পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
গত এক যুগে ভারতীয় জেলেদের বাংলাদেশের পানিসীমায় অবৈধ অনুপ্রবেশ অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে। চলতি বছর তাদের কর্মকান্ড যেন অতীতের সব রেকর্ড অতিক্রম করেছে। মাঝে মধ্যে নৌ বাহিনী ও কোস্টগার্ড তাদেরকে আটক করলেও অধিকাংশরা থাকছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে।
এছাড়া তারা উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বাইনোকুলার দিয়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর তৎপরতায় চোখ রাখে ও নৌবাহিনী এবং কোস্টগার্ড আসতে দেখলেই দ্রুত পালিয়ে যায়। সুন্দরবন সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের পানিসীমায় ভারতীয় জেলেদের উপদ্রব বেড়েই চলেছে। এসব বিদেশি জেলেদের অনুপ্রবেশের কারণে অসহায় হয়ে পড়েছে বাংলাদেশের ধীবর (জেলে) সম্প্রদায় ।
স্থানীয় জেলেরা অভিযোগ করে জানিয়েছেন, ভারতীয় জেলেদের উৎপাতে দেশি জেলেদের মাছ শিকার ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। বাংলাদেশের পানিসীমা থেকে ভারতের কাকদ্বীপ এলাকা কাছে হওয়ায় সেখানকার বিপুলসংখ্যক জেলে এ দেশের সীমানায় মাছ ধরতে আসে। মাছ ধরার অত্যাধুনিক জালসহ আধুনিক বিভিন্ন সরঞ্জাম থাকায় তারা অনেক বেশি মাছ আহরণ করতে পারে। বাংলাদেশের পানিসীমায় যে এলাকায় মাছের পরিমাণ বেশি, সাধারণত সেই এলাকায় তারা মাছ শিকার করে। তাদের দৌরাত্ম্যে দেশি জেলেরা ওইসব এলাকায় মাছ শিকার করতে পারেন না।
সম্প্রতি বঙ্গোপসাগরে অভিযান চালিয়ে তিনটি ট্রলারসহ ৩৮ জন ভারতীয় জেলেকে গ্রেফতার করেছে নৌবাহিনী। তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ২৩ জন ভারতীয় জেলেকে মামলা দিয়ে কোর্টে পাঠানো হয়েছে। এর আগে গত মঙ্গলবার ১৫ জন জেলেকে বঙ্গোপসাগরে অনুপ্রবেশ করে মাছ শিকারের অপরাধে জেল হাজতে পাঠানো হয়। মংলা বাজারের স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ী আমিনুল ইসলাম ইনকিলাবকে বলেন, ভারতীয় জেলেদের উৎপাতে দেশি জেলেদের বর্তমান ইলিশ মৌসুমে মাছ শিকার ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। তারা আরও বলেন, এক সময় ভারতীয় জেলেরা বাংলাদেশের সীমানায় ঘেঁষে বা কিছুটা ভিতরে ঢুকে ইলিশ শিকার করতো। বর্তমানে তারা উপক‚লীয় এলাকার কাছাকাছি এসে অবাধে মাছ শিকার করছে। অধিকাংশ সময়ই তারা গোপনে মাছ শিকার করে চলে যায়। বিদেশি জেলেরা উচ্চতাসম্পন্ন বাইনোকুলার দিয়ে ট্রলারে বসে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর তৎপরতায় চোখ রাখে।
নৌবাহিনীর একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, দেশীয় পানিসীমায় সামুদ্রিক মাছের প্রজনন ও উৎপাদন বেশি তাই এ সময়টাই মাছ লুণ্ঠনের টার্গেট থাকে ভীনদেশি জেলেদের। আর সেই সুযোগ বুঝোই প্রতিবেশী দেশ ভারত, মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডের জেলেরা অত্যাধুনিক ট্রলার ও মাছ ধরার উপকরণ নিয়ে বাংলাদেশের পানিসীমায় অনুপ্রবেশ করে মাছ শিকার করে। তারা উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বাইনোকুলার দিয়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর তৎপরতায় চোখ রাখে ও নৌবাহিনী আসতে দেখলেই দ্রুত পালিয়ে যায়।
কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের (মংলা সদর দপ্তর) অপারেশন কর্মকর্তা লে. ইমতিয়াজ আলম বলেন, দেশিয় জেলেরা সমুদ্রের ৬০ থেকে ৭০ কিলোমিটার দূরে গিয়ে মাছ ধরতে পারে। আর ভারতীয়রা সমুদ্রসীমার প্রায় দেড়শ› কিলোমিটার ভেতরে প্রবেশ করে থাকে। তারা দ্রæতগামী নৌযান ও কারেন্ট জালসহ ‘জিপিএস’ নামক বিশেষ যন্ত্র ব্যবহার করে। এসব জেলেদের ধরতে নৌবাহিনীর পাশাপাশি কোস্টগার্ডও সাগরে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
বঙ্গোপসাগরের সুন্দরবনের উপক‚লীয় কয়েকটি জেলেপল্লী সূত্রে জানা গেছে, প্রতি বছর অক্টোবর-নভেম্বর থেকে ফেব্রæয়ারি-মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশি জেলেরা বঙ্গোপসাগরের গভীরে (ফেয়ারওয়ে বয়া এলাকায়) ট্রলার ও নৌকায় করে প্রচুর মাছ ধরেন। সাগরে অধিকাংশ সময়ই ভারতীয় জেলেদের উৎপাত বেশি থাকে উল্লেখ করে মংলার চিলা ইউনিয়নের বাসিন্দা জেলে হেমায়েত হাওলাদার জানান, ভারতীয় জেলেরা কারেন্ট জালসহ ৫ ধরনের অত্যাধুনিক জাল ব্যবহার করে। পাশাপাশি মাছের পোনাও ধরে। তাদের কাছে রয়েছে জিপিএস (বিশেষ সঙ্কেত) নামক বিশেষ ধরনের যন্ত্র। এ যন্ত্রের মাধ্যমে ভারতীয় জেলেরা যে পথ দিয়ে সাগরে আসে, আবার সে পথ দিয়েই ফিরে যায়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।