পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পায়রা সমুদ্র বন্দরসহ দক্ষিণাঞ্চলের সাথে সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ উন্নয়ন ও নির্বিঘ্ন করার লক্ষে বরিশাল-ফরিদপুর জাতীয় মহাসড়কটি ৪ লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পটি নিয়ে নতুন জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের সম্ভাব্য আর্থিক সহায়তায় প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় সাপেক্ষে এ মেগা প্রকল্পটির জন্য ইতোমধ্যে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা, ডিটেইলড ডিজাইনসহ প্রাথমিক ডিপিপি তৈরি সম্পন্ন হয়েছে। তবে প্রকল্প বাস্তবায়নে দাতা চ‚ড়ান্ত না হবার মধ্যেই মহাসড়কটির বরিশাল মহানগরীর অভ্যন্তরের প্রায় ১৬ কিলোমিটার এলাকায় নতুন করে ভ‚মি অধিগ্রহণ নিয়ে মারাত্মক জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে।
বরিশাল-ফরিদপুর আঞ্চলিক মহাসড়ক নির্মাণের লক্ষে ১৯৬০-৬৫ সালে ১২০ ফুট প্রশস্ত ১২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ ভ‚মি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল। কিন্তু ৪ লেন রাস্তা নির্মাণ করতে গিয়ে বিদ্যমান মহাসড়কটির দুপাশে আরো প্রায় ৩ হাজার একর ভ‚মি হুকুম দখলের প্রক্রিয়া শুরু হতেই নগরবাসী ফুসে উঠেছে। তাদের দাবি মহানগরীর গড়িয়ার পাড় থেকে দপদপিয়া শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত সেতু পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার মহাসড়ক ৪ লেনে উন্নীত করতে দুপাশের বিপুল সংখ্যক বাড়ি ঘরসহ সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা ভেঙে ফেলতে হবে। এ ১৬ কিলোমিটারের মধ্যে অন্তত ৩০টি মসজিদ ছাড়াও একাধিক মন্দির ও সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। অথচ গড়িয়ার পাড় থেকে দপদপিয়া পর্যন্ত সাড়ে ১১ কিলোমিটার বাইপাস সড়ক নির্মাণ করলে এ সঙ্কট এড়ানো সম্ভব। নগরবাসী ইতোমধ্যে এ লক্ষে ব্যাপক আন্দোলনও গড়ে তুলেছে।
২০০২ সালে বরিশাল-ফরিদপুর মহাসড়কটি ৪ লেনে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। অথচ ১৯৯৮ সালে বরিশাল বাইপাস নির্মাণের একটি ডিপিপি যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়া হয়েছিল। কিন্তু তা আলোর মুখ দেখেনি। কারিগরি বিশেষজ্ঞদের মতে আরো অনেক আগেই এ বিভাগীয় শহরে বাইপাস নির্মাণের প্রয়োজন ছিল। বিষয়টি নিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকেও ইতোপূর্বে সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষন করা হয়।
সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ফরিদপুর থেকে বরিশাল হয়ে কুয়াকাটা পর্যন্ত মহাসড়কটি ৪ লেনে উন্নীত করার লক্ষে ভ‚মি অধিগ্রহণের জন্য ইতোমধ্যে প্রায় ১ হাজার ৮শ’ কোটি টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে। এ কর্মসূচির আওতায় ফরিদপুরে প্রায় ৭১ একর, মাদারীপুরে ৪৬ একর, বরিশালে ৯১ একর ও পটুয়াখালীতে ৯৬ একর ভ‚মি হুকুম দখল আগামী জুনের মধ্যে সম্পন্ন করার কথা।
দায়িত্বশীল সূত্রের মতে, সরকার ফরিদপুর থেকে বরিশাল হয়ে কুয়াকাটা পর্যন্ত ২৩২ কিলোমিটার মহাসড়কই ৪ লেনে উন্নীত করার পরিকল্পনাসহ এর সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ও প্রাথমিক নকশা প্রণয়ন সম্পন্ন করে জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু করেছে। কিন্তু প্রকল্পটি দুই পর্যয়ে বাস্তবায়ন করতে চাচ্ছে সরকার। প্রাথমিক পর্যায়ে বরিশাল থেকে ফরিদপুর পর্যন্ত ১২৬ কিলোমিটার মহাসড়ক ৪ লেনে উন্নীত করা হবে। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে এডিবির আর্থিক সহায়তা পাওয়ার চেষ্টা চলছে। পরবর্তীতে দাতা পাওয়া গেলে বরিশাল থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত ১০৮ কিলোমিটার মহাসড়ক ওই প্রকল্পের আওতায় আসবে। কলাপাড়া থেকে পায়রা বন্দর পর্যন্ত প্রায় ৮ কিলোমিটার সংযোগ সড়কটি বন্দরের নিজস্ব অর্থে ৪ লেনে উন্নীতকরণের কাজ প্রায় শেষের পথে। সড়কটি নির্মাণ করছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী।
বরিশাল নগরীতে বাইপাস নির্মাণে বরিশাল জেলা প্রশাসনেরও সুপারিশ রয়েছে। বরিশাল সড়ক জোনের ২০১৭ সালের এক সভায়ও বাইপাস নির্মাণের সুপারিশ জানানো হয়। নগরীর যানজট নিরসনে নথুল্লাবাদ, নবগ্রাম রোড-চৌমহনী ও আমতলাতে ৩টি ফ্লাইওভার নির্মাণেরও সুপারিশ করেছে কারিগরি বিশেষজ্ঞরা।
তবে একটি বিশ্বস্ত সূত্রের মতে, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নে ইতোমধ্যে ‘টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স ফর সাব-রিজিওনাল রোড ট্রান্সপোর্ট প্রজেক্ট প্রিপারেটরি ফেসিলিটিজ’ এর আওতায় ফরিদপুর-বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ও প্রাথমিক নকশা প্রণয়ন সম্পন্ন হয়েছে। প্রাথমিকভাবে মহাসড়কটির বরিশাল-ফরিদপুর অংশের ১২৬ কিলোমিটারে ৪ লেনের নির্মাণ কাজ শুরুর লক্ষে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নের চেষ্টা চলছে। এ প্রকল্পে ব্যয় হবে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা।
এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক ও অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী রিয়াজ উদ্দিন আহমদ জানান, মহাসড়কটি ৪ লেনে উন্নীত করণে সম্ভব্যতা, সমীক্ষা, নকশা ও ডিপিপি তৈরি হয়েছে। তবে বরিশাল মহানগরীর অভ্যন্তর দিয়ে ৪ লেন নির্মিত হবে, না বাইপাস হবে তা নিয়ে পুনরায় পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে। তবে সম্প্রতি এক সভায় সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব মহানগরীর যে ১৬ কিলোমিটার এলাকায় ৪ লেন নিয়ে জনগণের আপত্তি রয়েছে, সেখানে ১৯৬০ সালে অধিগ্রহণকৃত ১২০ ফুট প্রশস্ত ভ‚মি পুনরুদ্ধার করে সীমানা চিহ্নিত করার নির্দেশ দিয়েছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।