পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অবৈধ ক্যাসিনো-টেন্ডারবাজির ঘটনায় গ্রেফতারকৃতদের মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রাপ্ত তথ্য যাচাই বাচাই চলছে। দফায় দফায় রিমোন্ডে নিয়ে খালেদ মাহমুদ, জি কে শামীম ও ফিরোজকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন র্যাব এবং গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা। এদের জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য সরকারের উচ্চ পর্যায়ে জানানো হয়েছে। যুবলীগ নেতা ও প্রভাবশালী ঠিকাদার গোলাম কিবরিয়া শামীমের (জিকে শামীম) নয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। অস্ত্র ও অর্থ পাচার মামলায় তারর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে এই দুই মামলায় ১৪ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। আদালত অস্ত্র মামলায় চার দিন এবং অর্থপাচার মামলায় ৫ দিনের পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে গত ২১ সেপ্টেম্বর শামীমকে অস্ত্র ও মাদক মামলায় ১০ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছিল।
গত মঙ্গলবার রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ আইন-শৃংখলা বাহিনীর প্রধানদের সাথে প্রধানমন্ত্রীর অনির্ধারিত একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই বৈঠকে গত ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া অভিযান সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীও চলমান অভিযান অব্যাহত রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। তাছাড়া গতকাল বুধবার পুলিশ সদর দপ্তরেও একটি বৈঠক হয়েছে। ওই বৈঠকে আইজিপি ও ডিএমপি কমিশনারসহ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশ ও র্যাবের কয়েকজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী জিরো টলারেন্স দেখাতে বলেছেন। কারো সাথে কোন ধরনের আপস করতে বারণ করেছেন। যেসব সেক্টরে দীর্ঘদিন ধরে দুর্নীতি বা নানা অনিয়ম হচ্ছে সেগুলো ব্যাপারে খোঁজ খবর নেয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। নির্দেশনা পেয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সবকটি সংস্থা কাজ শুরু করে দিয়েছে।
গতকাল দুপুরে কড়া পুলিশি নিরাপত্তায় জি কে শামীমকে ঢাকার আদালতের হাজতখানায় নিয়ে যাওয়া হয়। বেলা তিনটার পর তাকে আদালতের দুই তলার একটি এজলাসে নেয়া হয়। শামীমের পরনে ছিল একটি টি-শার্ট আর ট্রাউজার। পায়ে ছিল চামড়ার স্যান্ডেল। সেখানে অর্থপাচার মামলায় শামীমকে গ্রেফতার দেখানোর অনুমতি দেন আদালত। দুই তলার এজলাস থেকে তাকে যখন ওপরের এজলাসে নেয়া হচ্ছিল তখন শামীম পুলিশ বাহিনীর এক সদস্যের উদ্দেশে বলেন, আমি কি পালিয়ে যাব? না, আমি পালিয়ে যাব না। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা আদালতে বলেন, শামীমের বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে। শামীমের কাছে অবৈধ অস্ত্র পাওয়া গেছে। ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি।
অন্যদিকে শামীমের আইনজীবী আবদুর রহমান হাওলাদার আদালতের কাছে দাবি করেন, তার মক্কেলের কাছে যে অস্ত্র পাওয়া গেছে তা বৈধ। এই অস্ত্রের লাইসেন্সের মেয়াদ ২০২১ সাল পর্যন্ত। শামীমের কোনো অবৈধ অস্ত্র নেই। এরপর শামীমের আইনজীবীরা আদালতের কাছে আরো দাবি করেন, শামীম সরকারি একাধিক প্রকল্পের ঠিকাদারি কাজ করছেন। শামীম হাজার-হাজার কোটি টাকার কাজ করছেন। তার ছয় হাজার শ্রমিক রয়েছে। প্রতিদিন তাদের পেছনে এক কোটি টাকার খরচ রয়েছে। শামীমের অন্য আইনজীবী শওকত ওসমান আদালতে বলেন, শামীম খুবই মেধাবী ছাত্র ছিলেন। নিজের চেষ্টায় তিনি এত টাকার মালিক হয়েছেন। শামীমের বৈধ অস্ত্র থাকার পরেও অবৈধ অস্ত্র রাখার অভিযোগ আনা হয়েছে। তার মক্কেল আদালতের কাছে ন্যায়বিচার চান।
এদিকে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আদালতে প্রতিবেদন দিয়ে বলা হয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে প্রকাশ পায়, আসামি জি কে শামীম একজন চিহ্নিত চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজ, অবৈধ মাদক ও জুয়ার ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। আর এই আসামির সহযোগীরা (দেহরক্ষীরা) উচ্চ বেতনভোগী, দুষ্কর্মের সহযোগী। ব্যক্তিগত নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে লাইসেন্সপ্রাপ্ত হলেও মূলত তারা অস্ত্রের লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ করে প্রকাশ্যে এসব অস্ত্রশস্ত্র বহন এবং প্রদর্শন করেছেন। এর মাধ্যমে জনমনে ভীতি সৃষ্টির মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের টেন্ডারবাজি মাদক ব্যবসাসহ স্থানীয় বাস টার্মিনাল, গরুর হাটে চাঁদাবাজি করে আসছিল বলে জানা যায়।
ওই প্রতিবেদন দিয়ে আরও বলা হয়, আসামি শামীম অস্ত্রের শর্ত ভঙ্গ করে ক্ষমতার অপব্যবহার করে মাদক ব্যবসা ও মানি লন্ডারিং করে আসছেন। আসামি বিদেশি মদ রাখার বিষয়ে কোনো বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। কিংবা এই বিষয়ে কোনো সদুত্তর দেননি। আসামি সজ্ঞানে মদ অবৈধ উপায়ে সংগ্রহ করে নিজের দখলে রেখেছেন বলে স্বীকার করেছেন। গত ২০ সেপ্টেম্বর রাজধানীর নিকেতনের নিজ কার্যালয় থেকে বিদেশি মদসহ শামীমকে গ্রেফতার করে র্যাব। পাশাপাশি তার অফিস থেকে জব্দ করা হয় বিপুল পরিমাণ টাকা ও বিদেশি মুদ্রা। এই ঘটনায় র্যাব বাদী হয়ে গুলশান থানায় অস্ত্র, অর্থপাচার ও মাদক মামলা করে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।