Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়াই সরকারের লক্ষ্য

পূজামন্ডপ পরিদর্শনকালে প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৮ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জঙ্গি, সন্ত্রাস, মাদক, দুর্নীতি থেকে দেশকে মুক্ত রাখা বর্তমান সরকারের লক্ষ্য। বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা যেন অব্যাহত থাকে এবং দেশে শান্তি বজায় রাখতে সবার সহযোগিতা চেয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক চেতনা ধারণ করে চলছে বলেই সব ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষ মিলেমিশে বাস করছে।
গতকাল শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশনের পূজামন্ডপ পরিদর্শনকালে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। পরে প্রধানমন্ত্রী ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির ও ঢাকা পূজামন্ডপও পরিদর্শন করেন এবং সেখানেও সনাতন ধর্মালম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। সেখানে প্রধানমন্ত্রীকে উলুধ্বনি দিয়ে স্বাগত জানায় সনাতনধর্মাবলম্বীরা।
ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে স্বাধীনভাবে ধর্ম পালন ও সম্প্রীতির কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় একটা অর্জন, আমরা অসাম্প্রদায়িক চেতনা নিয়ে চলতে শিখেছি। সব সময় বলি ধর্ম যার যার উৎসব সবার। আমাদের উৎসবগুলোতে সবাই আমরা এক হয়ে উদযাপন করি। এটাই হচ্ছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় একটা অর্জন, আমরা অসাম্প্রদায়িক চেতনা নিয়ে চলতে শিখেছি।


তিনি বলেন, বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক চেতনার। বাংলাদেশে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলে এক হয়ে আমরা পথ চলি। প্রত্যেকের ধর্মকে আমরা সম্মান করি এবং আমরা চাই আমাদের দেশে শান্তি বজায় থাকুক। এদেশে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদক, দুর্নীতি- এ ধরনের যেসব ব্যাধি সমাজকে নষ্ট করে, দেশকে নষ্ট করে, পরিবারকে নষ্ট করে, পরিবারের জীবনকে অতিষ্ঠ করে, তা যেন না থাকে।


তিনি বলেন, বাংলাদেশে শান্তি বজায় থাকবে। বাংলাদেশের সমৃদ্ধি হবে। বাংলাদেশের উন্নতি হবে। বাংলাদেশের অগ্রগতি অব্যহত থাকবে এটাই আমরা চাই।
বাংলাদেশের ধর্মীয় সম্প্রীতির চিত্র তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে চমৎকার একটা পরিবেশ যে- আমাদের ঈদের জামাত যখন অনুষ্ঠিত হয়, তখন আমাদের হিন্দু সম্প্রদায়ের যুব সমাজ সেখানে কিন্তু নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকে। আবার যখন পূজা-পার্বন হয়, আমাদের মুসলমান সমাজের যুবকরা সেখানে উপস্থিত থাকে, নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকে।
তিনি আরও বলেন, একটা সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশ আমরা সৃষ্টি করতে পারি। এটাই হচ্ছে সব ধর্মের মূলকথা- শান্তি, মানবতা। এই শান্তি, মানবতার লক্ষ্য নিয়েই বাংলাদেশ গড়ে উঠেছে। বাংলাদেশ এভাবে এগিয়ে যাবে, এটা আমরা বিশ্বাস করি।
মহান মুক্তিযুদ্ধে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে এদেশের সব ধর্মের মানুষ, অর্থাৎ হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান- সব ধর্ম এক হয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করে বুকের রক্ত বিলিয়ে দিয়ে এই বাংলাদেশ স্বাধীন করেছে।


শেখ হাসিনা আরও বলেন, সেই স্বাধীন বাংলাদেশে আমরা সবসময় চেয়েছি প্রতিটি ধর্মের মানুষ তার নিজ নিজ ধর্ম স্বাধীনভাবে, সম্মানের সঙ্গে পালন করতে পারবে। সেই পরিবেশটা সৃষ্টি করা। আমরা তা করতে পেরেছি। অন্তত এটুকু বলতে পারি- আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসে, তখন সে সুন্দর পরিবেশটা সৃষ্টি হয়। সম্প্রীতি-সমৃদ্ধির জন্য প্রার্থণা করতে হিন্দু ধর্মালম্বীদের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পূজায় আপনারা প্রার্থনা করবেন যেন বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকে। এই যে অসাম্প্রদায়িক চেতনা নিয়ে সৌহার্দপূর্ণ ভাবে যার যার ধর্মপালন করার চমৎকার পরিবেশ সৃষ্টি করতে পেরেছি, এটা যেন চিরদিন অব্যাহত থাকে। আর সবার জীবনমান যেন উন্নত হয়।


দিল্লি সফরে থাকার সময় সেখান থেকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীসহ যৌথভাবে রামকৃষ্ণ মিশনের ছাত্রাবাস এবং একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উদ্বোধন করার কথা উল্লেখ করেন তিনি। এর আগে রামকৃষ্ণ মিশনে পৌঁছালে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশন, ঢাকার প্রধান স্বামী পূর্ণাত্মানন্দজী মহারাজ।


পরে ঢাকেশ্বরী মন্দির ও পূজামন্ডপ পরিদর্শনের সময়ও বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিহত হওয়া পরবর্তী বৈরী সময়ের কথা তুলে ধরে বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর এদেশের মানুষের ওপর অনেক নির্যাতন, অত্যাচার হয়েছে। ধর্ম পালনের স্বাধীনতা হারিয়ে ফেলেছিল প্রায়। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর থেকে জাতির পিতার আর্দশ-চেতনা ধারণ করে আমরা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি অসাম্প্রদায়িক চেতনায়। যেখানে সব ধর্মের মানুষ তার ধর্ম স্বাধীনভাবে পালন করতে পারবে। সবাই উৎসব উদযাপন করতে পারবে। সে কারণে আমরা এই সেøাগানটা নিয়ে এসেছি- ধর্ম যার যার উৎসব সবার।


প্রতিটি ধর্মের মর্মবাণী প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, প্রতিটি ধর্মের মর্মবাণী কিন্তু একটাই। সেখানে ভাতৃত্বের কথা বলা আছে। সহনশীলতার কথা বলা আছে। শান্তির কথা বলা আছে। ছোট ছোট করে অনেক জায়গায় পূজামন্ডপ না করে বড় পরিসরে এক জায়গায় আয়োজনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী। ঢাকেশ্বরী মন্দির ও পূজামন্ডপ পরিদর্শনের সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন, স্থানীয় সংসদ সদস্য হাজী সেলিম, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি মিলন কান্তি দত্ত, সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার চ্যাটার্জী প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন মহানগর পূজা কমিটির সভাপতি শৈলেন্দ্রনাথ মজুমদার।#



 

Show all comments
  • Sohanur Rahman ৮ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:৩০ এএম says : 0
    দুর্নীতির জন্য অাওয়ামীলীগটা সারা বিশ্বের মধ্যে রোল মডেল।।।
    Total Reply(0) Reply
  • Manjurul Alam Shahin ৮ অক্টোবর, ২০১৯, ১:২৪ এএম says : 0
    ১৯৯৬ সালেও একই ভাষন শুনেছিলাম,,, পার্থক্য শুধু মাঝখানে ২৪ বছর চলে গেছে। আর এখন আমার চুলও পাকন ধরছে,,,
    Total Reply(0) Reply
  • Parvez Musharaf ৮ অক্টোবর, ২০১৯, ১:২৪ এএম says : 0
    সুন্দর নিরপেক্ষ সুষ্ঠু ভোটে নির্বাচিত হয়ে সবসময় প্রধানমন্ত্রী থাকা আওয়ামীলীগের লক্ষ,, বলেছেন আমাদের সবার প্রিয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
    Total Reply(0) Reply
  • Saiful Islam Shishir ৮ অক্টোবর, ২০১৯, ১:২৫ এএম says : 0
    লোক দেখানো প্রচার বন্ধ করুন,,, আবরার হত্যার জরিত সবাই কে ফাঁসি দিন।
    Total Reply(0) Reply
  • Adel Jabed ৮ অক্টোবর, ২০১৯, ১:২৫ এএম says : 0
    মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ক্যাসিনো বন্ধ করলে কি দুর্নীতি বন্ধ হবে আপনার কাছে প্রশ্ন রইলো
    Total Reply(0) Reply
  • সাইফুল ইসলাম ৮ অক্টোবর, ২০১৯, ১:২৬ এএম says : 0
    মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর চলমান দুর্নীতি বিরোধী পদক্ষেপ অত্যন্ত প্রশংসার। এভাবে অব্যাহত থাকবে আশা করি।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ