পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
তিস্তা চুক্তির মুলো ঝুলেই থাকল। ২০১১ সালে ড. মনমোহন সিং তিস্তা চুক্তির প্রস্তুতি নিয়ে ঢাকায় এসে চুক্তি না করেই ফিরে গেছেন। ২০১৫ সালের জুনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঢাকা সফরে এসে ফেনী নদীর পানি দাবি করলে বাংলাদেশ থেকে জানানো হয় ‘তিস্তায় পানি এলে ভারতে ফেনী নদীর পানি পাবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের আগে গত ২ অক্টোবর ঢাকায় পররারাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে জানানো হয় দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে তিস্তাসহ ৫২ অভিন্ন নদীর পানি নিয়ে আলোচনা হবে। দেশের ১৬ কোটি মানুষ তাকিয়ে ছিলেন তিস্তা, রোহিঙ্গা ইস্যু, এনআরসি নিয়ে আলোচনা হবে। কিন্তু তেমন কিছুই মেলেনি; উল্টো বাংলাদেশের নিজস্ব নদী ফেনী নদীর পানি ভারতকে দিতে সমঝোতা স্মারকসহ সাতটি চুক্তি ও সমঝোতা সই হয়েছে। দিল্লির হায়দরাবাদ হাউজে গতকাল অনুষ্ঠিত হয় ঢাকা-নয়াদিল্লির মধ্য দ্বিপাক্ষিক শীর্ষ বৈঠক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বৈঠকে নিজ নিজ দেশের পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করেন। এছাড়া দুই প্রধানমন্ত্রী তিনটি যৌথ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। বৈঠকে সই হওয়া সমঝোতা স্মারকের আওতায় বাংলাদেশের ফেনী নদী থেকে পানি প্রত্যাহার করে নিতে পারবে ভারত। সেই পানি যাবে ত্রিপুরার সাবরুম শহরে পানি সরবরাহ প্রকল্পে।
দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তিগুলোর মধ্যে চারটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ), একটি স্ট্যান্টার্ড অপারেশন প্রসিডিউর (এসওপি), একটি চুক্তি এবং অপরটি একটি কর্মসূচির নবায়ন। এগুলো হচ্ছে- সমুদ্র উপকূলে নজরদারি (কোস্টাল সারভেইলেন্স সিস্টেম-সিএসএস) বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার ও ভারত সরকারের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক, ভারতের পণ্য পরিবহনে চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যবহার বিষয়ক চুক্তি সম্পর্কিত একটি এসওপি (স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর) স্বাক্ষর এবং ত্রিপুরায় সাবরুম শহরে পানি সরবরাহ প্রকল্পে ফেনী নদী থেকে থেকে ১ দশমিক ৮২ কিউসেক পানি প্রত্যাহার বিষয়ে বাংলাদেশের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং ভারতের জলশক্তি মন্ত্রণালয়ের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক। চুক্তি হয়েছে ভারত থেকে নেয়া ঋণের প্রকল্প বাস্তবায়নের (এলওসি) বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে একটি চুক্তি। এছাড়া হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটি সমঝোতা স্মারক, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময় কর্মসূচি বিষয়ে চুক্তি নবায়ন এবং যুব উন্নয়নে বাংলাদেশের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং ভারতের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার লক্ষে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়।
চুক্তি ও সমঝোতাপত্র বিনিময়ের পর শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি যৌথভাবে তিনটি প্রকল্প উদ্বোধন করেন। প্রকল্পগুলো হলো খুলনায় ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে ‘বাংলাদেশ-ভারত প্রফেশনাল স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট, ঢাকার রামকৃষ্ণ মিশনে বিবেকানন্দ ভবন এবং বাংলাদেশ থেকে ত্রিপুরায় এলপিজি আমদানি প্রকল্প। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিযোগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, ভারতে নিয়োজিত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মুয়াজ্জেম আলী প্রমুখ।
কয়েক বছর বন্ধ থাকার পর পূজা উপলক্ষে ৫০০ টন ইলিশ ভারতে রপ্তানির অনুমতি দেয় বাংলাদেশ। এই ইলিশ স¤প্রতি ভারতে পৌঁছেছে। ইলিশ পৌঁছানোর দুদিন দিন পরই নয়াদিল্লি বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয়। এরপরই দেশজুড়ে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়। এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চারদিনের সফরে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি যান। সেখানে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, রাঁধুনিকে বলেছি, পেঁয়াজ ছাড়া রান্না করতে। প্রধানমন্ত্রীর এ সফরে তিস্তা নিয়ে কোনো অগ্রগতি হবে না তা আগেই ভারতের ক‚টনৈতিক স‚ত্রে জানা গেছে। তবে ফেনী নদীর পানি ইস্যুতে নতুন ঘোষণার কথাও শোনা যাচ্ছিল। সমঝোতা স্মারকে তাই হলো।
ঐতিহাসিক হায়দ্রাবাদ হাউজে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পরে উভয়ের উপস্থিতিতে দুই দেশের মধ্যে এই স্মারক ও চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। বেলা সাড়ে ১১টায় এই দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শুরুর আগে দুই নেতা কিছুক্ষণ একান্তে কথা বলেন।
এর আগে, ২০১৫ সালের জুনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ সফর করেন। ওই সফরে দ্বিপাক্ষিক শীর্ষ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ফেনী নদীর পানি চান ভারতের মোদি। তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘তিস্তায় পানি এলে ভারতে ফেনীর পানি পাবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চার দিনের সরকারি সফরে বৃহস্পতিবার নয়া দিল্লি যান। টানা তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর এটাই তার প্রথম দিল্লি সফর। তিনি ২০১৭ সালের এপ্রিলে সর্বশেষ দিল্লি সফর করেন। আজ রবিবার প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।