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু করেছে বিএনপি। কয়েকদিন আগে এ লক্ষ্যে তিনজন যুগ্ম মহাসচিবের নেতৃত্বে তিনটি কেন্দ্রীয় টিম গঠন করা হয়েছে। এসব টিমের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদেরকে ইতোমধ্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নির্দেশনা দেয়ার পর তারা কার্যক্রম শুরু করেছেন। ২০১৭ সালের ১ জুলাই রাতে বিএনপির নতুন সদস্য সংগ্রহ এবং পুরনো সদস্য নবায়ন কার্যক্রম উদ্বোধন করেন দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। এরপর নতুন সদস্য সংগ্রহে ব্যাপক সাড়া পড়ে বলে বিএনপির নেতারা জানান। কিন্তু রোহিঙ্গা ইস্যু, পরের বছর জাতীয় নির্বাচনের ব্যস্ততা, খালেদা জিয়ার মামলা-হাজিরা পরবর্তী কারাবন্দিসহ রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকায় সদস্য সংগ্রহের সামগ্রিক তথ্য সংগ্রহ করতে পারেনি বিএনপি। সর্বমোট কতজন নতুন সদস্য ফরম পূরণ এবং কতজন পুরনো সদস্য নবায়ন করেছেন সে সম্পর্কে এখন তথ্য হালনাগাদ করছে দলটি। এ জন্য রাজশাহী, রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগে সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বরিশাল খুলনা, ফরিদপুর, সিলেট বিভাগে খায়রুল কবির খোকন এবং ঢাকা, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম বিভাগে হাবিব উন নবী খান সোহেলকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এছাড়াও তথ্য হালনাগাদ করতে প্রত্যেক জেলা ও মহানগরে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটিতে যারা আছেন তাদের মধ্যে দুইজন সদস্যকেও দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তারা জেলা-উপজেলা পর্যায়ে গিয়ে সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে তথ্য সংগ্রহ করবেন এবং সদস্য ফরমের বইয়ের মুড়ি অবিলম্বে দলীয় প্রধানের কাছে জমা দিবেন। ইতোমধ্যে তিনটি টিমের প্রধান ও সংশ্লিষ্ট জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী কমিটির নেতাদের সাথে বৈঠক করেছেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আগামী নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে দলনেতাদেরকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, দুই বছর আগে নতুন সদস্য সংগ্রহ ও পুরনো সদস্য নবায়ন কার্যক্রম শুরু করেছিল। কিন্তু নানা কারণে সেসময় সব তথ্য কেন্দ্রীয়ভাবে সংগ্রহ করা যায়নি। এখন নতুন করে আমরা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রমের তথ্য হালনগাদ শুরু করেছি।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিএনপির সদস্য সংগ্রহ এবং নবায়ন কার্যক্রম উৎসাহ উদ্দীপনার মাধ্যমে শুরু হয়েছিল। এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য ছিল নেতাকর্মীদের মাঝে আরো বেশি কর্মস্পৃহা তৈরি এবং নতুন সদস্য সংগ্রহ করা। যার উদ্বোধন করেছিলেন আমাদের দলের সম্মানিত চেয়ারাপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। কিন্তু নানা কারণে ‘প্রাথমিক সদস্য নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ’ অভিযানের সার্বিক তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। সে বিষয়ে এখন কার্যক্রম চলছে।



 

Show all comments
  • Jafar Ahmad ৯ অক্টোবর, ২০১৯, ৩:০৮ এএম says : 1
    তোরা আর কতো সমাবেশ সমাবেশ খেলা করবি.....
    Total Reply(0) Reply
  • Monir ৯ অক্টোবর, ২০১৯, ৩:০৯ এএম says : 1
    সমাবেশ করে লাভ হবে না।
    Total Reply(0) Reply
  • Masum Khan ৯ অক্টোবর, ২০১৯, ৩:০৯ এএম says : 0
    মাফ চেয়ে নাও ।সন্ধার আগে চলে যেতে হবে ।এই সমাবেশের কোন মূল্য নাই।
    Total Reply(0) Reply
  • দীনমজুর কহে ৯ অক্টোবর, ২০১৯, ৮:৩৩ এএম says : 0
    নিয়োমতান্ত্রিক আন্দলন করুন *গঠন মুলক সমালোচনা করুন*দেশ ওজনগনের সার্থবিরোধী কর্মকান্ড রুখে দাড়ান* হিংসাত্বক রাজনিতি পরিহর করুন*মসনদে যেতে না পারলেও জনগনের ভালবাসা পাবেন***
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ