পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, গ্রামীণফোনের সঙ্গে সরকারের ভুল বোঝাবুঝির নিরসন হচ্ছে। তিনি বলেন, গ্রামীণফোনের সঙ্গে দীর্ঘদিনের যে ভুল বোঝাবুঝি ছিল সেটা নিরসনের চেষ্টা চলছে। এ বিষয়ে শিগগিরই ভালো একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারবো। গতকাল সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন। এ সময় কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান, শ্রম ও কর্মসংস্থানমন্ত্রী মুন্নুজান সুফিয়ান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এর আগে অর্থমন্ত্রীর কার্যালয়ে দুই মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীন ফোন ও রবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন অর্থমন্ত্রী।
আলোচনার অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাইলে আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, দেখুন এটা যখন আমরা শেষ করে ফেলবো তখন আপনাদের অবহিত করবো। এ মুহুর্তে গ্রামীণফোনের সঙ্গে কী আলোচনা হয়েছে সেটা আমাদের নিজস্ব ব্যাপার। এটা এখন আপনাদের বলবো না। এ তথ্য দিলে আপনারা কাজেও লাগাতে পারবেন না। অর্থমন্ত্রী বলেন, তাদের সঙ্গে আমাদের আলোচনা চলছে এবং সেটা ফলপ্রসূভাবে চলছে। তারাও এগিয়ে এসেছে আমরাও এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা মোটামুটি এক জায়গায় সিদ্ধান্তে পৌঁছাবো।
দেশের মোবাইল অপারেটর কোম্পানি গ্রামীণফোনের কাছে সরকারের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও বিটিআরসির প্রায় এক হাজার ২০০ কোটি টাকা পাওনা ছিল। বিষয়টি কোনোভাবেই নিজেদের মধ্যে সমাধান না হলে গত মাসে এ নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলা করে গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষ। এরপরই বিষয়টি মীমাংসার জন্য উদ্যোগ নেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এ উদ্যোগ নেয়ার পর একাধিকাবার যৌথ সভায় আলোচনা করেছে সরকার ও গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষ। সে বিষয়ে গতকাল সাংবাদিকদের সামনে এমন প্রতিক্রিয়া জানান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
এর আগে গত বুধবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানিয়েছিলেন, আলোচনার মাধ্যমে গ্রামীণফোনের বকেয়া টাকা আদায় করা হবে। এতে শেয়ারবাজার অনেকটা ঘুরে দাঁড়ায়। ব্রোকারেজ হাউজগুলোয় বিনিয়োগকারীদের উপস্থিতি বাড়ে। যা দীর্ঘদিন অনুপস্থিত ছিল। বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে আলাপকালে তারা অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, অর্থমন্ত্রীর গ্রামীণ ফোনের বিষয়টি মীমাংসার উদ্যোগে কিছুটা স্থিতিশীল পরিবেশ ফিরে আসায় তারাও পুঁজিবাজারমুখী হচ্ছেন।
এদিকে আগামী ডিসেম্বরে ই-পাসপোর্ট চালু হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। চলতি বছরের জুলাই মাস থেকে ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট বা ই-পাসপোর্ট সুবিধা চালু করার কথা ছিলো কিন্তু তা চালু করা সম্ভব হয়নি। অর্থমন্ত্রী বলেন, ই-পাসপোর্ট বাস্তবায়নে কাজ করছে জার্মানির একটি কোম্পানি। তারা ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করতে পারবে বলে আশা করা যাচ্ছে। তারপর তা প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করবেন।
এর আগে ই-পাসপোর্ট চালু করতে দুই দফা তারিখ নির্ধারণ করেও তা চালু করা সম্ভব হয়নি। তাই ই-পাসপোর্ট চালু হওয়ার আগ মুহুর্ত পর্যন্ত পাসপোর্ট সেবা অব্যাহত রাখতে ২০ লাখ মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) বুকলেট এবং ২০ লাখ লেমিনেশন ফয়েল সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ। সূত্র জানায়, চলতি বছর ১ জানুয়ারি ই-পাসপোর্ট চালুর প্রথম লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত ছিল। কিন্তু পরে তারিখ পুনঃনির্ধারিত হয় ১ জুলাই। মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) আর ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট (ই-পাসপোর্ট) এর মধ্যে পার্থক্য হলো অনেকটা চেকবই আর এটিএম কার্ডের মতো।
সূত্র জানায়, পৃথিবীতে ১১৯টি দেশের নাগরিকরা ই-পাসপোর্ট ব্যবহার করে। এবার ওই দেশগুলোর সঙ্গে যুক্ত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশও। বর্তমানের যন্ত্রে পাঠযোগ্য পাসপোর্টের মতোই ই-পাসপোর্টেও একই ধরনের বই থাকবে। তবে যন্ত্রে পাঠযোগ্য পাসপোর্টের বইয়ের শুরুতে ব্যক্তির তথ্যসংবলিত যে দুটি পাতা আছে, তা ই-পাসপোর্টে থাকবে না। সেখানে পালিমারের তেরি একটি কার্ড থাকবে। এই কার্ডে সংরক্ষিত চিপে পাসপোর্ট বাহকের তথ্য সংরক্ষিত থাকবে।
পাসপোর্ট অধিদফতর সূত্র জানায়, ই-পাসপোর্টে ৩৮ ধরনের নিরাপত্তা ফিচার থাকবে। বর্তমানে এমআরপি ডাটা পেজে যেসব তথ্য আছে, তা ই-পাসপোর্টে স্থানান্তর করা হবে। এই ই-পাসপোর্টের মেয়াদ বয়স অনুপাতে ৫ ও ১০ বছর হবে। এ ছাড়া ই-পাসপোর্ট চালু হলেই এমআরপি পাসপোর্ট বাতিল হবে না বলে জানায় পাসপোর্ট অধিদফতর।
তবে নতুন করে কাউকে এমআরপি পাসপোর্ট দেয়া হবে না। যাদের এমআরপির মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে তারা নবায়ন করতে গেলে ই-পাসপোর্ট নিতে হবে। এভাবে পর্যায়ক্রমে এমআরপি পাসপোর্ট তুলে নেয়া হবে। সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত উদ্যোগে দ্রুততম সময়ে এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে।
২০১৬ সালের ২৪ এপ্রিল পাসপোর্ট সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ই-পাসপোর্ট প্রদানের ঘোষণা দেন। এরপর প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিআইপি) তৈরি থেকে শুরু করে আনুষঙ্গিক সব কাজ দ্রুততম সময়ে শেষ করে পাসপোর্ট ও বহির্গমন অধিদফতর।
সূত্র জানায়, বর্তমান এমআরপি ব্যবস্থা থেকে ই-পাসপোর্ট ব্যবস্থায় উত্তরণ ঘটলে বাংলাদেশিরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ঝামেলাবিহীনভাবে ভ্রমণ করতে পারবেন। কারণ ই-পাসপোর্ট এমন একটি ব্যবস্থা যেখানে বিদ্যমান বইয়ের সঙ্গে একটি ডিজিটাল পাতা (ডাটা পেজ) জুড়ে দেয়া হবে।
ওই ডিজিটাল পাতায় উন্নতমানের মেশিন রিডেবল চিপ বসানো থাকবে। এতে সংরক্ষিত থাকবে পাসপোর্টধারীর সব তথ্য। ডাটা পেজে থাকবে পাসপোর্টধারীর তিন ধরনের ছবি, ১০ আঙ্গুলের ছাপ ও চোখের আইরিশও। ভ্রমণকালে অভিবাসন কর্তৃপক্ষ কম্পিউটারের মাধ্যমে দ্রুততম সময়ে পাসপোর্টধারীর সব তথ্য-উপাত্ত জানতে পারবেন।
তাছাড়া সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো বিভিন্ন বিমানবন্দরে ভিসা চেকিংয়ের জন্য লাইনে দাঁড়াতে হবে না। ঝামেলাহীনভাবে ই-গেট ব্যবহার করে দ্রুততম সময়ে ইমিগ্রেশনের কাজ শেষ করা যাবে।
সূত্র বলছে, বর্তমানে পাসপোর্ট অধিদফতর থেকে যে ধরনের এমআরপি বই দেয়া হচ্ছে সেগুলো জাল করা শুরু হয়েছে। স¤প্রতি মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডে এ ধরনের কয়েকটি জাল এমআরপি ধরাও পড়েছে। বিদ্যমান এমআরপিতে ৩৮টি নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য থাকলেও এর বেশিরভাগই জাল করা সম্ভব হচ্ছে। কিন্তু ই-পাসপোর্ট বইয়ের পলিকার্বোনেট ডেটা পেজ জাল করা সম্ভব হবে না। এ ছাড়া ই-পাসপোর্টে থাকছে ৪২টি নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য।
সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি পল্লী বিদ্যুৎ বিতরণ সিস্টেমের ক্ষমতাবর্ধন প্রস্তাবসহ পাঁচটি ক্রয় প্রস্তাবের অনুমোদন দিয়েছে। এতে মোট ব্যয় হবে ৪৮৭ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সভা কক্ষে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের অর্থমন্ত্রী বলেন, ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের জন্য ১০ হাজার ১১০ কিলোমিটার পল্লী বিদ্যুতের ডিস্ট্রিবিউশন লাইন তৈরি করা হবে। এ প্রকল্পে খরচের পরিমাণ ৪৬ কোটি ৪০ লাখ ৭০ হাজার ৮০ টাকা। ডিস্ট্রিবিশন লাইনের জন্য আমরা সবসময় বিদ্যুৎ পাই না। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে কিছু এলাকায় আমাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
তিনি বলেন, পল্লী বিদ্যুৎ বিতরণ সিস্টেমের ক্ষমতাবর্ধনের জন্য আন্ডারগ্রাউন্ড ক্যাবলের জন্য একটি প্রস্তাবের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। শহরভিত্তিক এলাকাগুলোতে ওপরের লাইন থেকে নিচের লাইন নিয়ে জাতীয় গ্রিড পর্যন্ত যেতে পারে না। এ সমস্যা দূর করার জন্য আন্ডারগ্রাউন্ড ক্যাবল দিয়ে গ্রিডে সংযোজন করা হবে। এজন্য ১১২ কোটি ৭৮ লাখ ১৬ হাজার ৫২১ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি নেয়া হয়েছে। এতে অর্থায়ন করবে বিশ্বব্যাংক এবং আমাদের জিওপি। এটি আমরা অনুমোদন দিয়েছি। এই প্রকল্পে ক্যাবল সাপ্লাই করবে দেশীয় কোম্পানী বিআরবি ক্যাবল।
সভায় অনুমোদিত অন্যান্য প্রকল্পগুলো হলো কনসালটেন্সি সার্ভিসেস ফর ইঞ্জিনিয়ারিং, প্রকিউরমেন্ট অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন ম্যানেজমেন্ট (ইপিসিএম) ও ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিবাস নির্মাণ শীর্ষক দুইটি প্রকল্প।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।