Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মাদক সেবনের কথা প্রকাশ করায় নয়ন খুন

হত্যা রহস্য উদঘাটন করল পিবিআই

বরিশাল ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : ৭ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:০০ এএম


বরিশালের উজিরপুরের স্কুলছাত্র ইসরাফিল হাওলাদার নয়ন হত্যার ক্লু উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই। মাদক সেবনের তথ্য ফাঁস করে দেয়ার কারনেই নয়নকে হত্যা করা হয়েছে। উজিরপুর থানা পুলিশ থেকে মামলার তদন্ত পিবিআইতে আসার ১৫ দিনের মধ্যে হত্যাকান্ডে সরাসরি জড়িত আমিন’কে আটক করে ইন্সপেক্টর মাহফুজুর রহমান। আমিনকে আদালতে হাজির করা হলে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দী দিয়েছে।

বাদি সোবাহান হাওলাদার অভিযোগ করেন, মামলার শুরুতেই বাবুগঞ্জ থানা পুলিশ তদন্তে গাফলতি করছিল। তারা আসল খুনিদের বাদ দিয়ে নিরপরাধীদের জড়িত করার চেষ্টা করে। পরে পিবিআই’র এসপি মো. মিজানুর রহমানের তদরকিতে তদন্ত শুরু হলে একজনকে আটকের পর বেড়িয়ে আসে হত্যাকান্ডের আসল রহস্য।

তদন্তে ভরসাকাঠী গ্রামের ওসমান হাওলাদারের ছেলে আশিক (২২), একই গ্রামের নুরুল ইসলামের পুত্র আমিনুল ইসলাম আমিন (১৭) ও বাবুগঞ্জ উপজেলার রমজানকাঠী গ্রামের ইদ্রিস মিয়ার পুত্র মমিন (১৭)-এর নাম বেরিয়ে এসেছে। পিবিআই পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, ড্যান্ডি সেবনের তথ্য ফাঁস করে দেয়ার কারনেই মাদকসেবীরা নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করে স্কুল ছাত্র নয়নের লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেয়। ড্যান্ডি সেবনের তথ্য ফাঁস করার পর গত ২৭ এপ্রিল দুপুরে ভরসাকাঠী এলাকায় একটি ব্রীজের ওপর বসে নয়নকে হত্যার পরিকল্পনা করে আশিক ও সহযোগীরা। পরিকল্পনা অনুযায়ী সন্ধ্যায় নিজ বাড়ি থেকে নয়নকে ডেকে নিয়ে যায় বখাটে আশিক।

পিবিআই-এর হাতে সর্বশেষ আটক হওয়া আমিনুল ইসলাম আমিন আদালতে তার দেয়া স্বীকারোক্তি মূলকজবান বন্দীতে উল্লেখ করেছে, ‘আশিক নয়নকে ডেকে নেয়ার পর ভরসাকাঠী গ্রামে গীর্জাঘর নামে একটি পরিত্যক্ত ঘরে নয়নের হাত পা বেঁধে আটকে রেখে মারধর করে। তার কাছে থাকা মোবাইল ফোন দিয়ে চট্টগ্রামে নয়নের বাবাÑমায়ের কাছে মুক্তিপন বাবদ ২০ লাখ টাকা দাবি করে টাকা না দিলে নয়নকে মেরে ফেলা হবে বলেও হুমকি দেয়। রাত ৯ টার দিকে গীর্জাঘরের পাশে নদী পার হয়ে রমজানকাঠী গ্রামে মমিনদের বাড়ির পাশে পাটক্ষেতে নিয়ে যাওয়া হয় নয়নকে। সেখানে আমিনুল ও মমিনুল পা চেপে ধরে এবং আশিক একটি ধারালো ছুরি দিয়ে নয়নকে এলোপাথারি কুপিয়ে পরবর্তিতে মাথায় ইট দিয়ে আঘাতে মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরে লাশ বস্তায় ভরে ইট বেঁধে নদীতে ফেলে। হত্যাকান্ডের পর ঘাতকরা বাড়িতেই অবস্থান করছিল। ২৮ এপ্রিল সকাল ৬ টার দিকে রমজানকাঠী সন্ধ্যা নদীর পাশে বস্তাবন্দী নয়নের লাশ উদ্ধার হয়। এ ঘটনায় নয়নের পিতা সোবাহান হাওলাদার বাদি হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান জানিয়েছেন, মামলা তদন্ত করে বাদি যাতে ন্যায় বিচার পায় সে লক্ষে কাজ করছি। যে ৩ জনের নাম উঠে এসছে, তাছাড়া আরো কেউ জড়িত থাকলেও তা তদন্ত বেড়িয়ে আসবে বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, উজিরপুরের বামরাইলের ভরসাকাঠী গ্রামের সোবাহান হাওলাদারের পুত্র বামরাইল এবি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর মেধাবী ছাত্র ইসরাফিল হাওলাদার নয়ন হত্যার প্রতিবাদে ও হত্যাকারিদের গ্রেফতার দাবিতে স্থানীয় ছাত্রÑজনতা সড়ক অবোরোধসহ নানা কর্মসূচি পালন করে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ