পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ, দুর্নীতি ও ক্যাসিনোবিরোধী চলমান অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। অপরাধী যে-ই হোক না কেন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। দল, আত্মীয়, পরিবার নয়, সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কোনও ছাড় দেয়া হবে না। আমার হারানোর আর কিছু নেই। আমি দেশের মানুষের জন্য জীবন বাজি রেখেই কাজ করে যাচ্ছি।
গতকাল হোটেল সোনারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর বাণিজ্যিক সম্প্রচার কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা চলতি বাজেটে ১৭৩ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিয়েছি। দুর্নীতিবাজ উইপোকাড়া উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নকালে অর্থ লুটে নিচ্ছে। দেশের উন্নয়নের জন্য জনগণের কষ্টার্জিত অর্থের প্রতিটি পয়সার যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিতের জন্য আমাদের ওইসব উইপোকাকে আটক করতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ, মাদক ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে চলমান অভিযান অব্যহত রাখব। এই সব অপকর্মের সাথে জড়িত থাকলে দল, পরিবার নির্বিশেষে কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না। আমি দেশের দরিদ্র মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন পূরণ করতে চাই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ আমি খুবই আনন্দিত। কারণ দেশের সব টিভি চ্যানেল বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর মাধ্যমে বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করেছে। এতদিন আপনারা দেশের বাইরে টাকা পাঠাতেন। এখন আপনাদের অনেক টাকা বেঁচে গেলো। আশা করি ইলেকট্রনিক সম্প্রচার মাধ্যমগুলোর আরও অনেক বাধা দূর হবে। পরনির্ভরশীলতা থাকবে না। আমরা নিজের পায়ে দাঁড়ানোর সুযোগ পেলাম।
তিনি বলেন, আমরা আশপাশের দেশগুলোর কাছেও অফার করেছি। তারাও চাইলে ভাড়া নিতে পারবে এর ট্রান্সপন্ডার। এখান থেকেও আমরা অর্থ উপার্জন করতে পারব। স্যাটেলাইটের মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলে অনেক সহজে বার্তা পৌঁছানো যাবে। নিজস্ব প্রযুক্তি ও জ্ঞান দিয়ে বাংলাদেশ একদিন মহাকাশ জয় করবে, এটা আমার বিশ্বাস।
গণমাধ্যমের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারের বিরুদ্ধে কথা না বললে আকর্ষণ থাকবে না এমন ধারণা প্রচলিত আছে। আপনারা সেটা করতে পারেন, তাতে আমার কোনও সমস্যা নেই। তবে মিথ্যা অপপ্রচার যেন না হয় দয়া করে সে ব্যাপারে সতর্ক থাকবেন। মিথ্যা অপপ্রচারে দেশের মানুষের মধ্যে সন্দেহ হয়। এমন কিছু করবেন না যাতে মানুষ আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলে।
তিনি বলেন, গত ১০ বছরে দেশের জন্য আমরা অন্তত কিছু কাজ তো করেছি। সেটা তো অস্বীকার করতে পারবেন না। সেটা একটু প্রচার করবেন। যেটুকু ভালো কাজ করেছি সেটুকু প্রচার করুন, এটুকু আমি চাইতেই পারি। তথ্যগুলো মানুষের কাছে পৌঁছে দেবেন। যাতে মানুষের মধ্যে আত্মবিশ্বাস বাড়ে। সেদিকে দৃষ্টি রেখে কাজ করবেন।
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন এবং ডাক ও টেলিয়োগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব অশোক কুমার বিশ্বাস এবং অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্স-এর (্এটিসিও) চেয়ারম্যান অঞ্জন চৌধুরী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
বাংলাদেশ কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট কোম্পানী লিমিটেড (বিসিএসসিএল)-এর চেয়ারম্যান ড. শাজাহান মাহমুদ অনুষ্ঠানে বাণিজ্যিক সম্প্রচারের জন্য বেসরকারি টিভি চ্যানেল মালিকদের সংগঠনের সঙ্গে বিসিএসসিএল-এর সম্পাদিত চুক্তিনামাটি প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন। প্রধানমন্ত্রী পরে তা অ্যাটকো চেয়ারম্যানের নিকট হস্তান্তর করেন।
অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর ওপর একটি অডিও ভিজ্যুয়াল উপস্থাপনা পরিবেশন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, মন্ত্রিপরিষদের অন্যান্য সদস্য, সংসদ সদস্য, সরকারের পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ, বিদেশি কূটনীতিক এবং আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বিসিএসসিএল-এর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, বেসরকারি চ্যানেল মালিকগণকে অতীতে অ্যাপস্টার-৭ এবং এশিয়া স্যাট স্যাটেলাইটের মাধ্যমে অনুষ্ঠান সম্প্রচারের জন্য মেগা হার্টজ প্রতি ফ্রিকোয়েন্সির জন্য প্রতি মাসে ৪ হাজার ডলার ব্যয় করতে হত। সেখানে দেশীয় চ্যানেলগুলোর জন্য প্রতি মাসে স্যাটেলাইটের ভাড়া ২৮১৭ ডলার নির্ধারণ করেছে বিসিএসসিএল। এর আগে গত ১৯ মে বিসিএসসিএল স্থানীয় ৬টি টেলিভিশন চ্যানেলের সঙ্গে এ সংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে। চ্যানেলগুলো হচ্ছে- সময় টিভি, যমুনা টিভি, দিপ্ত টিভি, বিজয় টিভি, বাংলা টিভি এবং মাই টিভি। এছাড়া বর্তমানে রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ইতোমধ্যেই বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১-এর মাধ্যমে অনুষ্ঠান সম্প্রচার করে যাচ্ছে।
চরফ্যাসনে টেলি মেডিসিন ও ই-এডুকেশন
সেবা উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
ভোলা জেলা সংবাদদাতা : ভোলার চরফ্যাসনে টেলি মেডিসিন ও ই-এডুকেশন সেবা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল দুপুর ১২টায় উপজেলার মুজিবনগর ইউনিয়নে চরলিউলিন বাংলাবাজার নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এ সেবা উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরাসরি স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষা সেবা নিয়ে চরবাসীর সাথে ১৫ মিনিট কথা বলেন। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি, ভোলা-৪ আসনের সংসদ সদস্য আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
ভোলা জেলা প্রসাশক মোহাম্মদ মাসুদ আলম সিদ্দিক ভোলাবাসীর পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে ভোলায় আসার আমন্ত্রণ জানান। তিনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নামে প্রতিষ্ঠিত মুজিব নগর ইউনিয়নে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ টেলি-মেডিসিন ও ই-এডুকেশন সেবার আওতায় সুযোগ সুবিধা ভোগ করবে। এই টেলি-মেডিসিন এবং ই-এডুকেশন সেবা চালুর মাধ্যমে সারাদেশের ৪০টি বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চল দ্বীপে এ সেবা চালু হবে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর মাধ্যমে এ কার্যক্রম পরিচালিত হবে। এছাড়াও স্কুলের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী সাবিনা ইয়াসমিন মুজিবনগর ইউনিয়নের চরে সরকারের স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ জানান।
এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার আবদুস সালাম, পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার, উপজেলা চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদিন আখন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর উদ্বোধন উপলক্ষ্যে সারাদেশের ৪০টি দ্বীপে টেলিমেডিসিন এবং ই-এডুকেশন সেবা সেবা চালু করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।