পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ক্যাসিনো ডন সেলিম প্রধানের জাপান বাংলাদেশ সিকিউরিটি প্রিন্টিং লিমিটেড নামের ভবনটি গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভুলতা-গোলাকান্দাইল নামক স্থানে সড়ক ও জনপথ বিভাগের ১৫ শতাংশ জমি দখল করে ওই ভবনটি বর্ধিত করা হয়েছিল। মহাসড়কের উপরে একপাশে ভবনটির একটি অংশ এবং অপরপাশে ভুলতা ফ্লাইওভারের একটি অংশ থাকায় ওই অংশ দিয়ে যানবাহন চলতে গিয়ে বাধাপ্রাপ্ত হতো। এতে করে ওই অংশে দিনরাত যানজট লেগেই থাকত। সড়ক ও জনপথ বিভাগ গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকবার উদ্যোগ নিয়েও মহাসড়ক দখল করে রাখা ভবনটি ভাঙতে পারেনি। সওজের একজন কর্মকর্তা জানান, যতবারই ভবনটি ভাঙার জন্য অভিযানের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে, ততবারই ঊর্ধ্বতন মহলের ফোনে তা আটকে গেছে। প্রশাসন ব্যর্থ হয়েছে। গতকাল উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনাকারী যুগ্মসচিব এবং সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুর রহমান ফারুকী বলেন, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশে এই অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হচ্ছে। এশিয়ান হাইওয়ে ও ঢাকা সিলেট মহাসড়কের পাশে পর্যায়েক্রমে সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে।
গতকাল শনিবার সকাল ১০টা থেকে দিনব্যাপী যুগ্মসচিব ও সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুর রহমান ফারুকীর নেতৃত্বে জাপান বাংলাদেশ সিকিউরিটি প্রিন্টিং লিমিটেডের অবৈধ দখলে থাকা ১৫ শতাংশ জমির পাকা স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন ও রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতাজ বেগমের সহায়তায় এ সময় আরও বেশ কয়েকটি দোকানঘরসহ পাকা স্থাপনা ভেঙে দখলমুক্ত করা হয়।
উচ্ছেদ অভিযানে আরো উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার ভূমি তরিকুল ইসলাম, সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর হোসেন, সহকারী উপ-পরিচালক সাখাওয়াত হোসেন শামীম, রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান, ইন্সপেক্টর শহিদুল আলম, ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার এ মান্নান প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার দৈনিক ইনকিলাবে ‘ক্যাসিনো সেলিমের উত্থান কাহিনী : প্রশাসন তার কাছে অসহায়’ শিরোনামে সচিত্র একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তাতে উল্লেখ করা হয় সেলিমের প্রিন্টিং প্রেসের এ ভবনটি ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করলেও প্রশাসন তা উচ্ছেদে ব্যর্থ হয়েছে। ভবনটি উচ্ছেদ করতে গেলেই ওপর মহল থেকে ফোন করে অভিযান থামিয়ে দেয়া হতো। এলাকার মানুষ বুঝত সেলিম অনেক ক্ষমতাধর। তা না হলে প্রশাসন বারবার ব্যর্থ হয় কেন?
গত সোমবার দুপুরে থাই এয়ারওয়েজের টিজি-৩৩২ ফ্লাইটটি ছাড়ার আগমুহূর্তে ক্যাসিনো ডন সেলিম প্রধানকে গ্রেফতার করে র্যাব। এরপর থেকেই ক্যাসিনো সম্রাট সেলিম প্রধানের মালিকানাধীন জাপান বাংলাদেশ সিকিউরিটি প্রিন্টিং লিমিটেডের অবৈধ কারবারের বিভিন্ন বিষয় পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হলেও ইনকিলাবেই প্রথম সওজের জায়গা দখলের বিষয়টি প্রকাশিত হয়। এতে প্রশাসনের টনক নড়ে। গতকাল শনিবার সকাল থেকে দিনব্যাপী জাপান বাংলাদেশ সিকিউরিটি এন্ড প্রিন্টিং লিমিটেডের পাকা স্থাপনা ভেঙে উচ্ছেদ করা হয়।
জানা গেছে, ভুলতা-গোলাকান্দাইল এলাকা ক্রস করেছে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও এশিয়ান হাইওয়ে বাইপাস সড়কটি। এ এলাকায় শিল্পপ্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে হাটবাজার ও ব্যস্ততম থাকায় প্রতিদিন শত শত যানবাহন এবং হাজার হাজার মানুষের চলাফেরা। প্রতিদিনই এ এলাকায় দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হতো। নিত্যদিনের যানজটের কারণে ভোগান্তির যেন অন্ত ছিল না। এ যানজট নিরসনের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্নের চারতলা বিশিষ্ট ফ্লাইওভারটির কাজ সম্পন্ন হলেও সড়ক ও জনপথ বিভাগের একোয়ারভুক্ত মাত্র ১৫ শতাংশ জমি ক্যাসিনো ডন সেলিম মিয়া ওরফে সেলিম প্রধানের জবরদখলে থাকায় কাজটি অসমাপ্ত থেকে যায়। ফ্লাইওভার কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রশাসন বারবার ওই জমিতে থাকা পাকা স্থাপনা উচ্ছেদ করতে গেলেও বিশেষ ফোনের কারণে উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ হয়ে যায়। ফ্লাইওভারের গোলাকান্দাইল সাওঘাট এলাকার অংশে জাপান বাংলাদেশ সিকিউরিটি প্রিন্টিংয়ের মালিক সেলিম প্রধানের দখলে থাকা ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অংশের সাওঘাট এলাকায় সড়ক ও জনপদ বিভাগের প্রায় ১৫ শতাংশ জমি। ওই জমিতে একটি মসজিদসহ পাকা স্থাপনা ছিল। জমিটুকু দখলে থাকায় সড়কের ওই অংশে মাত্র ১০ থেকে ১২ ফুট প্রশস্ত। উচ্ছেদের পর এখন তা বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। এতদিন সড়কের ওই অংশ দিয়ে বড় ধরনের যানবাহন চলাফেলা করতে পারতো না। এমনকি রিকশা ও অটোরিকশা চলাচল করা সম্ভব হতো না। জমি দখলমুক্ত করে সড়ক প্রশস্ত করায় প্রশাসনকে সাধুবাদ জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাপান বাংলাদেশ সিকিউরিটি এন্ড প্রিন্টিং লিমিটেডের এক কর্মকর্তা জানান, বাইরে থেকে কোম্পানিটির অবস্থা জরাজীর্ণ দেখা গেলেও ভেতরে রয়েছে বিলাসবহুল সব ইন্টেরিয়র ডিজাইন। এছাড়া ভেতরে আছে লাক্সারিয়াস সব আসবাবপত্র। তা দেখে যে কারোরই চোখ ছানাবড়া হওয়ার উপক্রম হবে।
র্যাবের দেয়া তথ্যানুসারে, সেলিম প্রধান বাংলাদেশে অনলাইন ক্যাসিনো ব্যবসার মূল হোতা। সেলিমকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর তার গুলাশান-২ এর ১১/১ এ রোডে ও বনানীর অফিসে অভিযান চালিয়ে ৪৮টি বিদেশী মদের বোতল, নগদ ২৯ লাখ ৫ হাজার টাকা, ২৩টি দেশের বৈদেশিক মুদ্রা (যার মূল্য আনুমানিক ৭৭ লাখ ৬৩ হাজার টাকা, ১২টি পাসপোর্ট ও ১২টি ব্যাংকের চেকবই, একটি বড় সার্ভার, ৪টি ল্যাপটপ ও হরিণের চামড়া উদ্ধার করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।