পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
২০১৮ সালে জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনে গৃহীত ৩৬৬টি সিদ্ধান্তের মধ্যে ৩৪০টি বাস্তবায়ন করেছে মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে স্বল্পমেয়াদী সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হয়েছে ৯৪ দশমিক ১২ শতাংশ, মধ্যমেয়াদি সিদ্ধান্ত ৮৯ দশমিক ৯২ শতাংশ এবং দীর্ঘমেয়াদী সিদ্ধান্ত ৯৪ দশমিক ৭৪ শতাংশ। সিদ্ধান্তের ৯২ দশমিক ৯০ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে। তবে এবার বেশি বাস্তবায়ন হলেও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হার মোটামুটি সন্তোষজনক। গত সপ্তাহে প্রকাশিত ডিসি সম্মেলনের কার্যবিবরণীতেও এই সিদ্ধান্তের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে সম্প্রতি চলতি বছরের ডিসি সম্মেলনের কার্যবিবরণীতে এতে বলা হয়।
গত ১৪ থেকে ১৮ জুলাই অনুষ্ঠিত জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনে ডিসিরা ডিসি ও ইউএনওর নেতৃত্বে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আয়কর কমিটি গঠন করার প্রস্তাব দেন। এই প্রস্তাবের পক্ষে তিনটি যুক্তি তুলে ধরা হয়। এ ধরনের কমিটি গঠন করা হলে আয়কর আদায়ের পরিমাণ বাড়বে, রাজস্ব ফাঁকি রোধ হবে এবং জনগণকে আয়কর প্রদানে উৎসাহিত করা যাবে। মাদারীপুরের ডিসির এই প্রস্তাব সম্মেলনে সিদ্ধান্ত আকারে গ্রহণ করা হয়। গত সপ্তাহে প্রকাশিত ডিসি সম্মেলনের কার্যবিবরণীতেও এই সিদ্ধান্তের কথা উল্লেখ রয়েছে।
গত বছরের জেলা প্রশাসক সম্মেলনে গৃহীত ৩৬৬টি সিদ্ধান্তের মধ্যে ৩৪০টি বাস্তবায়ন করেছে মন্ত্রণালয়গুলো। এর মধ্যে স্বল্পমেয়াদি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হয়েছে ৯৪ দশমিক ১২ শতাংশ, মধ্যমেয়াদি সিদ্ধান্ত ৮৯ দশমিক ৯২ শতাংশ এবং দীর্ঘমেয়াদী সিদ্ধান্ত ৯৪ দশমিক ৭৪ শতাংশ। সিদ্ধান্তের ৯২ দশমিক ৯০ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হার মোটামুটি সন্তোষজনক। এবার ডিসি সম্মলনে আলোচনার জন্য ৫০টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ সম্পর্কিত মোট ৩৩৩টি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়।
জেলা প্রশাসক (ডিসি) এবং উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) নেতৃত্বে আয়কর কমিটি গঠনের বিরোধিতা করেছে দুই ক্যাডার কর্মকর্তাদের সংগঠন বিসিএস (ট্যাকসেশন) অ্যাসোসিয়েশন ও বিসিএস (কাস্টম অ্যান্ড ভ্যাট) অ্যাসোসিয়েশন। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের কাছে পাঠানো চিঠিতে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিজেদের ভ‚মি ব্যবস্থাপনার কাজে মনোনিবেশ করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। উভয় সংগঠন ডিসিদের অযৌক্তিক দাবির প্রতি ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। সম্মেলনের আগেই ডিসিরা বিভিন্ন প্রস্তাব মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠান। সেসব প্রস্তাব সম্মেলনে উপস্থাপন করা হয়। আলোচনা শেষে তা সিদ্ধান্ত আকারে গ্রহণ করা হয় অথবা বাতিল করা হয়। সম্মেলন শেষে গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগে পাঠানো হয় বাস্তবায়নের জন্য। আয়কর কমিটি গঠনের সিদ্ধান্তের বিষয়টিও বাস্তবায়নের জন্য অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে পাঠিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগই এ সংক্রান্ত চ‚ড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।
বিসিএস (ট্যাকসেশন) অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মো. নুরুজ্জামান খান বলেন, ডিসি সম্মেলনে জেলা পর্যায়ে ডিসি এবং উপজেলা পর্যায়ে ইউএনওর নেতৃত্বে আয়কর কমিটির যে সিদ্ধান্ত হয়েছে আমরা তার প্রতিবাদ জানিয়েছি। দুই সংগঠন যৌথভাবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে আমাদের অবস্থান তুলে ধরেছি। আমরা মনে করি যার দায়িত্ব তাকেই পালন করা উচিত। বিসিএস ট্যাকসেশন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সেলিম আফজাল বলেন, প্রশাসন অন্য ধরনের কাজ করে। তারা আমাদের সহযোগী সংগঠন, আমরাও তাদের সহযোগী সংগঠন। কারও অন্যের কাজে অনধিকার হস্তক্ষেপ কাম্য নয়।
বিসিএস (ট্যাকসেশন) অ্যাসোসিয়েশন এবং বিসিএস (কাস্টম অ্যান্ড ভ্যাট) অ্যাসোসিয়েশনের যৌথ স্মারকলিপি বা অবস্থানপত্রে বলা হয়েছে, সরকার পরিচালনার কাজ নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয়তার নিরিখেই ২৮টি ক্যাডার সৃষ্টি করা হয়েছে। প্রত্যেক ক্যাডারের নিজস্ব কাজের পরিধি ও প্রকৃতি রয়েছে। রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী সরকারের অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আহরণের কাজ পরিচালিত হয় বিসিএস (ট্যাকসেশন) ও বিসিএস (কাস্টম অ্যান্ড ভ্যাট) ক্যাডারের মাধ্যমে। এই দুটি ক্যাডারের কর্মকর্তারা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নির্দেশনা অনুসরণ করে নিজস্ব আইনের আওতায় লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব আদায় করেন। বিভিন্ন আইনে রাজস্ব আদায়ের ক্ষমতা এই দুটি ক্যাডারের ওপর ন্যস্ত করা হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের দাপ্তরিক নিয়ন্ত্রণ উপজেলা পর্যায়ে বিস্তৃত। ডিসি সম্মেলনে ডিসি এবং ইউএনওদের দিয়ে কমিটি করে রাজস্ব আদায় তদারকি করার সিদ্ধান্ত অন্যান্য পেশাভিত্তিক প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব আইনের আওতায় পরিচালিত কাজের ওপর অবৈধ ও এখতিয়ার বহির্ভ‚তই নয়, এর মাধ্যমে রাজস্ব আহরণের কাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। সংগঠন দুটি রাজস্ব বোর্ডে অস্থিরতা সৃষ্টির এই তৎপরতা খতিয়ে দেখার আহ্বান জানিয়েছে।
দুই সংগঠনের যৌথ অবস্থানপত্রে আরও বলা হয়েছে, প্রশাসন ক্যাডার তাদের ওপর ন্যস্ত ভ‚মি রাজস্ব আহরণের ক্ষেত্রে কতটা পেশাদারিত্বের স্বাক্ষর রেখেছে তা বিবেচনায় আনা দরকার। ভ‚মি ব্যবস্থাপনা ও এর রাজস্ব আহরণে যে অব্যবস্থাপনা বিরাজ করছে সে বিষয়ে মনোনিবেশ না করে নতুন দায়িত্ব পাওয়ার দাবি উদ্দেশ্যমূলক। রাজস্ব সংস্থানকারী দুটি ক্যাডারের কর্মকর্তাদের মনোবল নষ্টকারী এ ধরনের কর্মকান্ড উন্নয়ন ব্যাহত করবে বলে সংগঠন দুটি মনে করে। এ ধরনের কর্মকান্ড থেকে তাদের বিরত রাখার জন্য নীতি-নির্ধারক মহলের মনোযোগ আকর্ষণ করেছেন তারা। এখতিয়ার বহির্ভ‚ত প্রস্তাবকে আমলে না নেয়ার জন্যও ওই দুই সংগঠনের নেতারাা অনুরোধ করেছেন।
গত জুলাই মাসে অনুষ্ঠিত ডিসি সম্মেলনে ৩৩০টি প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়েছিল। এসব প্রস্তাবের অনেকগুলোই পরে সিদ্ধান্ত আকারে গ্রহণ করা হয়নি। এসব প্রস্তাবের মধ্যে প্রশাসন ক্যাডার ছাড়া অন্যান্য ক্যাডারের স্বার্থ জড়িত রয়েছে বলে সমালোচনা রয়েছে। এমনই একটি প্রস্তাব ছিল ডিসিদের অধীনে বিশেষায়িত সার্বক্ষণিক পুলিশ ফোর্স নিয়োগের। কক্সবাজার, কুমিল্লা, বাগেরহাট ও চুয়াডাঙ্গার ডিসি একই প্রস্তাব তুলেছিলেন। ডিসিদের অধীনে সার্বক্ষণিক পুলিশ ফোর্সের পক্ষে তাদের যুক্তি ছিল ডিসিদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত দেশি-বিদেশি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও প্রতিনিধিদের সাক্ষাৎ হয়। তাদের নিরাপত্তা জোরদার করা জরুরি। মোবাইল কোর্ট পরিচালনার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেটরা যেকোনো সময় প্রস্তাবিত ফোর্স ব্যবহার করতে পারবেন। ডিসি অফিসে অবস্থিত বিচারিক আদালতের সার্বিক নিরাপত্তাসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে পুলিশ ফোর্স একান্ত জরুরি। চারজন ডিসি একই প্রস্তাব উপস্থাপনের পরও এই প্রস্তাবটি সিদ্ধান্ত আকারে গ্রহণ করা হয়নি।
রংপুর জেলার ডিসি প্রস্তাবে বলেছেন, তিস্তা নদী পলি/বালু দ্বারা ভরাটের ফলে নদীর নাব্যতা হ্রাস পাওয়ায় বর্ষা মৌসুমে সামান্য বন্যায় তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়ে আবাদী জমিসহ বাড়িঘরের ব্যাপক ক্ষতি হয়। তিস্তা নদী খনন করা হলে বড় ধরনের বন্যা থেকে রক্ষা এবং মৎস্যজীবী পরিবারগুলো নদীতে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করতে পারে।
জেলা প্রশাসন একটি কালোত্তীর্ণ প্রতিষ্ঠান। ঔপনিবেশিক আমলের একেবার শুরুতে নানা বিবর্তনের মধ্য দিয়ে প্রায় আড়াইশ’ বছরে সমান গুরুত্ব নিয়ে সক্রিয় রয়েছে। স্বাধীন দেশে জেলাপ্রশাসনের কার্যপদ্ধতি অগ্রধিকার উভয়ই পরিবর্তিত হযেছে। সরকারের নীতি ও কর্মসূচি বাস্তবায়ন এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও জনকল্যাণের ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসন একটি অপরিহার্য প্রতিষ্ঠান। জেলার সামগ্রিকভাবে সরকারের অন্যতম প্রতিনিধি হচ্ছেন জেলা প্রশাসক। সরকারের সঙ্গে জেলা প্রশাসনের নিবিড় যোগাযোগ আমাদের রাষ্ট্রব্যবস্থাকে শক্তিশালী করেছে এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হয়েছে।
কালেক্টর হিসেবে জেলা প্রশাসকের অন্যতম কাজ হচ্ছে স্বচ্ছ, দক্ষ ও গতিশীল ভূমি ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা। পাশাপাশি অবৈধ দখলে থাকা সরকারি জমি উদ্ধার, নদী-নালা ও খাল-বিল থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং প্রকৃতি ও পরিবেশ রক্ষায় জেলা প্রশাসকদের তৎপর রাখা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।