Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভিসি ও প্রো-ভিসির পদত্যাগের দাবিতে উত্তাল রাবি

রাবি সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৫ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:০২ এএম

দেশের সার্বভৌমত্ব বিরোধী সেøাগান, নিয়োগ বাণিজ্য, দুর্নীতিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও প্রো-ভিসির পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ভিন্ন ভিন্ন কর্মসূচী পালন করা হয়।

সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টাব্যাপী খালি পায়ে দুর্নীতি মুক্ত শিক্ষাঙ্গনের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বরে অবস্থান নেন। পরে ১১টায় শহীদ তাজ উদ্দিন সিনেট ভবনের সামনে ‘স্বাধীনতাবিরোধী ও দুর্নীতিবাজ প্রশাসনের অপসারণ চাই’ শিরোনামে দুর্নীতিবিরোধী শিক্ষক সমাজের আয়োজনে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এতে অংশ নেয় প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের অর্ধ-শতাধিক শিক্ষকবৃন্দ। একই দাবিতে এর আগে সাড়ে ১০টায় রাবি শাখা বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হতে থাকে। পরবর্তীতে প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের কর্মসূচিতে যোগ দেয় তারা।

এসময় দুর্নীতি মুক্ত ক্যাম্পাস চাই, দুর্নীতিমুক্ত শিক্ষাঙ্গন চাই, শিক্ষকের মর্যাদা নিয়ে বাঁচতে চাই, দুর্নীতির আস্তানা ভেঙ্গে দাও গুড়িয়ে দাও, স্বজনপ্রীতির আস্তানা ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও, এক দফা দাবি ভিসি প্রো-ভিসির পদত্যাগ দাবি ফেস্টুনে ব্যবহার ও সেøাগান দিতে থাকেন।
এদিকে আন্দোলনের পর বিকেল ৫টায় বিশ^বিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে এক সংবাদ সম্মেলন ডাকেন প্রো-ভিসি চৌধুরী জাকারিয়া। তবে সেখানে তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে না পারলেও সামগ্রিক নিয়োগ বাণিজ্যসহ আইন বিভাগের নিয়োগ নিয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি জানান।
বাংলা বিভাগের অধ্যাপক সরকার সুজিত কুমার বলেন, প্রধানমন্ত্রী যখন ঘুষ দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন তখন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন কর্ণধার চৌধুরী জাকারিয়া দিব্যি নিয়োগ বাণিজ্য করে যাচ্ছেন। যার একটি মাত্র অডিও ফাঁস হয়েছে। তোমরা কতটাকা দিতে পারবা? এর মানে কি দাঁড়ায়? তাই অবিলম্বে নিয়োগ বাণিজ্য দুর্নীতিতে জড়িতের শাস্তির দাবি করছি।

পিআইবির সাবেক মহাপরিচালক ও গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. দুলাল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ক্যাম্পাসে সাংবাদিকরা সঠিকভাবে বস্তুনিষ্ঠভাবে মতপ্রকাশ করতে পারছে না। একটা বাধা আছে। এ প্রশাসন সরে গেলেই জাতির সামনে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক দুর্নীতির খবর বেরিয়ে আসবে। আমরা চাই দুর্নীতির খবর গুলো স্বাধীনভাবে গণমাধ্যম প্রকাশ করার সুযোগ পাক।
সাবেক লাইব্রেরী প্রশাসক অধ্যাপক সফিকুন্নবী সামাদী বলেন, বর্তমান প্রশাসনের দুর্নীতির কারণে সর্বোচ্চ রেজাল্ট ৩.৮৬৯ পেয়েও শিক্ষক হতে পারে না, কিন্তু উপাাচার্যের জামাতা হওয়ার কারণে শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা পরিবর্তন করে ৩.২৫ হওয়া রেজাল্টে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেন। একই ঘটনা ঘটেছে উপ-উপাচার্যের জামাতার ক্ষেত্রেও।

ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক আলী রেজা টিপু বলেন, দুর্নীতিবাজ প্রশাসনের দুর্নীতির শিকড় এই শিক্ষাঙ্গন থেকে উপড়ে না ফেলা পর্যন্ত শিক্ষক সমাজ আন্দোলন চালিয়ে যাবে। এই যৌক্তিক আন্দোলনে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহনের আহ্বান জানান তিনি।

এ সময় সমাবেশে আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগের সভাপতি ও আইন অনুষদের সাবেক ডীন ড. বিশ^জিৎ চন্দ, শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রেজাউল কিরম বাদল, প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক হাবিবুর রহমান, সাবেক ছাত্র উপদেষ্টা মিজানুর রহমান, রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ও সাবেক প্রক্টর তরিকুল ইসলাম, সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক মুজিবুল হক আজাদ খান, ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষক জিন্নাত আরা, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শামসুন নাহার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ