পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ৪টি প্রস্তাব দিবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা আমাদের সময়ের সবচেয়ে গুরুতর বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছি। এটি বাংলাদেশের মত জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর জন্য অস্তিত্বের হুমকি। গতকাল মঙ্গলবার নিউ ইয়র্কের স্থানীয় সময় সকালে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের একটি কনফারেন্স কক্ষে গ্লোবাল কমিশন অন এ্যাডাপটেশন (জিসিএ) আয়োজিত অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।
আগামী শুক্রবার বিকেলে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৪তম অধিবেশনে বক্তব্য দেবেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে তিনি এসব প্রস্তাব উপস্থাপন করবেন। জাতিসংঘ সদরদপ্তরে ওআইসি সেক্রেটারিয়েট এবং জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন আয়োজিত মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সংখ্যালঘু পরিস্থিতি নিয়ে রোহিঙ্গা সংকট: উত্তরণের উপায় শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের একটি অনুষ্ঠানে এ প্রস্তাব তুলবেন প্রধানমন্ত্রী। এ অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ, ওআইসি’র মহাসচিব ইউসেফ আহমেদ আল-ওথাইমিন।
রোহিঙ্গা বিষয়ক এ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে নতুন প্রস্তাব দেওয়ার কথা জানিয়ে বলেন, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭২তম অধিবেশনে আমি ৫টি প্রস্তাব দিয়েছিলাম, যেখানে কফি আনান কমিশনের সুপারিশগুলোর সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন, রাখাইন রাজ্যে আলাদা ‘ বেসামরিক পর্যবেক্ষিত সেইফ জোন’ প্রতিষ্ঠা কথা অন্তর্ভুক্ত ছিল। এবার আমি নিম্নলিখিত বিষয় গুলি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে (ইউএনজিএ) উপস্থাপন করব।
১.রোহিঙ্গাদেও টেকসই প্রত্যাবর্তন বিষয়ে মিয়ানমারকে অবশ্যই তাদের রাজনৈতিক ইচ্ছে পরিস্কার করতে হবে। এ জন্য রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ কী করছে সেটাও সুস্পষ্ট ভাবে বলতে হবে।
২.বৈষম্যমূলক আইন ও চর্চা পরিত্যাগ করতে হবে এবং রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদের উত্তর রাখাইন রাজ্যে ‘যাও এবং দেখ’ এই নীতিতে পরিদর্শনের অনুমতি দিয়ে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই তাদের মধ্যে আস্থা তৈরি করতে হবে।
৩. রাখাইন রাজ্যে আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়ের বেসামরিক পর্যবেক্ষক মোতায়েন করে মিয়ানমার কতৃপক্ষকে অবশ্যই রোহিঙ্গাসহ সকলের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার নিশ্চয়তা (গ্যারান্টি) দিতে হবে।
৪. আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়কে অবশ্যই রোহিঙ্গা সংকটের মূল কারণগুলো বিবেচনায় নিতে হবে এবং রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত নৃশংসতার জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। ওআইসি’র ভূমিকা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এক্ষেত্রে ইস্যুটিকে ( রোহিঙ্গা সংকট ও তাদের ওপর সংগঠিত নৃশংসতা) আন্তজার্তিক অপরাধ আদালতে (আইসিজে) নিতে ওআইসির উদ্যোগ হবে সমাধানের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
তিনি বলেন, এই বিষয়ে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে ওআইসি অ্যাড-হক মন্ত্রিপরিষদ গ্রæপের মাধ্যমে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।
রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান মিয়ানমারে উল্লেখ কওে শেখ হাসিনা বলেন, রোহিঙ্গা সংকট একটি রাজনৈতিক সমস্যা, এর মূল মিয়ানমারে গভীর প্রথিত। সুতরাং এ সংকটের সমাধান মিয়ানমারের ভেতরেই খুঁজে পাওয়া যাবে। তিনি বলেন, এতদিনেও রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান না হওয়াকে দুঃখজনক। আমরা রোহিঙ্গা সংকটের কোন রকম সমাধান ছাড়াই না করেই আরো একটি বছর দিয়েছি। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নিপীড়িত রোহিঙ্গাদের দুর্দশা অব্যহত রয়েছে। জাতিসংঘের রিপোর্ট অনুসাওে রোহিঙ্গারা নৃশংস অপরাধের শিকার হয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, আমি আবারও বলছি, রোহিঙ্গা সংকটের মূল মিয়ানমারে এবং এর সমাধানও সেখানে খুঁজে বের করতে হবে। মানবিক সহায়তা এবং অন্যান্য সহযোগিতা তাদের তাৎক্ষনিক প্রয়োজনগুলো সমাধান করে। রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে এর স্থায়ী সমাধান গুরুত্বপূর্ণ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা অবশ্যই তাদের মাতৃভূমিতে ফিওে যেতে সক্ষম হবে, যেখানে তারা শতাব্দির পর শতাব্দি বসবাস করেছিল। টেকসই, নিরাপদ এবং স্বেচ্ছা প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করার জন্য রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জবাবদিহিতার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হতে পারে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের চলমান কার্যক্রম অনুসরণ করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানবিক দিক বিবেচনা করে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। জোরপূর্বক নির্বাসিত ১.১ মিলিয়ন মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিককে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। মানবিক দিক বিবেচনা করে আমরা আমাদের সীমান্ত খুলে দিয়েছিলাম যা ইসলামের নৈতিক শিক্ষা।
শেখ হাসিনা বলেন, রোহিঙ্গাদের স্বদেশে প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে, তাদেও মৌলিক চাহিদা নিশ্চিত করতে আমাদের সম্ভাব্য সব কিছু করতে হবে, চেষ্টা অব্যহত রাখবো। আমরা রোহিঙ্গারা ৮০০ একরের বেশি বনভূমিতে আশ্রয় নিয়েছে যাতে বাসসংস্থান ও পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা আশ্রয়, খাদ্য, স্বাস্থ্য সেবা, পানি, স্যানিটেশনসহ রোহিঙ্গাদের সকল ধরনের মানবিক সহায়তা দিচ্ছি। ক্যাম্পগুলোতে আইন শৃঙ্খলা রক্ষা এবং পরিচালনায় ক্যাম্পগুলোতে পর্যাপ্ত সংখ্যক আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী মোতায়েন করা হয়েছে। সড়ক-বিদ্যুৎ সরবরাহসহ নতুন ও অতিরিক্ত অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে ২১৯ টি মেডিকেল সুবিধা স্থাপন করা রয়েছে যার মধ্যে ৫০টি সরকারি ভাবে পরিচালিত হচ্ছে।
হাসিনা বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অধিক ঘনবসতির সমস্যা সমাধান এবং মানবিক সেবার সুবিধার্থে সুরক্ষার সমস্ত বিধান রেখে রোহিঙ্গাদের জন্য আমরা ভাষানচরের উন্নয়ন করেছি। মিয়ানমারে ফিরে না যাওয়া পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের জন্য ভাসানচরে উন্নত আবাসন এবং জীবিকার সুযোগও থাকবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।