পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাষ্ট্রের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিয়োগ নিয়ে বোমা ফাটালেন সিনিয়র আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক। দুর্নীতি দমন কমিশন, নির্বাচন কমিশন, আইন কমিশন, মানবাধিকার কমিশনে নিয়োগ নিয়ে তিনি কার্যত এই বোমা ফাটান। তিনি এগুলোকে উচ্চপদস্থ আমলাদের ‘রিটায়ারমেন্ট হোম’-এ পরিণত করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেন। উল্লেখ এই সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে গত কয়েক বছর থেকে কার্যত সরকারি দলের একান্ত অনুগতদের অবসরপ্রাপ্ত আমলা এবং বয়স্ক আমলা ও সাবেক বিচারপতিদের নিয়োগ দেয়ার সংস্কৃতি চলছে। এতে ওই সব প্রতিষ্ঠান নিজস্বতা হারিয়ে সরকারের আজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠানের পরিণত হয়েছে।
গতকাল ‘গুম নিয়ে জাতিসংঘের সুপারিশ ও বাস্তবতা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক বলেছেন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন সরকারের উচ্চপদস্থ আমলাদের ‘রিটায়ারমেন্ট হোম’-এ পরিণত হয়েছে। যেখানে তারা ৩ থেকে ৬ বছর ভালোভাবে থাকতে পারেন, বড় গাড়ি আছে, প্রচুর বিদেশ সফর আছে। কাজেই মানবাধিকার কমিশনের কাছে আগামী তিন বছর আমার কোনো প্রত্যাশা নেই। ওনারা আরামে থাকুক। তিনি বলেন, যে সমাজ বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড বা গুমের মাধ্যমে অপরাধ দমন করতে চায় সে সমাজের প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ভেঙে পড়তে বাধ্য। এখন আমরা ভেঙে পড়ার দ্বারপ্রান্তে চলে এসেছি। এরপর আর দুই পা দিলেই কিন্তু গভীর খাদ।
উল্লেখ, সম্প্রতি এই কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে নাসিমা বেগমকে নিয়োগ দেয়া হয়। এই নিয়োগের পর দেশের মানবাধিকার সংগঠনগুলো প্রতিবাদ করে বলেন, যার মানবাধিকার নিয়ে সামান্য জ্ঞান নেই এবং কোনো কর্মকান্ড নেই তাকেই জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান নিয়োগ দেয়া হয়।
রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে মৌলিক অধিকার সুরক্ষা কমিটি আয়োজিত সভায় তিনি বলেন, একজন ব্যক্তি যখন সহকারী সচিব হিসেবে থাকেন, তিনি উপ-সচিবের নির্দেশে কাজ করেন। উপ-সচিব হলে যুগ্ম-সচিবের নির্দেশ অনুযায়ী আদেশ তামিল করেন। সচিব পর্যায়ে গেলে মন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করেন। তিনি আরো বলেন, সরকারি আমলাতন্ত্রে এ সংস্কৃতি নেই যে, একজন কর্মকর্তা তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে দ্বিমত করবেন। দ্বিমত থাকলেও তারা চুপ করে থাকেন। অতএব, সাংবিধানিকভাবে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন পরিচালনা ও প্রতিনিধিত্বের ক্ষেত্রে তারা যোগ্য নন।
আমলাদের সংস্কৃতির চিত্র তুলে ধরে শাহদীন মালিক বলেন, একজন লোক ৩৫ বছর ধরে জ্বী হুজুর জ্বী হুজুর করে দক্ষতার সঙ্গে নির্দেশ তামিল করেন, মানবাধিকার কমিশনে থাকাবস্থায় কোনো নিয়মবহির্ভূত কাজের ব্যাপারে তিনি সরকারকে চ্যালেঞ্জ করবেন, রাষ্ট্রকে চ্যালেঞ্জ করবেন? এটি হতে পারে না। এটা হতেও দেখা যায় না।
সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক বলেন, উদ্বেগের জায়গা হচ্ছে আমরা টোটালি ‘ল’লেস সোসাইটির দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। যেখানে কোনো আইন নেই, আমাদের নিরাপত্তাবোধ থাকবে না, অন্যায়-অপরাধ হলে আইন অনুযায়ী কোনো বিচার হবে না। আমরা কিন্তু প্রতিদিন সেদিকে এগোচ্ছি।
ক্রস ফায়ার ও বিচারবহিভর্ভূত হত্যাকান্ডের নেতিবাচক চিত্র তুলে ধরে শাহদীন মালিক বলেন, যেসব দেশে আশির দশকে বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড বা গুম শুরু হয়েছিল সেসব দেশে কী হয়েছিল সেগুলো তারা দেখেন না কেন? ট্রাম্পের সবচেয়ে বড় মাথাব্যথা হচ্ছে সেন্ট্রাল আমেরিকা থেকে জনগণ আমেরিকায় চলে আসা। হন্ডুরাস, গুয়েতেমালা, নিকারাগুয়ে এসব দেশ থেকে হাজার হাজার, লাখ লাখ লোক আমেরিকায় আসতে চাইছে। আর ট্রাম্প তাদের ঠেকানোর চেষ্টা করছে। আশির দশকে এসব দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড শুরু হয়েছিল এরই ফল হচ্ছে এগুলো।
ক্যাসিনোর চিত্র তুলে দরে তিনি বলেন, ক্যাসিনো ব্যবসা পুলিশের নাকের ডগায় হচ্ছে অথচ পুলিশ বলছে তারা জানে না! চারদিকে দুর্নীতি হচ্ছে। এসব পচন শুরু হয়েছে বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড এবং গুম দিয়ে। এক্ষেত্রে বড় উদ্বেগ হচ্ছে এর আগে যেসব দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড এবং গুম তাদের থেকে আমরাও আমাদের ভবিষ্যতের চিত্র দেখতে পাই। সে সমাজ আমাদের কারো কাম্য নয়। সমাজে অবশ্যই অপরাধ আছে, অনিয়ম আছে, বিশৃঙ্খলা রয়েছে। তবে কোনো সমাজই আইনের বাইরে গিয়ে এসব সমস্যার সমাধান করতে পারেনি। অনেক দেশই মূর্খের মতো এটা ভেবেছে, কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। আমাদের দেশেও একটা ভাবনা এসেছে যে, দু’চারশ মানুষকে গুলি করে হত্যা করলেই মাদক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। এটা মোটেও সম্ভব নয়। কারণ এর আগে কোনো দেশ এ পথে অপরাধ দমন করতে পারেনি। কিন্তু এর প্রতিক্রিয়া হয়েছে ভয়াবহ।
নারীপক্ষের আহ্বায়ক শিরিন হকের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. সি আর আবরার, আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।