পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাংলার ইতিহাসে স্মরণীয় এক নাম রানী ভবানী। সেই রানী ভবানীর জন্ম বগুড়ার আদমদীঘির ছাতিয়ান গ্রামে। প্রাচীন নাম ছিল মহনগঞ্জ। তার জন্মস্থান জমিদার বাড়ি এখন শুধুই কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সংস্কার ও সংরক্ষণের অভাবে দিন দিন ভেঙে জমিদার বাড়ির ঐতিহ্য হারিয়ে যাচ্ছে। দখল হচ্ছে জমিদার বাড়িসহ আশপাশের জমি।
রানী ভবানীর জীবনের তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায় আদমদীঘি উপজেলার ছাতিয়ান গ্রামে ছিলেন এক জমিদার। নাম তার আত্মারাম চৌধুরী। স্ত্রীর নাম তমাদেবি চৌধুরী রানী। একজন রাজা জমিদারের যা যা থাকার কথা সবকিছুই ছিল আত্মারাম চৌধুরীর। তাদের সন্তান রানী ভবানী চৌধুরী।
ভবানী শৈশব থেকে মানুষের সেবা নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন। নারীরা সাধারণত বিয়ের আগে কৃতিত্ব অর্জন করতে পারে না। কিন্তু এক্ষেত্রে ভবানী ছিলেন এক ব্যতিক্রম নারী। তিনি ছাতিয়ান গ্রামের গরীব দুঃখী মানুষের কষ্ট নিবারণ করতেন। মসজিদ মন্দিরসহ পড়াশুনার জন্য এলাকায় স্কুল নির্মাণ করেছিলেন।
সেই সময় এলাকায় পানির অভাব মিটাতে ৩৬৫টি পুকুর খনন করেছিলেন। সেই পুকুরগুলোর সাথে তার স্মৃতি ধরে রাখতে প্রতিদিন একটি করে পুকুরে গোসল করতেন। ভবানীর পিতা নাটোরের জমিদার রামাকান্তের চেয়ে ছোট জমিদার ছিলেন। বড় জমিদার কীভাবে ছোট জমিদারের কন্যাকে বিয়ে করলেন?
ছাতিয়ান গ্রামের বয়স্করা তাদের বাপ-দাদার বরাত দিয়ে জানান, সে সময় গ্রামে ছিল অনেক বন জঙ্গল। সেই বনে হরিণসহ অনেক বন্যপ্রাণী ছিল। একদিন নাটোরের জমিদার রামাকান্ত ছাতিয়ান গ্রামের জঙ্গলে শিকার করতে আসেন। একদিন ভোরে তাঁবু থেকে শিকারে বের হয়ে দেখতে পান ফুটফুটে সুন্দরী মেয়ে গাছের নিচে দাঁড়িয়ে ফুল তুলছে। রাজা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন মেয়েটি আত্মারাম চৌধুরীর একমাত্র কন্যা।
রাজা রামাকান্ত শিকার না করে নাটোরে ফিরে মেয়েটিকে বিয়ে করার কথা পিতা রামজীবনকে জানান। ছেলের কথা শুনে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে নিজেই ছাতিয়ান গ্রামে চলে আসেন। বিয়ের প্রস্তাব পেয়ে ভবানী কয়েকটি শর্তে রাজী হন। তিন শর্ত হচ্ছে বিয়ের পর তিনি পিতার বাড়িতে এক বছর অবস্থান করবেন। ছাতিয়ান গ্রাম জমিদার বাড়ি থেকে নাটোর জমিদার বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণ করে লাল শালু কাপড়ে জড়িয়ে দিতে হবে। এর উপর দিয়ে তিনি স্বামীর বাড়ি যাবেন। সর্বশেষ শর্ত ছিল এলাকার গরীব প্রজাদের ভূমিদান করে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। রাজা রামজীবন ছেলের বিয়ের জন্য সকল শর্ত মেনে নেন।
সেই মহিয়সী নারী রানী ভবানীর জন্মস্থান ছাতিয়ান গ্রামের জমিদার বাড়িটি দেখার জন্য দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে শত শত মানুষ এসে ভিড় জমায়। স্থানীয়দের মতে, সরকারি উদ্যোগে জমিদার বাড়িটি সংস্কার করা হলে একদিকে ধ্বংস ও দখলদারদের কবল থেকে রক্ষা পাবে। অন্যদিকে বদলে যাবে ঐতিহাসিক নিদর্শন জমিদার বাড়ি এলাকার পরিবেশ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।