Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রাজবাড়ীতে নদীভাঙন পাঁচ ইউনিয়নে

রাজবাড়ী জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

পদ্মায় পানি বৃদ্ধির ফলে নতুন করে রাজবাড়ীর পাঁচটি ইউনিয়নে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে নদীগর্ভে বিলিন হয়েছে একটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন, ইট ভাটাসহ শত শত বিঘা ফসলি জমি। ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে শহর রক্ষা বাঁধসহ বহু স্থাপনা। পদ্মার নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে টানা এক সপ্তাহ ধরে ভাঙন অব্যহত রয়েছে রাজবাড়ীর বিভিন্ন এলাকায়। এরই মধ্যে, রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর, বরাট, গোয়ালন্দ উপজেলার দেবোগ্রাম, দৌলতদিয়া ও কালুখালী উপজেলার রতন দিয়া ইউনিয়নে নতুন করে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
জানা যায়, এখনও পদ্মার ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে, মহাদেবপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, সিলিমপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, চরধুনচি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বরাট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। গতকাল শনিবার সকালে সরেজমিনে রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের মহাদেবপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখাযায়, বিদ্যালয়টির একটি ভবনে অর্ধেকটা নদী গর্ভে বিলিন হয়েছে। বাকি অর্ধেকের টিনের চাল খুলে নেয়ার চেষ্টা করছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অপরদিকে বরাট ইউনিয়নের গোদার বাজার এলাকার জিনিয়াস ইট ভাটার তৈরিকৃত ইটসহ নদীতে ভেঙে পড়ছে।

মহাদেবপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, এই বিদ্যালয়ে তিন শতাধীক ছাত্রছাত্রী রয়েছে। বিদ্যালয়ে দু’টি ভবনের একটি ভবন নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে। এখন অপর ভবনটিতে কোনক্রমে পাঠদান চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তাছাড়া নদী বিদ্যালয়টি সংলগ্ন হওয়ায় অভিবাবকরা তাদের সন্তানদের বিদ্যালয়ে আসতে দিচ্ছে না। যে কারণে উপস্থিতির হারও কমে গেছে।

মহাদেবপুর এলাকার বাসিন্দা আমজাদ হোসেন জানান, এক সময় পদ্মা নদী ছিলো অনেক দূরে এখন প্রতি বছরই নদী ভাঙছে। নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে নতুন করে ভাঙন শুরু হয়েছে। এই এলাকার শত শত পরিবার, হাজার হাজার বিঘা ফসলি জমি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, এমনকি শহর রক্ষা বাঁধ ও হুমকির মধ্যে আছে।

এদিকে নতুন করে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন করে ভাঙন দেখা দিয়েছে কালুখালী উপজেলার রতনদিয়া ইউনিয়নে।
রতন দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেহেদী হাটিনা পারভীন বলেন, কালুখালী উপজেলাটি জেলার মধ্যে সবচেয়ে নিচু। এরই মধ্যে রতনদিয়া ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম পানিতে প্লাবিত হয়েছে। দু’টি এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে এলাকার মানুষ। এরই মধ্যে রতনদিয়া ইউনিয়নের কমপক্ষে ৫০ বিঘা ফসলি জমি নদীর্ভে বিলিন হয়েছে।

দেবোগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আতর আলী সরদার জানান, গত এক সপ্তাহের নদী ভাঙনে দেবোগ্রামের অন্তত দুইশ’ বসত বাড়ি সরিয়ে নেয়া হয়েছে। নদীগর্ভে চলে গেছে শতাধিক বিঘা ফসলি জমি। এখনও পর্যন্ত প্রশাসনসহ কেউ ভাঙন এলাকা দেখতে পর্যন্ত আসেননি বলে অভিযোগ করেন তিনি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) রাজবাড়ীর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সফিকুল ইসলাম জানান, ভাঙন এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলা শুরু হয়েছে। আমরা এখন দিন রাত এক করে কাজ করছি। এরই মধ্যে মহাদেবপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় সাড়ে ছয় হাজার বস্তা জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। গোদার বাজার এলাকায় সব মিলিয়ে লক্ষাধিক জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। এখনও কাজ চলমান আছে। ভাঙনরোধে আমরা সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ