Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঢাবিতে ধর্মভিত্তিক ছাত্র সংগঠনের তৎপরতা নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত বেআইনী

পৃথক বিবৃতিতে বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:০২ এএম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্মভিত্তিক ছাত্র সংগঠনের তৎপরতা নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তকে বেআইনী হিসেবে উল্লেখ করেছেন বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। পৃথক পৃথক বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকার দলীয় ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ নিজেদের ব্যর্থতা ও অপকর্ম ঢাকার জন্য ধর্মভিত্তিক বিভিন্ন ইসলামী ছাত্র সংগঠনের কার্যক্রম বন্ধ করে দিতে চায়। এটা ইসলামের উপর মারাত্মক আঘাত। রাষ্ট্রে যেখানে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ নয়, সেখানে ঢাবি ক্যাম্পাসে তা কিভাবে নিষিদ্ধ হতে পারে?

খেলাফত মজলিস : খেলাফত মজলিসের আমীর প্রিন্সিপাল মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাক ও মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্মভিত্তিক ছাত্র সংগঠনের তৎপরতা নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত বেআইনী। দেশের সংবিধানে সকল নাগরিককে মত প্রকাশ ও সংগঠন করার অধিকার দিয়েছে। ডাকসু দেশের নাগরিকদের সেই সাংবিধানিক অধিকার কেঁড়ে নিতে পারে না। ডাকসুর এ ধরণের গণবিরোধী সিদ্ধান্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যকে ম্লান করে দিবে। তারা শিক্ষাঙ্গনে ছাত্রলীগের সন্ত্রাস, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজিসহ নানা ধরণের অপকর্ম বন্ধের দাবি জানান।

ইসলামী আন্দোলন মহানগর উত্তর : ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ বলেন, সংবিধানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করার এখতিয়ার ডাকসু এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নেই। রাষ্ট্রে যেখানে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ নয়, সেখানে ঢাবি ক্যাম্পাসে তা কিভাবে নিষিদ্ধ হতে পারে?

ইসলামী ঐক্যজোট : ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আবদুল লতিফ নেজামী বলেছেন, এই ঘোষণা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার চেতনার সম্পূর্ণ পরিপন্থী। তিনি বলেন, পূর্ববাংলার সংখ্যাগরিষ্ঠ ও অবহেলিত মুসলিম জনগণের ইসলামী রাজনীতি ভাষা, সাহিত্য, ধর্ম, বিশ্বাস, রীতি-নীতি, মূল্যবোধ, ধর্মীয় বিশ্বাস ও সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র্যবোধ ধারণ, চর্চা ও অনুশীলনের পথ প্রশ্রস্ত করার জন্যে নবাব সলিমুল্লাহর অক্লান্ত পরিশ্রমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। এই লক্ষ্যে প্রথম থেকেই ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ে ইসলামিক ষ্টডিজ শিক্ষার ব্যবস্থা রাখা হয়। তাই এই ঘোষণায় ডাকসুর অনৈসলামী চিন্তা-চেতনার স্বরুপ উন্মোচিত হয়েছে। অবিলম্বে অসাংবিধানিক সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে।
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র মজলিস : বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র মজলিসের সভাপতি মুহাম্মদ তারিক বিন হাবীব বলেন, ডাকসু হলো বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্রদের অধিকার ও স্বার্থরক্ষার একটি প্রতিষ্ঠান। সুতরাং ডাকসু কোনোভাবেই ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে পারে না। তিনি বলেন, ধর্ম ও ইসলাম বাংলাদেশের মানুষের হাজার বছরের ইতিহাস ঐতিহ্য ও অনুভূতির সাথে সম্পৃক্ত। ছাত্রজনতার অনুভূতিতে আঘাত করে ডাকসুর মতো একটি জায়গাকে কলঙ্কিত করবেন না।

তালামীযে ইসলামিয়ার বিবৃতি : বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়ার কেন্দ্রীয় সভাপতি আখতার হোসাইন জাহেদ ও সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূনুর রহমান লেখন এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মুক্তবুদ্ধি ও মুক্তচিন্তার কেন্দ্রস্থল। কোন ধর্ম বা মতাদর্শকে বাদ দিয়ে আদর্শ শিক্ষাঙ্গন প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় রয়েছে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের অবদান। ক্যাম্পাসে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি বন্ধের সিদ্ধান্ত বামপন্থি ক্রিয়াশীল সংগঠনগুলোর দাবি বাস্তবায়নেরই নামান্তর।

স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তি ও উগ্রবাদ দমনের নামে ধর্মীয় রাজনীতি বন্ধের সিদ্ধান্ত অসাংবিধানিক ও অনধিকার চর্চা। তাই ধর্মীয় রাজনীতি বন্ধ নয় বরং সকল মত ও মূল্যবোধ চর্চার পথ সুগম রেখে গণতান্ত্রিক ও আদর্শ শিক্ষাঙ্গন প্রতিষ্ঠা সম্ভব।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, ইসলাম শাশ্বত শান্তির ধর্ম। মুসলিম জীবনের প্রতিটি অঙ্গনে ধর্মীয় বিধান পালন অপরিহার্য। ধর্মীয় রাজনীতি বন্ধের সিদ্ধান্তের মাধ্যমে কেবল ছাত্রদের ধর্মীয় অধিকার খর্ব নয় স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধানকেও লঙ্ঘন করা হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। নেতৃবৃন্দ অনতিবিলম্বে এই হঠকারী সিদ্ধান্ত বাতিল করতে ডাকসুর প্রতি আহ্বান জানান।



 

Show all comments
  • Yourchoice51 ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ৮:৪৪ এএম says : 0
    পবিত্র কোরান শুধুমাত্র একটি ধর্মগ্রন্থ নয়; এতে রয়েছে মানুষের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা। পবিত্র কুরআনের আদর্শে যারা রাজনীতি করতে চান, তাদের সেরূপ রাজনীতিকে বাধা দেয়ার অর্থ ইসলামী আদর্শকে বাধা দেয়া।
    Total Reply(0) Reply
  • Nannu chowhan ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ৯:৩৪ এএম says : 0
    Jodio amader deshke gonotontrik desh bola hoy tahole onnano dol jodi satro rajniti korte pare tobe 90%mosolmaner deshe islam ponthi satro dol keno rajniti korte parbena,deshta ki satroliger nijeshsho ayne chole naki?
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ