রংপুরের কাউনিয়ায় ট্রেন দুর্ঘটনায় একজন নিহত এবং অর্ধশতাধিক আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে ১৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকাল সোয়া ৪টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, সান্তাহার থেকে পঞ্চগড়গামী সেভেন আপ ট্রেনটি কাউনিয়া স্টেশনের আসার পর চালক ইঞ্জিন পরিবর্তন করার জন্য পেছনের দিকে যান। এরপর ট্রেনের উল্টোদিকে ইঞ্জিন লাগানোর সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ইঞ্জিনটি সজোড়ে ট্রেনের বগিকে ধাক্কা দিলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ট্রেনটি যাত্রীতে পরিপূর্ণ ছিল। থেমে থাকা ট্রেনটিতে ইঞ্জিন সজোড়ে ধাক্কা দেয়ায় ইঞ্জিনসংলগ্ন বগিটি একেবারে দুমড়ে মুছড়ে যায়। একই সাথে মাঝখানের বগিগুলো একটা আরেকটার উপর উঠে মাঝখানে বেশ কয়েকজন যাত্রী চাপা পড়েন। এরকমই একজনকে ট্রেনের বগি কেটে উদ্ধার করার পর ওই যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের একজন কর্মকর্তা জানান, ঘটনাস্থলে ওই একজনের মৃত্যু হলেও আরও কমপক্ষে ১৫ জনের অবস্থা গুরুতর। ফায়ার সার্ভিস ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ইঞ্জিন অতিরিক্ত গতির কারণে চালক তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন নি। এতে ইঞ্জিনটি খুব জোড়ে ট্রেনের বগিগুলোকে ধাক্কা দিলে ট্রেনের ১ ও ২ নং বগির মাঝের অংশ দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এতে আপেল মাহমুদ (২০) নামে এক শিক্ষার্থী ঘটনাস্থলে নিহত হন। আহত হন অন্তত ৫০-৬০ জন যাত্রী। এদের মধ্যে ১৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। খবর পেয়ে রংপুর ও কাউনিয়া ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের উদ্ধার করে কাউনিয়া ও রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।

দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করে রংপুর ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপ-পরিচালক শামসুজ্জোহা বলেন, ঘটনাস্থলে একজন নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত ১৫ জনকে কাউনিয়া ও রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বাড়তে পারে।
কি কারণে ট্রেনের ইঞ্জিনটি নিয়ন্ত্রণ হারালো তা জানা যায়নি। তবে রেলের একটি সূত্র জানায়, চালক নিজে নেমে গিয়ে সহকারিকে ইঞ্জিন ঘুরানোর দায়িত্ব দেন। সহকারি চালক ইঞ্জিনের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ট্রেনটির বগিতে সজোড়ে আঘাত করে ইঞ্জিনটি। খবর পেয়ে রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।